ই-অরেঞ্জের সাবেক সিওও রাসেল রিমান্ডে

আগের সংবাদ

যাত্রীসেবার মান তলানিতে : সড়ক আইন প্রয়োগে উদাসীনতা > নির্দেশনা দিয়েই দায়িত্ব শেষ কর্তৃপক্ষের

পরের সংবাদ

পর্যটনের অপার সম্ভাবনা মহেশখালী পাহাড়ে

প্রকাশিত: আগস্ট ৩১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ৩১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

এম বশির উল্লাহ, মহেশখালী থেকে : সুউচ্চ পাহাড় আর সবুজের সমারোহ বাংলাদেশের একমাত্র পাহাড়ি দ্বীপ ডিজিটাল আইল্যান্ড খ্যাত মহেশখালী। দ্বীপটি উপজেলার শাপলাপুর ইউনিয়নের ‘ধুইলাজুড়ি পাহাড়ি ঢালা’ এলাকা। পাহাড় ভেদ করে বয়ে যাওয়া আঁকাবাঁকা পাহাড়ের উপর মেঠোপথের নৈসর্গিক দৃশ্য চোখ জুড়িয়ে যায়। পাহাড়ের উঁচু-নিচু পথ যেন সবুজ গালিচায় ঢেকে দেয়া হয়েছে। অপূর্ব এই দৃশ্য যে কারো চোখ আটকে যাবে।
পাহাড় আর সড়কের মিতালী যেন এক রোমাঞ্চকর ভ্রমণের মেলবন্ধন তৈরি হয়েছে স্থানীয়দের কাছে। তবে এলাকাটি দুর্গম হওয়ায় দূর-দূরান্তের পর্যটকদের কাছে এখনো পরিচিত লাভ করতে পারেনি। এ কারণে দিন দিন স্থানীয়দের আগমন বাড়ছে ধুইল্যাজুড়ি পাহাড়ি ঢালায়।
সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এ নৈসর্গিক ‘ধুইল্যাজুড়ি পাহাড়ি ঢালা’ হয়ে উঠতে পারে আকর্ষণীয় পর্যটন স্পট। মহেশখালী সদর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার উত্তরে ‘শাপলাপুর ধুইলাজুড়ি পাহাড়ি ঢালা’। চকরিয়া-বদরখালী মহেশখালী সেতু থেকে ৯ কিলোমিটার দক্ষিণে মাত্র ১০ মিনিট গাড়িযোগে পথ পাড়ি দিয়ে চোখে পড়বে শাপলাপুরের মুদির ছড়াবাজার। বাজারের পশ্চিম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় লাগোয়া সড়ক দিয়ে আধা কিলোমিটার পায়ে হেঁটে যাওয়া যায় এই পর্যটন স্পটে।
ইতোমধ্যে অনেকের কাছে ধুইলাজুড়ি ‘মিনি শাপলাপুর’ নামে পরিচিতি পেলেও সম্প্রতি ‘মহেশখালী উঁচু পাহাড়ের এলাকা’ নামে বেশ পরিচিতি পেয়েছে। প্রায় সময় এখানে উপজেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসে লোকজন ভিড় জমাচ্ছেন।
ঘুরতে আসা কয়েকজন জানান, নির্ভেজাল সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক পরিবেশে নিজেকে মেলে ধরতে চাইলে ‘ধুইল্যাজুড়ি পাহাড়ি’ এলাকার কোনো বিকল্প নেই।
সিএসজি গাড়ি নিয়ে সপরিবারে ‘ধুইল্যাজুড়ি’ ভ্রমণে এসেছিলেন পাশের মাতারবাড়ী ইউনিয়নের মো. সোহেল। তিনি বলেন, রাঙ্গামাটি ও বান্দরবান পাহাড়ি এলাকা ঘুরে ঝুলন্ত ব্রিজ দেখার আগ্রহ অনেক দিনের। কিন্তু এখানে এসে এই নৈসর্গিক নীলাভূমির (ধুইল্যাজুড়ি) সন্ধান পেয়েছি। এখানে না এলে ভ্রমণের তৃপ্তিটা অপূর্ণ থেকে যেত। সুউচ্চ পাহাড় আর সবুজের সমারোহ সত্যিই যে কাউকে কাছে টানবে। বিশেষ করে বড় বড় পাহাড় ভেদ করে আঁকাবাঁকা পাহাড়ের মাঝখানে সরু ছোট পরিসরে সড়কটি বেশি মুগ্ধ করেছে। স্থানীয় সংবাদকর্মী হোবাইব সজীব বলেন, দীর্ঘদিন ধরে মহেশখালীতে আছি। এত সুন্দর এলাকা যে রয়েছে তা আগে জানতাম না। স্থানীয় শাপলাপুর বনবিট কর্মকর্তা বৃক্ষপ্রেমী মো. রাজীব ইব্রাহিমের খবরের ভিত্তিতে সরজমিন পাহাড়ি এলাকার গাছে ডালপালা মেলে সবুজায়ন হওয়ার দৃশ্য দেখতে গিয়ে এ পর্যটন স্পটের সন্ধান মেলে। আর আমার মনে হয় দেশের দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে অন্যতম ধুইল্যাজুড়ি। তিনি আরো বলেন, মহেশখালী ইউএনওর প্রচেষ্টায় ও তত্ত্বাবধানে ছোট মহেশখালী শেখ রাসেল শিশুপার্ক করা হয়েছে। উদ্বোধনের পর থেকে সবার জন্য উন্মুক্ত করা হয় পার্কটি। যদি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুদৃষ্টি দেন এটি পাহাড়ের রাজ্যে ইকোপার্ক হিসেবে গড়ে তুলতে সক্ষম হবেন। আর পাহাড়ে পার্ক নির্মাণের মধ্যে দিয়ে দ্বীপবাসীর অনেক দিনের প্রত্যাশা পূরণ হবে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) মহেশখালী সাধারণ সম্পাদক আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, মহেশখালীতে ভ্রমণে আসা পর্যটকরা শুধু আদিনাথ দেখে চলে যায়। কিন্তু ধুইল্যাজুড়ি এমন একটি পর্যটন স্পট যা দেখে যে কোনো মানুষের মধ্যে পাহাড়, বন ও পরিবেশের প্রতি প্রেম সৃষ্টি হবে। বিশেষ করে বন বিভাগের যে ছোট পরিসরে ‘গোলঘর’ রয়েছে, ঠিক তার পাশে একটি বাঁধ দিয়ে লেক তৈরি করে ঝুলন্ত ব্রিজ করলে পর্যটনে নতুন মাত্রা যোগ হবে।
শাপলাপুর বনবিট কর্মকর্তা রাজীব ইব্রাহিম বলেন, পর্যটনের বিষয়ে কোনো ধরনের পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়নি। বন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সুবিধার্থে ধুইল্যাজুড়ি পাহাড়ের ঢালুতে একটি গোলঘর স্থাপন করা হয়েছে। মূলত, বিশ্রামের জন্য এটি তৈরি করা হলেও এখন দেখছি স্থানীয়দের কাছে আকর্ষণ বেড়েছে। তবে সরকার যদি মনে করে তাহলে সেখানে পর্যটন স্পট গড়ে উঠতে পারে।
মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাহফুজুর রহমান বলেন, যদি মহেশখালীর কোনো পাহাড়ি জনপদে পর্যটন স্পট করার মতো দর্শনীয় স্থানের সন্ধান পাওয়া যায় সরজমিন পরির্দশন করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে পর্যটন স্পটে রূপ দেয়ার চেষ্টা থাকবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়