ই-অরেঞ্জের সাবেক সিওও রাসেল রিমান্ডে

আগের সংবাদ

যাত্রীসেবার মান তলানিতে : সড়ক আইন প্রয়োগে উদাসীনতা > নির্দেশনা দিয়েই দায়িত্ব শেষ কর্তৃপক্ষের

পরের সংবাদ

শাহরাস্তির শিমুলিয়া আশ্রয়ণ প্রকল্প : প্রশিক্ষণ নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতে চান পুনর্বাসিতরা

প্রকাশিত: আগস্ট ৩১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ৩১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

স্বপন কর্মকার মিঠুন, শাহরাস্তি (চাঁদপুর) থেকে : শাহরাস্তি উপজেলার সূচিপাড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের শিমুলিয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের পুনর্বাসিত পরিবারের সদস্যরা প্রশিক্ষণের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহে সক্ষম হতে চান। এমন কথা জানান প্রকল্পে পুনর্বাসিত একাধিক পরিবারের সদস্য।
১৯৯৭ সালের ১৯ মে কক্সবাজার জেলাসহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় ঘূর্ণিঝড়ে আক্রান্তের শিকার হয়ে অনেক পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়ে। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাৎক্ষণিক গৃহহীন পরিবারগুলোকে পুনর্বাসনের নির্দেশ দেন। তারই প্রেক্ষিতে ‘আশ্রয়ণ’ নামে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। ভূমিহীন, গৃহহীন, ছিন্নমূল, অসহায়, দরিদ্র জনগোষ্ঠীর পুনর্বাসন ও ঋণ প্রদান, প্রশিক্ষণের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহে সক্ষম করে তোলা এবং আয়বর্ধক কার্যক্রম সৃষ্টির মাধ্যমে দারিদ্র্য দূরীকরণ ছিল প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য।
এমন যুগোপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বাস্তবায়নাধীন ও উপজেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর অধীনে ২০০০ সালে ১.৮৫ একর ভূমির মধ্যে স্থাপিত হয় শাহরাস্তি উপজেলার সূচিপাড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের শিমুলিয়া আশ্রয়ণ প্রকল্প। প্রকল্পে দুটি ব্যারাকে ২০টি পরিবার পুনর্বাসিত হয়। সে সময় ২০টি পরিবার পুনর্বাসিত হলেও বর্তমানে তাদের পরিবারে সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় নিজ অর্থায়নে একাধিক ঘর নির্মাণ করে বসবাস করছেন তারা। আশ্রয়ণ প্রকল্পে ভূমির চার দিকের সীমানা নির্ধারিত না হওয়ায় পাশের ভূমি মালিকদের সঙ্গে প্রায়ই ঝগড়া হচ্ছে। এতে আশ্রয়ণ প্রকল্পে বসবাসকারীরা ভয়ে ও আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।
দীর্ঘ ২১ বছর অতিবাহিত হলেও আশ্রয়ণ প্রকল্পের পুনর্বাসিত পরিবারের কোনো সদস্যকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহে সক্ষম করে তোলার কথা থাকলেও প্রশিক্ষণ দেয়া হয়নি কাউকে। এতে প্রকল্পের একাধিক উদ্যোগী যুবক প্রশিক্ষণের অভাবে ও আর্থিক সংকটে বেকার হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। পরিবারপ্রধানের মাথার বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছেন বেকার যুবকরা।
আশ্রয়ণ প্রকল্পের সভাপতি মো. ওসমান জানান, প্রকল্পের পুনর্বাসিত ২০টি পরিবার পর্যায়ক্রমে ভিজিডি কার্ড, বয়স্ক, বিধবা, মাতৃত্ব, প্রতিবন্ধী ভাতাসহ সরকারের বরাদ্দকৃত সব সুযোগ-সুবিধা পেয়ে আসছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের মাথার ওপর ছায়া দিয়েছেন। আয়বর্ধক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে এবং প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সবুজায়নের লক্ষ্যে প্রতিটি প্রকল্প গ্রামের মতো আমরা প্রকল্প চৌহদ্দিতে ফলদ, বনজ, ঔষধি ও বিভিন্ন প্রজাতির কাঠ গাছের চারা লাগিয়ে আসছি। পার্শ্ববর্তী ভূমি মালিকরা সরকারি সম্পত্তি দখলে চেষ্টায় ওই গাছের চারা তুলে ফেলে দিচ্ছে। প্রকল্পের উত্তর পাশের রাস্তার মালিকানা নিয়ে সমস্যা রয়েছে। রাস্তার দুই পাশে বৃক্ষ রোপণ করতে গেলে বারবার প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে আসছেন পার্শ্ববর্তী জমির মালিকরা। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহে সক্ষম করে তোলা এবং আয়বর্ধক কার্যক্রম সৃষ্টির মাধ্যমে দারিদ্র্য দূরীকরণ ছিল প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য। কোনো যুবক প্রশিক্ষণ না পেয়ে কর্মসংস্থানের অভাবে বেকার দিন কাটাচ্ছেন।
পুনর্বাসিত আলী হোসেনের ছেলে মো. সোহেল হোসেন বলেন, প্রকল্পে পুনর্বাসিত সব পরিবার মালিকানা স্বত্বের দলিল সম্পাদন ও রেজিস্ট্রি করা হয়েছে। কিন্তু প্রকল্পের নির্র্দিষ্ট চৌহদ্দি না থাকায় পার্শ্ববর্তী ভূমি মালিকদের সঙ্গে সমস্যা লেগে রয়েছে। যে কোনো সময় ঘটতে পারে রক্তক্ষয়ী ঘটনা। আশ্রয়ণ প্রকল্পের উত্তর পাশে প্রধান প্রবেশপথ চলাচলের অযোগ্য। বারবার পাকাকরণের জন্য আবেদন জানানো হলেও তা করা হয়নি। এছাড়া পুকুরে পাকা ঘাটলা একটি। এতে পুরুষ ও মহিলার একসঙ্গে গোসলসহ নানা কাজ করতে হচ্ছে। ল্যাট্রিন মেরামত করা হলেও আগের মতো অবস্থা বিরাজ করছে। আশ্রয়ণ পুনর্বাসিতরা প্রকল্পে মক্তব, রাস্তা, ঘাটলা নির্মাণ, ল্যাট্রিন পুনঃসংষ্কার ও প্রকল্প এলাকার চৌহদ্দি নির্ণয় করে স্থায়ীভাবে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের দাবি জানান।
শাহরাস্তি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. সবুজ জানান, কিছু দিন আগে শিমুলিয়া আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এ দুটি ব্যারাকের ছাউনি, বেড়া ও ল্যাট্রিনগুলো ঢেউটিন দিয়ে মেরামত করেছি। সরকারি বরাদ্দ সাপেক্ষে ঘাটলা, রাস্তা ও মক্তব নির্মাণের কাজ করা হবে।
রাস্তা নিয়ে পার্শ্ববর্তী মালিকপক্ষের সমস্যা রয়েছে। এ ব্যাপারে কিছু জানি না। যদি এমন সমস্যা থেকে থাকে তা সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের সঙ্গে পরামর্শক্রমে ব্যবস্থা নেব। তবে প্রশিক্ষণের জন্য সরকারি নির্দেশ এলে তাদের অগ্রাধিকার দেয়া হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়