ই-অরেঞ্জের সাবেক সিওও রাসেল রিমান্ডে

আগের সংবাদ

যাত্রীসেবার মান তলানিতে : সড়ক আইন প্রয়োগে উদাসীনতা > নির্দেশনা দিয়েই দায়িত্ব শেষ কর্তৃপক্ষের

পরের সংবাদ

অগোছালো সিলেট বিএনপিতে ক্ষোভ : আস্থা হারাচ্ছেন নেতাকর্মীরা

প্রকাশিত: আগস্ট ৩১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ৩১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

জাহিদুল ইসলাম, সিলেট ব্যুরো : সাম্প্রতিক সময়ের মতো এত খারাপ অবস্থার সম্মুখীন হয়নি সিলেট বিএনপি। দল পুনর্গঠনের লক্ষ্যে দুই বছর ধরে যতগুলো কমিটি হয়েছে, প্রতিটি কমিটি ঘোষণার পরই বেড়েছে নেতাকর্মীদের অসন্তোষ। কখনো প্রকাশ্য বিরোধ, আবার কখনো নীরব। আর এতে করে দলের ওপর আস্থা হারাচ্ছেন তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। গতকাল সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন সিলেট বিএনপির একাংশের নেতারা।
সিলেটে বিএনপির অঙ্গসংগঠনের বিরোধ প্রথম প্রকাশ্যে আসে ২০১৮ সালের জুনে ছাত্রদলের কমিটি গঠনের সময়। আংশিক এ কমিটি ঘোষণার পর বিক্ষোভে ফেটে পড়েন পদবঞ্চিত নেতাদের একাংশ। অভিযোগ ওঠে অযোগ্য, অছাত্র, আদু ভাইদের দিয়ে কমিটি করার। ঝাড়– হাতে বিক্ষোভ মিছিল করেন নেতাকর্মীরা। সংবাদ সম্মেলন করে একযোগে পদত্যাগ করেন ৯ ছাত্রনেতা। তবে সেবার কেন্দ্রের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। দুই বছর পর জেলার ৩৩টি ইউনিটের কমিটি ঘোষণা নিয়ে ফের উত্তাপ ছড়ায় সিলেট ছাত্রদলে। আবারো পদত্যাগ, বিক্ষোভ, ঝাড়– মিছিল হয়। দুই বছরের মেয়াদ পার হওয়ার পর ছাত্রদলের সেই আংশিক কমিটি পূর্ণতা পায় চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে। ২০১৯ সালের নভেম্বরে যুবদলের কমিটি নিয়েও তুলকালাম বাধে সিলেট বিএনপিতে। ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ন না করে ১৯ বছর পর ঘোষিত আহ্বায়ক কমিটি গঠনের প্রতিবাদে পদত্যাগের ঘোষণা দেন সিলেটের রাজনীতির প্রভাবশালী চার নেতা। যদিও বিএনপি মহাসচিবের আশ্বাসে পদত্যাগ থেকে সরে আসেন তারা।
সর্বশেষ গত ১৭ আগস্ট স্বেচ্ছাসেবক দলের জেলা ও মহানগর কমিটি গঠন নিয়ে আবার উত্তপ্ত হয় সিলেট বিএনপি। সংবাদ সম্মেলনে কেন্দ্রীয় বিএনপিকে তুলাধুনো করে পদত্যাগ করেন এক সময়ের রাজপথের প্রভাবশালী নেতা এডভোকেট শামসুজ্জামান জামান। তার পথ অনুসরণ করে পদত্যাগ করেন আরো দেড় শতাধিক নেতাকর্মী। সহসা এ সমস্যার সমাধান করতে না পারলে আরো কঠিন সংকটে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে মনে করছেন সিলেট বিএনপির অনেক নেতা।
সূত্রমতে, সিলেট বিএনপির এ অগোছালো অবস্থার জন্য মূলত দায়ী নেতাদের বিভাজন। সিলেট বিএনপি ও তার অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা বর্তমানে দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে আছেন। একাংশের নেতৃত্ব দিচ্ছেন এক সময়ের জাদরেল নেতা খন্দকার আব্দুল মালিকের ছেলে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার

আব্দুল মুক্তাদির। আর অন্য ভাগের নেতৃত্বে রয়েছেন সিলেটের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ও তার অনুসারীরা। আরিফ অনুসারীদের অভিযোগ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার মুক্তাদির তার দীর্ঘদিনের লন্ডন কানেকশনকে কাজে লাগিয়ে সব কমিটির শীর্ষ পদে তার অনুসারীদের জায়গা করে দিচ্ছেন। আর এতে বঞ্চিত হচ্ছেন তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।
সাম্প্রতিককালে সিলেট বিএনপির এসব চড়াই-উতরাই নিয়ে সংবাদ সম্মেলন ডাকে সিলেট বিএনপির একাংশ। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-ক্ষুদ্রঋণ বিষয়ক সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আজকে বিএনপির রাজনীতি রাজনীতিবিদদের হাতে নেই। কিছু মানুষ এই দলের এমপি-মন্ত্রী হওয়ার জন্য দলটিকে তার ব্যক্তিগত জায়গির হিসেবে ব্যবহার করছে।
তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলন যেখানে মুখ্য হওয়ার কথা, সেখানে আমরা দৃষ্টি ফিরিয়ে নিয়েছি। আজকে যুব ও তরুণ প্রজন্ম আদর্শহীনতার রাজনীতির কারণে রাজনীতিকেই নেতিবাচক দৃষ্টিতে দেখছে। বিএনপির নীতিনির্ধারকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, দলটির আদর্শিক কর্মী যদি হারিয়ে যায়, তাহলে শহীদ জিয়ার আদর্শ হারিয়ে যাবে এবং খালেদা জিয়ার মুক্তি যখন বাংলাদেশের সব মানুষের দাবি, এ দাবিকে পূরণ করার জন্য যেসব নেতৃত্ব দলে প্রয়োজন, তা আর খুঁজে পাওয়া যাবে না। আজকে যদি ‘বণিক’ শ্রেণী ও ‘নব্য সুবিধাভোগী চক্রের’ কাছে দল জিম্মি হয়ে যায়, তাহলে দল ও জাতির জন্য চরম দুর্ভাগ্যের বিষয় হয়ে দাঁড়াবে।
তবে এতসব অভিযোগ যেই খন্দকার আব্দুল মুক্তাদিরকে ঘিরে, তিনি আছেন নিশ্চুপ। ভোরের কাগজ থেকে একাধিকবার তার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়