২৩ অক্টোবর ভোট গ্রহণ : বিএফইউজের নির্বাচনে আর বাধা নেই

আগের সংবাদ

বাঙালির মাতৃপূজা দেশমাতৃকার পূজা থেকে আলাদা নয়

পরের সংবাদ

সাহিত্যবিশারদের জন্মদিন : ‘সা¤প্রদায়িকতা তাকে ছুঁতে পারেনি’

প্রকাশিত: অক্টোবর ১২, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ১২, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : যে অসা¤প্রদায়িক বাংলাদেশ আমরা চেয়েছি, তিনি সেই বাংলাদেশের কথা, বাংলা ভাষার কথা বহু আগেই বলেছেন। সবরকম গোঁড়ামি, কুসংস্কার, সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে তিনি ছিলেন। সা¤প্রদায়িকতা তাকে স্পর্শ করেনি। হিন্দু-মুসলমান নির্বিশেষে তিনি সবার আপনজন ছিলেন। গতকাল সোমবার সকালে বাংলা সাহিত্যের খ্যাতিমান গবেষক আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদের সার্ধশত জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে বাংলা একাডেমি আয়োজিত একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে ‘জাতিস্মর মনীষী আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ’ শীর্ষক বক্তৃতা প্রদানকালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য গবেষক অধ্যাপক শিরীণ আখতার এসব কথা বলেন।  
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি সচিব মো. আবুল মনসুর। বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদার সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ সময় উপস্থিত ছিলেন আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদের পরিবারের সদস্য অধ্যাপক নেহাল করিম, এডভোকেট যাহেদ করিম এবং গীতিকবি হাসান ফকরী। স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলা একাডেমির সংস্কৃতি, পত্রিকা ও মিলনায়তন বিভাগের পরিচালক নূরুন্নাহার খানম। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বাংলা একাডেমির সহপরিচালক সায়েরা হাবীব। অনুষ্ঠানে সাহিত্যিক ও বুদ্ধিজীবী এবং বাংলা একাডেমির সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক নীলিমা ইব্রাহিমকে স্মরণ করা হয়।
একক বক্তা অধ্যাপক শিরীণ আখতার বলেন, পুথি-সাহিত্যের গবেষণায় সারাজীবন কাটালেও আধুনিক সাহিত্য ও ভাবধারার সঙ্গে আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদের নিবিড় পরিচয় ছিল। প্রকৃতপক্ষে আবদুল করিমকে জানতে হলে এবং তার মন-মানস সম্পর্কে স্বচ্ছধারণা পেতে হলে তার সংগ্রহ কর্মকাণ্ড, সমগ্র রচনাবলি এবং তার চিন্তাচেতনার সঙ্গে পরিচিত হওয়া প্রয়োজন।
তিনি বলেন, কাজী নজরুলের পূর্বে একজন শীর্ষ মুসলমান বাঙালি মুন্সি আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ তার ধর্মীয় অনগ্রসরতা কাটিয়ে প্রবল সা¤প্রদায়িকতার ভেতরে হেঁটে হেঁটে কীভাবে তার দেশ-কাল-সমাজকে ডিঙিয়ে অসা¤প্রদায়িক হয়ে উঠেছেন তা এক বিস্ময়কর ব্যাপার! অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মো. আবুল মনসুর বলেন, আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদের মতো মনীষীদের আনুষ্ঠানিকতার বৃত্ত ভেদ করে সবসময়ই স্মরণে রাখতে হবে কারণ এমন মানুষের কাছেই আছে আমাদের এগিয়ে যাওয়ার প্রয়োজনীয় রসদ। তিনি বলেন, সাহিত্যবিশারদ সামাজিক প্রতিবন্ধকতাকে উপেক্ষা করে পুথি উদ্ধার এবং গবেষণার কাজ চালিয়ে গেছেন। তার কাছ থেকে আমাদের স্ব স্ব ক্ষেত্রে সাধনা ও একাগ্রতার শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে।
কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা বলেন, আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদের জাতিযাত্রা এবং মানবযাত্রা তার জন্মের সার্ধশত বর্ষ পেরিয়ে আজও বিশেষ তাৎপর্যে উদ্ভাসিত। সমকালীন সীমাবদ্ধতাকে অতিক্রম করে তিনি তার ব্যক্তিগত বর্তমানকে গোটা জাতির সেবায় উৎসর্গ করেছেন এবং ভবিষ্যৎ মানতার সঙ্গে আমাদের যুক্ত করেছেন। তিনি বলেন, স্বশিক্ষিত এবং সুশিক্ষিত সাহিত্যবিশারদের জীবন থেকে আমাদের স্বশৃঙ্খলা ও স্ব-ব্যবস্থাপনার শিক্ষা নেয়ার আছে। তার মাতৃভাষা প্রেম, স্বদেশপ্রীতি এবং অসাম্প্রদায়িক জীবনদৃষ্টিই তো ভবিষ্যৎ আলোকিত বাংলাদেশের রূপকল্প। নূরুন্নাহার খানম বলেন, বাংলা একাডেমি জন্মলগ্ন থেকে আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদকে স্মরণ করে আসছে বহুমাত্রিক আয়োজনে। এবার সার্ধশত জন্মবার্ষিকীতেও আমরা তার নবমূল্যায়নে ব্রতী হয়েছি। 

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়