ই-অরেঞ্জের সাবেক সিওও রাসেল রিমান্ডে

আগের সংবাদ

যাত্রীসেবার মান তলানিতে : সড়ক আইন প্রয়োগে উদাসীনতা > নির্দেশনা দিয়েই দায়িত্ব শেষ কর্তৃপক্ষের

পরের সংবাদ

নওগাঁয় ধান কাটা ও মাড়াই শুরু : আউশের বাম্পার ফলন ও কাক্সিক্ষত দামে খুশি কৃষক

প্রকাশিত: আগস্ট ৩১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ৩১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মো. আবু বকর সিদ্দিক, নওগাঁ থেকে : শস্যভাণ্ডার হিসেবে খ্যাত নওগাঁয় আউশ ধানের বাম্পার ফলন এবং দাম ভালো থাকায় আউশচাষিদের মাঝে আনন্দের জোয়ার বইছে। নওগাঁ জেলার প্রায় সব উপজেলার প্রধান অর্থকরী কৃষিপণ্য হিসেবে অর্থনীতিতে ধান উৎপাদন ব্যাপক ভূমিকা পালন করে আসছে। জেলায় কৃষকের অন্যতম আয়ের উৎস ধান-চাল।
দেশের উত্তরাঞ্চলের অন্যতম ধান উৎপাদনকারী এ জেলায় বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে আউশের আবাদ হয়েছে। কৃষকরা চলতি বছরে কাটা-মাড়াই শুরু করেছেন এবং বাজারে ভালো দামে ধান বিক্রি করছেন। পাশাপাশি একই জমিতে আমন ধান রোপণ শুরু করেছেন।
ভূগর্ভস্থ পানির অপচয় রোধ করে বৃষ্টির পানি কাজে লাগিয়ে আউশ আবাদ জনপ্রিয় করতে কৃষি মন্ত্রণালয় বিভিন্ন পরিকল্পনা নিয়েছে। কৃষকরা যাতে লাভবান হতে পারেন এবং কোনো সমস্যায় না পড়েন এজন্য কৃষি বিভাগ সার্বক্ষণিক নজর রাখছে।
জেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি আউশ মৌসুমে নওগাঁ সদরে ৪ হাজার ২৭৫ হেক্টর, মহাদেবপুরে ১৫ হাজার ৬৭০ হেক্টর, পত্মীতলায় ৯ হাজার ২৪০ হেক্টর, ধামইরহাটে ৩ হাজার ৬৯০ হেক্টর, সাপাহারে ১ হাজার ৮১৫ হেক্টর, পোরশায় ১ হাজার ১২০ হেক্টর, মান্দায় ১৯ হাজার ৭০০ হেক্টর, নিয়ামতপুরে ১১ হাজার ৭০০ হেক্টর রাণীনগরে ১ হাজার ৪২৫ হেক্টর, আত্রাইয়ে ১ হাজার ৫৩৫ হেক্টর, বদলগাছীতে ১ হাজার ৫২০ হেক্টর জমিতে চাষ করা হয়েছে।
কৃষি বিভাগ আউশের প্রণোদনা হিসেবে এ মৌসুমে জেলায় ৩০ হাজার ২৬৮ জন কৃষকের মধ্যে ৫ কেজি উন্নত জাতের বীজ, ২০ কেজি ডিএপি ও ১০ কেজি এমওপি সার সরবরাহ করেছে। কৃষি বিভাগের কর্তৃপক্ষ আশা করছে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আউশের বাম্পার ফলন হয়েছে। এছাড়া বাজারে কৃষকরা ভালো দাম পাচ্ছেন।
ধামইরহাট উপজেলার আলমপুর ইউনিয়নের চৌঘাট গ্রামের কিষানি বুলি পাহান বলেন, ইরি ধানের দাম ভালো পেয়েছি। চলতি বছরে দুই বিঘা জমিতে আউশ ধান চাষ করেছি ধানের ভালো দাম পাওয়ার আশায়।
চকমহেশ গ্রামের কৃষক দুলাল হোসেন বলেন, কৃষি বিভাগ থেকে বীজ, সার বিনামূল্যে প্রদান করায় আমরা এ ধান চাষ করেছি। বোরো ধান কাটা-মাড়াইয়ের পরেই আউশ ধান চাষ করা হয়ে থাকে। ফলে জমি পতিত না থাকায় জমিতে আগাছা জন্মাতে পারে না। অন্যদিকে প্রাকৃতিক বৃষ্টিতেই প্রায় এই আউশ ধান চাষ সম্পন্ন হয়। এই ধান ঘরে তোলার পর আমন ধান চাষ করা হয়। বছরে বোরো, আউশ ও আমন ধান চাষ করায় কৃষকদের বেশি লাভ হয়ে থাকে।
নওগাঁ উপজেলার কীর্ত্তিপুর গ্রামের কৃষক ছোলাইমান জানান, তিনি গত বছর ৩ বিঘা ধান লাগিয়েছিলেন। প্রতি বিঘায় ১৯ মণ করে ধান উৎপাদন হলেও ৫০০ টাকা থেকে ৬০০ টাকায় বিক্রি করেছিলেন। লাভ বেশি না হলেও কিছু লাভ হয়েছিল। তবে এবার ধানের ভালো ফলন ও বাজারে দাম থাকায় আমাদের আর দুশ্চিন্তা নাই। বাজারে আউশ ধান বিক্রি করে ভালো দাম পাচ্ছি। তবে গত ইরি-বোরো ধানের কাটা মাড়াইয়ের শুরু থেকে প্রকার ভেদে ৯০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৮০ টাকা দরে প্রতি মণ ধান কেনাবেচা হচ্ছে।
তবে অনেক কৃষকরা কৃষি প্রণোদনা না পাওয়ায় অভিযোগ করে বলেন, অতীতেও তাদের মতো অনেক কৃষকই সরকারি এই সহযোগিতা পাননি। সঠিক কৃষকদের এই সহযোগিতা দেয়ার তারা দাবি জানান।
নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সামছুল ওয়াদুদ জানান, আউশ ধান চাষে তেমন সেচ ও সারের প্রয়োজন হয় না। নওগাঁয় আউশ মৌসুমে প্রায় ৩০ হাজার কৃষকদের মধ্যে কৃষি প্রণোদনা হিসেবে সার ও ধান বীজ দেয়া হয়েছে যাতে কৃষকরা বেশি করে আউশ ধান চাষ করেন। বন্যায় জেলায় প্রায় ৪ হাজার হেক্টর জমির আউশ ধান নষ্ট হলেও কৃষি বিভাগ আশা করছে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আউশের বাম্পার ফলন হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, জেলার বাকি কৃষকদের কৃষি সুবিধা দিতে পারলে আগামীতে নওগাঁয় আরো ধান উৎপাদন চাষে কৃষকরা উদ্বুদ্ধ হবেন এবং ধানের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়