তরুণীরাই মূল টার্গেট : একটি চক্রের হাতে ২ হাজার নারীর অ্যাকাউন্ট হ্যাক

আগের সংবাদ

সিসিটিভির আওতায় আসছে রাজধানী : এ মাসেই হতে পারে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন

পরের সংবাদ

ধান-চাল সংগ্রহে টার্গেট পূরণ হয়নি তিন কারণে

প্রকাশিত: অক্টোবর ৫, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ৫, ২০২১ , ১২:৪২ পূর্বাহ্ণ

তানভীর আহমেদ : চলতি বোরো মৌসুমে অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে মোট ১৮ লাখ টন ধান ও চাল সংগ্রহের টার্গেট নিয়ে মাঠে নামে সরকার। গত ২৮ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া এই অভিযান চলে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত। এ মৌসুমে মোট ১৩ লাখ ৮১ হাজার ৫১৮ টন ধান ও চাল সংগ্রহ হয়েছে। বোরো মৌসুমের সংগ্রহ কার্যক্রমে লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে খাদ্য অধিদপ্তর। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কোভিড-১৯ মহামারি, বাজারে ধান-চালের অস্বাভাবিক দাম, খাদ্যগুদামের শর্ত জটিলতায় সরকারের ধান-চাল সংগ্রহ অভিযানে কৃষকের সাড়া মেলেনি।
খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, চলতি বোরো মৌসুমে অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে সরকার মোট ১৮ লাখ টন ধান ও চাল সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নেয়। এর মধ্যে মিলারদের কাছ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে ১০ লাখ টন সিদ্ধ চাল, ৩৯ টাকা কেজি দরে দেড় লাখ টন আতপ চাল এবং কৃষকদের কাছ থেকে ২৭ টাকা কেজি দরে সাড়ে ছয় লাখ টন ধান কেনার সিদ্ধান্ত হয়। গত ২৮ এপ্রিল থেকে শুরু হয় ধান এবং ৭ মে থেকে শুরু হয় চাল সংগ্রহ। বোরো ধান ও চাল সংগ্রহ কার্যক্রম চলে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের খাদ্যশস্য পরিস্থিতি প্রতিবেদন বলছে, সমাপ্ত বোরো মৌসুমে ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল সাড়ে ছয় লাখ টন। যেখানে সংগ্রহ হয়েছে তিন লাখ ৬২ হাজার ৪৪৫ টন। এছাড়া ১২ লাখ ৩৫ হাজার টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে এসেছে ১০ লাখ ৬০ হাজার ৪১২ টন। অন্যদিকে দেড় লাখ টন আতপ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রায় মিলেছে ৮৫ হাজার ৫১৬ টন।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানায়, বোরো ধান ও চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে খাদ্য বিভাগ। চলতি মৌসুমে বোরো ধান ও চাল কাক্সিক্ষত লক্ষ্যমাত্রার পরিমাণে সংগ্রহ না হওয়ার কারণ অনুসন্ধানে জানা গেছে, করোনা ভাইরাস, ঘূর্ণিঝড় আম্ফান, লাগাতার বৃষ্টি-বন্যা- এসব প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবার বোরো ধান ও চাল সংগ্রহে বড় ধরনের বাধা সৃষ্টি করেছে। এছাড়া, খাদ্যগুদামের শর্ত জটিলতায় গুদামে ধান বিক্রি করতে ভোগান্তি পোহাতে হয় কৃষককে।
অভিযোগ রয়েছে, প্রান্তিক পর্যায়ে কৃষকদের জন্য সরকারিভাবে প্রচারের অভাব, খাদ্য গুদামে সিন্ডিকেটের দাপট এবং ধান বিক্রির জন্য সনাতনী শর্তসহ নানা প্রতিবন্ধকতার কারণে সরকারের ধান-চাল সংগ্রহ কার্যক্রম থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে সাধারণ কৃষক। এছাড়া অ্যাপের কারিগরি সমস্যার কারণে যে কারো নম্বর দিয়ে যে কেউ নিবন্ধন করতে পারেনি বলেও অভিযোগ রয়েছে। যশোরের অভয়নগর উপজেলার খাদ্য নিয়ন্ত্রক

মিনা খানম ভোরের কাগজকে বলেন, সরকারের ধান-চাল সংগ্রহের প্রক্রিয়া কিছুটা জটিল হওয়াই এতে কৃষকের আগ্রহ কমছিল। তাছাড়া এ বছর বাজারেও ধানের দাম অনেক বেশি। যে কারণে সরকারের কাছে ধান বিক্রি করতে চাচ্ছে না অনেকে।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম বলেন, ধানের ক্ষেত্রে সংগ্রহ লক্ষ্যমাত্রা অর্ধেক পূরণ করতে না পারলেও চালের সংগ্রহ ভালো। বেশি কেনার জন্য এ বছর দামও বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু তারপরও বাজারে ধানের দাম বেশি থাকায় লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি।
কৃষি অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক গোলাম হাফিজ বলেন, সরকারের ধান-চাল সংগ্রহের কার্যক্রমে সমস্যা রয়েছে। বারবার সমস্যার পরও সরকার সেটা থেকে শিক্ষা নিতে পারেনি। তিনি বলেন, কৃষকের কাছ থেকে চাল নিতে সরকারের নানা শর্ত। কিনতে ঝামেলা করে, আর্দ্রতা নেই বলে তাদের চাল ফেরত দেয়, আরো কত কী। ভাড়া দিয়ে গুদামে নিয়ে এসব ঝামেলা কৃষক কেন সইবে? এজন্য তারা বাজারেই বিক্রি করে, সরকারকে দেয় না।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়