ই-অরেঞ্জের সাবেক সিওও রাসেল রিমান্ডে

আগের সংবাদ

যাত্রীসেবার মান তলানিতে : সড়ক আইন প্রয়োগে উদাসীনতা > নির্দেশনা দিয়েই দায়িত্ব শেষ কর্তৃপক্ষের

পরের সংবাদ

গোলাম হাসনাইন রাসেল মেয়র, ভাঙ্গুড়া পৌরসভা > নাগরিক সেবা নিশ্চিতে কাজ করে যাচ্ছি

প্রকাশিত: আগস্ট ৩১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ৩১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মো. আকছেদ আলী, ভাঙ্গুড়া (পাবনা) থেকে : ভাঙ্গুড়া পৌরসভাকে আধুনিক, মাদকমুক্ত, আলোকিত, পরিচ্ছন্ন ও নান্দনিক সৌন্দর্যবর্ধন করে আকর্ষণীয় জনবান্ধব পৌরসভা নির্মাণের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। পর পর দুবার নির্বাচিত পৌর মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম হাসনাইন রাসেল ভোরের কাগজের এই প্রতিনিধিকে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এমন কথা জানিয়েছেন। কিছু পেতে নয় জনগণকে সেবা দেয়ার ব্রত নিয়েই তিনি নৌকা প্রতীক নিয়ে ২০১৬ সালে প্রথমবার মেয়র হিসেবে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়ে ৭ ফেব্রুয়ারি দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২১ সালের জানুয়ারিতে পুনরায় নৌকা প্রতীক নিয়ে বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় নির্বাচিত হয়ে পঞ্চম মেয়র হিসেবে তিনি দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।
পাবনা জেলা সদর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বদিকে চলনবিল পাড়ে অবস্থিত ভাঙ্গুড়া পৌরসভা গঠিত হয়েছিল ১৯৯৯ সালের ১ ডিসেম্বর।
৬.৬৭ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই পৌরসভার জনসংখ্যা প্রায় ৩০ হাজার। ভোটার ১৬ হাজার ৩১৯ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার ৮ হাজার ৩২৬ ও পুরুষ ভোটার ৭ হাজার ৯৯৩ জন। ট্যাক্স, ট্রেড লাইন্সেস ও হাটবাজার এই পৌরসভার আয়ের প্রধান উৎস।
মেয়র গোলাম হাসনাইন রাসেল বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শকে বুকে ধারণ করে পৌরবাসীকে সেবা দেয়ার ব্রত নিয়ে ২০১৬ সালে নৌকা প্রতীক নিয়ে বিপুল ভোটের ব্যবধানে বিএনপির প্রার্থীকে পরাজিত করে এই পৌরসভার চতুর্থ নির্বাচিত মেয়র হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করি। সে সময় পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বকেয়া বেতন মিলে প্রায় ৩০ লাখ টাকা ঘাটতিসহ দায়িত্ব নিয়ে যাত্রা শুরু করি। তিনি পৌরসভার টিমকে সঙ্গে নিয়ে জনগণের সহযোগিতায় অল্প সময়ের মধ্যেই সেই ঘাটতি পূরণ করতে

সক্ষম হন। পৌরবাসীকে সচেতন করে নাগরিকদের ট্যাক্স প্রদান ও ব্যবসায়ীদের ট্রেড লাইন্সেস গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করে পৌরসভা বর্তমানে স্বয়ংসম্পূর্ণ। পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়মিত বেতন-ভাতা ও বিদ্যুৎ বিল পরিশেধ করা হচ্ছে। ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে পৌর নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে দ্বিতীয় মোয়াদে বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় মেয়র নির্বাচিত হয়ে সেই উন্নয়নের ধারাকে আরো ত্বরান্বিত করে এগিয়ে নেয়া হচ্ছে পৌরসভাকে। মাদক নির্মূলে পৌর এলাকার বিভিন্ন পয়েন্টে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে এবং মাদক নিয়ন্ত্রণে কঠোর নীতি অবলম্বন করা হচ্ছে।
পাবনা-৩ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ মো. মকবুল হোসেনের সহযোগিতায় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হসিনা উন্নয়নের সহযোগী হিসেবে ২০১৭ সালে ‘খ’ শ্রেণি থেকে ‘ক’ শ্রেণিতে উন্নীত করেন। এই পৌরসভায় রাস্তাঘাট নির্মাণ, পাকাকরণ, সংস্কার, পয়ঃনিষ্কাশনের জন্য ড্রেন নির্মাণ, রাস্তা প্রশস্তকরণসহ জনগুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে প্রায় ৭০০ সড়কবাতি স্থাপন করা হয়। পৌরসভায় অবসর বিনোদনের জন্য দুটি শিশুপার্ক নির্মাণ, সরকারি হাজি জামাল উদ্দীন কলেজ সংলগ্ন এলাকায় একটি অবসরকালীন ক্যাফেটরিয়া নির্মাণ করা হয়েছে। বড়ালব্রিজ স্টেশন এলাকা যানজটমুক্ত রাখার লক্ষ্যে ওই ক্যাফেটরিয়ার পাশেই সিএনজি ও আটো স্ট্যান্ড নির্মাণ করা হয়েছে। ফলে শরৎনগর ও বড়াল ব্রিজ স্টেশন এলাকা বর্তমানে অনেকটাই যানজটমুক্ত।
পৌর এলাকা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার লক্ষ্যে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে প্রায় ২০০ ডাস্টবিন স্থাপন করা হয়েছে। বর্তমানে পৌরসভায় ভিজিএফ, জিআর, মানবিক সহায়তা (নগদ অর্থ) বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, ল্যাক্টোটিং ভাতা চালু আছে। পৌরসভায় ৩৪টি অক্সিজেন সিলিন্ডার মজুত রাখা আছে। করোনায় আক্রান্ত শ্বাসকষ্টজনিত যে কোনো রোগী ডাক্তারের পরামর্শে পৌরসভার কাছে অক্সিজেন সহায়তা চাইলে পৌরসভার পক্ষ থেকে দ্রুত বিনামূল্যে অক্সিজেন সিলিন্ডার পৌঁছে দেয়া হচ্ছে।
মেয়র আরো জানান, করোনাকালে পৌর সদরের জনবহুল স্থানগুলোতে হাত ধেয়ার ব্যবস্থা, বিনামূল্যে মাস্ক বিতরণ, করোনা আক্রান্ত হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা ব্যক্তি ও কর্মহীদের সাহায্য করা হয়। রাস্তার পাকাকরণ কাজ এরই মধ্যে প্রায় ৯০ ভাগ শেষ হয়েছে। অধিকাংশ ড্রেনের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। তবে এখনো যা কিছু কাজ বাকি আছে সেগুলো আগামী ডিসেম্বরে টেন্ডারের জন্য অপেক্ষায় রাখা আছে। বর্ষাকালে পৌরসভার কিছু কিছু স্থানে বৃষ্টির পানি জমে থাকে সেই স্থানে পৌরসভার পক্ষ থেকে অস্থায়ীভাবে ওয়াটার পাম্প বসিয়ে জলাবদ্ধতা নিরসন করা হচ্ছে।
পৌরসভার সাপ্লাই পানি সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘পাবনা জেলার সুজানগর, ভাঙ্গুড়া ও চাটমোহর পৌরসভা পাইপড ওয়াটার সাপ্লাই এন্ড এনভায়রনমেন্টাল স্যানিটেশন’ নামের প্রকল্পে স্থাপিত হয়েছিল ২০১২ সালে। এই প্রকল্পের বাস্তবায়নকারী সংস্থা হচ্ছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর ও ভাঙ্গুড়া পৌরসভা। পৌরসভায় হস্তান্তর হয়েছিল ২০১৩ সালের ১৯ ডিসেম্বর। কিন্তু তৎকালীন মেয়রের সঠিক তদারকি ও দেখভালের অভাবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিম্নমানের পাইপ ব্যবহার করার কারণে পৌরবাসী আজ পর্যন্ত সাপ্লাই পানির মুখ দেখেননি।
তবে আগামীতে পৌরবাসীকে ওয়ার্ডভিত্তিক ভাগ করে প্রথমে ১০০ পরিবারকে টার্গেট করে মোটর ও পানির ট্যাংকি স্থাপন করে তাদের সাপ্লাই পানির সুবিধার আওতায় আনার পরিকল্পনা রয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়