ই-অরেঞ্জের সাবেক সিওও রাসেল রিমান্ডে

আগের সংবাদ

যাত্রীসেবার মান তলানিতে : সড়ক আইন প্রয়োগে উদাসীনতা > নির্দেশনা দিয়েই দায়িত্ব শেষ কর্তৃপক্ষের

পরের সংবাদ

‘ভগবান শ্রীকৃষ্ণের বাণী আজো প্রাসঙ্গিক’ : জগতের মঙ্গল কামনায় জন্মাষ্টমী উদযাপন

প্রকাশিত: আগস্ট ৩১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ৩১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : যথাযোগ্য ভাবগাম্ভীর্য ও ধর্মীয় আচারানুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে উদযাপিত হলো ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মতিথি-জন্মষ্টমী উৎসব। তবে বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারির মধ্যে এবার জন্মষ্টমী উৎসবটি একটু ভিন্নভাবে পালিত হয়। গতকাল সোমবার করোনা ভাইরাস মহামারি থেকে মুক্তির প্রার্থনা আর দেশের কল্যাণ ও মানুষের মঙ্গল কামনার মধ্য দিয়ে শেষ হয় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের জন্মাষ্টমী উৎসব।
তবে অন্যবারে উৎসবের অন্যতম অঙ্গ ‘শোভাযাত্রা’ কোভিডের কারণে এবার বাতিল করা হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে শুধু মন্দিরে মন্দিরে পূজাপাঠ, গীতাযজ্ঞের মধ্য দিয়ে পূর্জা-অর্চনাা শেষে প্রসাদ বিতরণ ও একে অপরের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়ের মাধ্যমে জন্মাষ্টমী অনুষ্ঠান পালিত হয়। এ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক পৃথক বাণী দেন। অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভাও।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, প্রায় ৫ হাজার ২০০ বছর আগে ভাদ্র মাসের শুক্লপক্ষের অষ্টমী তিথিতে জম্ম নেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ। তার জন্মতিথিকেই জন্মাষ্টমী হিসেবে পালন করে থাকেন অনুসারীরা।
গতকাল সোমবার সকালে মন্দিরে মন্দিরে ও অনেক বাসা বাড়িতে চণ্ডীপাঠ ও গীতাযজ্ঞের মধ্য দিয়ে পালিত হয় অনুষ্ঠানমালা। সনাতন ধর্মের অবতার হিসেবে প্রেম, সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্যই পৃথিবীতে শ্রীকৃষ্ণ আবির্ভূত হন বলে ভক্তদের বিশ্বাস। ভক্তরা তাঁকে সত্য ও প্রেমের দেবতা বলেও জ্ঞান করেন।
কেন্দ্রীয়ভাবে নানা আনুষ্ঠানিকতায় শ্রীকৃষ্ণের জন্মতিথি উদযাপন করছে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ এবং ঢাকা মহানগর পূজা উদযাপন কমিটি। তবে মহামারীর কারণে জন্মাষ্টমীর সেই শোভাযাত্রা এবারো হয়নি। শুধু পূজা অর্চনার ও প্রসাদ বিতরনের মধ্য দিয়ে উৎসবটি পালিত হয়। তবে রং-বেরংয়ের আলোয় মন্দির সজ্জিত করা হয়। ভক্তরা রঙিন পোষাকে সেজে পূজাস্থলে উপস্থিত হন।
জন্মাষ্টমী উপলক্ষে মহানগর সার্বজনীন পূজা উদযাপন কমিটির কর্মসূচির মধ্য ছিল সকাল ৮টায় দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনায় গীতাযজ্ঞ। দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে পূজাপরিষদের সভাপতি মিলন দত্তের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চূয়ালী অংশ নেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ও বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী, দৈনিক ভোরের

কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত, আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, নির্মল চ্যাটার্জী ও ক্যানাডা থেকে ভার্চূয়ালী যুক্ত হন শৈলেন দত্ত।
বক্তারা বলেন, যে কারণে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের মর্তে আগমন ঘটেছিল ‘দুষ্টের দমন ও সৃষ্ঠের পালন’, তা আজো প্রাসঙ্গিক, আজো শ্রীকৃষ্ণের মতাদর্শ বিশেষভাবে প্রযোজ্য। সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠায় এবং হিংসা,দ্বেষ, অধর্ম, ধর্মান্ধতা ও সাম্প্রদায়িকতা দুরীকরণে এবং দুর্জনের বিনাশে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের বানী ও মতাদর্শ আজো প্রাসঙ্গিক।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নির্মল চ্যাটার্জি বলেন, মহামারীর মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শ্রীকৃষ্ণের জন্মতিথি শুভ জন্মাষ্টমী পালন করা হয়। বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাবেক সভাপতি কাজল দেবনাথ বলেন, সনাতন ধর্মমতে, অধর্ম ও দুর্জনের বিনাশ এবং ধর্ম ও সুজনের রক্ষায় কৃষ্ণ যুগে যুগে পৃথিবীতে আগমন করেন।
এদিকে, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের শংকর মঠ ও মিশনে অত্যন্ত ভাবগম্ভীর ও ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জম্মতিথি উৎযাপন করা হয়। মিশনের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ স্বামী তপনানন্দ গিরি মহারাজ বলেন, ভগবান শ্রীকৃষ্ণের আবির্ভাব তিথি উপলক্ষে আমরা জন্মাষ্টমী উৎসব পালন করেছি। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ যুগে যুগে বিভিন্ন রূপে পৃথিবীতে অসুর নিধন করে সদ্যপ্রতিষ্ঠা করেছেন।
এদিকে, আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ (ইসকন) জন্মাষ্টমী উপলক্ষে স্বামীবাগ আশ্রমে ছয়দিন দিনব্যাপী বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। রাজধানীর স্বামী ভোলানন্দ গিরি আশ্রম, প্রভূ জগদবন্ধু মহাপ্রকাশ মঠ, রাধামাধব জিও দেব বিগ্রহ মন্দির, বরদেশ্বরী কালীমাতা মন্দির ও শ্মশান, রাধা গোবিন্দ জিও ঠাকুর মন্দির, শিব মন্দির, রামসীতা মন্দির ও মাধব গৌড়ীয় মঠসহ বিভিন্ন মন্দির, পূজামন্ডপ ও ধর্মীয় সংগঠন জন্মাষ্টমী উপলক্ষে বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়