ই-অরেঞ্জের সাবেক সিওও রাসেল রিমান্ডে

আগের সংবাদ

যাত্রীসেবার মান তলানিতে : সড়ক আইন প্রয়োগে উদাসীনতা > নির্দেশনা দিয়েই দায়িত্ব শেষ কর্তৃপক্ষের

পরের সংবাদ

দৌলতদিয়ায় পদ্মার ভাঙনে বিলীন মসজিদসহ স্থাপনা

প্রকাশিত: আগস্ট ৩১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ৩১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

আলিমুজ্জামান মিলন, রাজবাড়ী থেকে : রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ৩ ও ৪নং ফেরিঘাটের মাঝামাঝি ছিদ্দিক কাজীরপাড়া এলাকায় গতকাল সোমবার সকাল ৮টার দিকে হঠাৎ তীব্র ভাঙন শুরু হয়েছে। ভাঙনের তীব্রতায় মুহূর্তের মধ্যে ৫টি বসতভিটা, ছিদ্দিক কাজীরপাড়া জামে মসজিদসহ প্রায় ১০০ মিটার এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এসময় শত শত মানুষের চোখের

সামনে তাদের প্রিয় মসজিদটি বিলীন হতে দেখে অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েন। আর আকস্মিক ভাঙন শুরু হওয়ায় তারা সরিয়ে নিয়েছেন ভাঙন ঝুঁকিতে থাকা অন্তত ২০টি ঘরবাড়ি এবং ভাঙন আতঙ্কে রয়েছে ৩,৪,৫ ও ৬নং ফেরিঘাট এবং প্রায় ২ শতাধিক ঘরবাড়িসহ নানা স্থাপনা। বিআইডব্লিউটিএ অপরিকল্পিতভাবে লাখ লাখ টাকা ব্যয়ে যে জিওব্যাগ ফেলছে তা কোনো কাজেই আসছে না। এ নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।
স্থানীয়রা বলছেন, গত কয়েকদিন আগে দৌলতদিয়া লঞ্চঘাট এলাকায় ভাঙনে প্রথম দফায় ১০টি বসতবাড়িসহ প্রায় ১৫০ মিটার, দ্বিতীয় পর্যায়ে ৩০ মিটার, তৃতীয় পর্যায়ে আরো ৩০ মিটার এলাকা পদ্মার তাণ্ডবে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। সেখানে পানি উন্নয়ন বোর্ড জিওটিউব ও জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন রক্ষার চেষ্টা করলেও ভাঙন ঝুঁকিতে থাকা সত্ত্বেও ৩,৪,৫ ও ৬নং ফেরিঘাটসহ দৌলতদিয়া ছিদ্দিক কাজীরপাড়া এলাকায় ভাঙন রোধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি বিআইডব্লিউটিএ। ফলে মসজিদসহ ৫টি বসতভিটা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেল।
এদিকে ভাঙন শুরু হওয়ার পর বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ জরুরিভাবে জিও ব্যাগ ডাম্পিং করতে শুরু করলেও তা কোনো কাজেই আসছে না। এভাবে চলতে থাকলে ৪টি ফেরিঘাটসহ ছিদ্দিক কাজীরপাড়া এলাকার পুরোটাই যে কোনো সময় নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আশরাফুল ইসলাম আশরাফ বলেন, ভাঙনে ছিদ্দিক কাজীপাড়ার সিদ্দিক কাজী, হান্নান কাজী, মান্নান কাজী, আরশাদ আলী ও বাচ্চু খানের বসতাভিটা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। তবে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় তারা তাদের ঘরবাড়িগুলো দ্রুত সরিয়ে নিতে সক্ষম হন। এছাড়া ভাঙন আতঙ্কে সেখানকার আরো ২০টি পরিবার তাদের বসতভিটা নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেন। যারা রয়েছেন তাদের মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।
দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান মণ্ডল ভাঙন পরিস্থিতি দেখতে এসে ক্ষতিগ্রস্তদের দুর্দশা দেখে নিজেই হাউমাউ করে কেঁদে ফেলেন। এসময় তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমি নিজে, আমাদের উপজেলা চেয়ারম্যান এবং প্রশাসনের পক্ষ থেকে গত কয়েকদিন ধরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ও বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষকে এখানে ভাঙনের বিষয়ে আশঙ্কার কথা বলে আসছিলাম। কিন্তু তারা যথাসময়ে ভাঙন রোধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। ভাঙন শুরু হওয়ার পর জিও ব্যাগ ফেলা শুরু হলেও তাতে খুব একটা কাজ হচ্ছে না। বরং এতে সরকারের ব্যয় বেশি হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, গত কয়েক বছরের অব্যাহত ভাঙনে দৌলতদিয়ার ১,২ ও ৩নং ওয়ার্ড নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। হাজার মানুষ সব কিছু হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন। ঐতিহ্যবাহী দৌলতদিয়া ঘাটকে রক্ষার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
বিআইডব্লিউটিএ আরিচা অঞ্চলের উপসহকারী প্রকৌশলী মো. মকবুল হোসেন বলেন, ভাঙনের খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে জরুরিভিত্তিতে জিও ব্যাগ ডাম্পিং করতে শুরু করেছি। এটা অব্যাহত থাকবে। এসময় তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, দ্রুত ভাঙন রোধ করতে না পারলে এখানকার ৩,৪,৫ ও ৬নং ফেরিঘাট, ঘাটের পাকা সড়ক, বহু ঘরবাড়ি ও স্থাপনা টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়বে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়