তেজগাঁওয়ে বাসায় রহস্যজনক বিস্ফোরণে দুই শিক্ষার্থী দগ্ধ

আগের সংবাদ

১৫ সদস্যের দলে আট নতুন মুখ : আত্মবিশ্বাস নিয়ে বিশ্বকাপ মিশনে টাইগাররা

পরের সংবাদ

নিমাই চন্দ্র সরকার মেয়র, নগরকান্দা পৌরসভা > পৌরবাসীর সেবায় জীবন উৎসর্গ করতে চাই

প্রকাশিত: অক্টোবর ৩, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ৩, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

নিজামউদ্দিন মাতুব্বর, নগরকান্দা (ফরিদপুর) থেকে : জীবনের এই মূল্যবান সময়টুকু নগরকান্দা পৌরবাসীর সেবায় উৎসর্গ করতে চাই। পৌরসভার পঞ্চম মেয়র হিসেবে আমার মাথায় রয়েছে বাড়তি বোঝা। তাই ডিজিটাল বাংলাদেশের কারিগর প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতা নিয়ে নগরকান্দাকে ডিজিটাল পৌরসভা করে জনগণের দোরগড়ায় সেবা পৌঁছে দেয়াই আমার প্রধান কাজ। এখানে থাকবে না কোনো দুর্নীতি। বিগত দিনে আমি পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের দুই মেয়াদে কাউন্সিলর ছিলাম। আমাকে কখনো দুর্নীতি স্পর্শ করতে পারেনি। ছাত্রজীবন থেকে জন্মভূমিকে ভালোবেসে লোভ-লালসা উপেক্ষা করে জনপ্রতিনিধি হয়েছি। এবার মেয়র হয়ে এই জন্মভূমির মানুষের সেবা করা আমার জন্য আরো সহজতর হয়েছে।
ভোরের কাগজের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে কথাগুলো বলছিলেন ফরিদপুরের নগরকান্দা পৌরসভার নির্বাচিত মেয়র নিমাই চন্দ্র সরকার। এবারের পৌরসভা নির্বাচনে প্রথমবারের মতো মেয়র নির্বাচিত হন পৌর যুবলীগের সভাপতি নিমাই চন্দ্র সরকার। আওয়ামী লীগ সমর্থিত নিমাই চন্দ্র সরকার প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থীদের বিপুল ভোটে পরাজিত করে নির্বাচিত হন।
এক প্রশ্নের জবাবে নিমাই চন্দ্র সরকার বলেন, আমি ছাত্রজীবন থেকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য ও জাতীয় সংসদের সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর অনুপ্রেরণায় রাজনীতিতে আসি। এরই ধারাবাহিকতায় ’৯০-এর দশকে ছাত্রলীগের রাজনীতি করেছি, ২০০৯ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত পৌর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ২০১৪ থেকে আজ পর্যন্ত পৌর যুবলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছি। রাজনৈতিক ব্যক্তি হিসেবে জনসেবার কাজটি আমার জন্য

আরো সহজ। এই সহজ কাজটি আরো সহজ করতে দল খুশি হয়ে আমাকে মেয়র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেয়। তাই জনগণের রায় নিয়ে আমি মেয়র হই।
মার্চের ১০ তারিখে শপথ নেয়ার কথা থাকলে আকস্মিকভাবে সড়ক দুর্ঘটনায় আমি গুরুতর আহত হই। সেই দুর্ঘটনায় আমার স্ত্রী, ছেলে ও দুই শুভাকাক্সক্ষী মারা যান। আমি দীর্ঘদিন ঢাকার নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থেকে সুস্থ হয়ে ১০ জুন শপথ গ্রহণ করি। শপথ নিয়ে গত ১৩ জুন আমি পৌরসভার দায়িত্ব বুঝে নিয়েছি। এরপর জনগণকে সঙ্গে নিয়ে কোন এলাকায় কীভাবে উন্নয়ন কাজের সূচনা করা যায়, তা সরজমিন দেখেছি। উন্নয়নের জন্য একটি রূপরেখা তৈরি করার কাজ শুরু করেছি। তাই সব পরিকল্পনা একটি মাস্টারপ্ল্যানের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার জন্য কাজ করে যাচ্ছি।
তিনি আরো বলেন, পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের অধিকাংশ জনগণই জানেন না পৌরসভার প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্য। প্রথমে তাদের বোঝাতে হবে মেয়র হিসেবে আমার দায়িত্ব-কর্তব্য আর পৌরসভার প্রতি তাদের দায়িত্ব-কর্তব্য। এ বিষয়টি আমার কাছে প্রাথমিকভাবে সমস্যা মনে হচ্ছে। এরপর পৌরসভার রাস্তাঘাট, ড্রেন ব্যবস্থা আর জলবদ্ধতা, যানজটের সমস্যা তো রয়েছেই। তবে এর আগে সবচেয়ে বড় সমস্যা রয়েছে পৌর কার্যালয় নিয়ে। কেননা, পৌরসভা ঘোষণার পর থেকে এখন পর্যন্ত পৌরসভার নিজেস্ব ভবন নেই। তার সঙ্গে আছে পৌরসভার জনবল সংকট। ইতোমধ্যে পৌর ভবনের জায়গা কেনা ও ভবনের টেন্ডার হলেও বর্ষা মৌসুমের কারণে কাজের অগ্রগতি হচ্ছে না।
পৌর মেয়র আরো বলেন, এত সমস্যা খুব অল্প সময়ের মধ্যে সমাধান করা সম্ভব নয়। একটি মাস্টারপ্ল্যান করতে হবে। তবে ইতোমধ্যে পৌর ভবন নির্মাণের জন্য জোর দেয়া হচ্ছে। পৌর ভবনের কাজ দ্রুত শেষ করে পৌরসভার সার্বিক কার্যক্রমের জন্য জনবল সংকট দূর করে জনসেবার কাজটি আরো সহজতর করব।
তিনি আরো বলেন, আমি দুই মেয়াদে কাউন্সিলর ও ভারপ্রাপ্ত মেয়র থাকার সুবাদে বিগত দিনে আমি এই এলাকায় দুর্নীতি, সন্ত্রাস, মাদকমুক্ত, বেকারদের কর্মসংস্থান, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন একটি এলাকা হিসেবে গড়ে তোলার জন্য কাজ করে গেছি। ঠিক তেমনি পৌর মেয়র হয়ে এমনিভাবে একটি আধুনিক ডিজিটালাইজড উন্নত পৌরসভা গড়তে চাই।
নগরকান্দা পৌরসভা ১৯৯৯ সালের ১৬ মার্চ গঠিত হয়। পৌরসভার মোট আয়তন ৭.৫ বর্গকিলোমিটার। রয়েছে ৯টি ওয়ার্ড। মোট জনসংখ্যা ১৮ হাজার ৯৫৭ জন। পুরুষ জনসংখ্যা ৯ হাজার ৯৫৭ জন ও মহিলা জনসংখ্যা ৯ হাজার জন। মোট ভোটার সংখ্যা ৬ হাজার ৪৮৩ জন। পুরুষ ভোটার সংখ্যা ৩ হাজার ২২৫ জন ও মহিলা ভোটার সংখ্যা ৩ হাজার ২৫৮ জন। পৌরভবন নির্মাণ না হওয়ায় জেলা পরিষদের ভাড়া করা তিন রুমের বিল্ডিংয়ে পৌরসভার অফিস পরিচালিত হচ্ছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়