ম্যান ইউতে ফিরলেন রোনালদো

আগের সংবাদ

চেনা উইকেটে অচেনা নিউজিল্যান্ড

পরের সংবাদ

মধুমতিতে বিলীন মহম্মদপুর সদরে যাওয়ার একমাত্র পথ

প্রকাশিত: আগস্ট ২৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ২৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মুরাদ হোসেন, মহম্মদপুর (মাগুরা) থেকে : মহম্মদপুরে মধুমতি নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ভাঙনের তীব্রতা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। প্রতিদিনই ভাঙছে নদীর পাড়। এতে নদীগর্ভে হারিয়ে যাচ্ছে ঘরবাড়ি, গাছপালা, রাস্তাঘাট ও শত শত একর ফসলি জমি। জমিজমা ও ঘরবাড়ি হারিয়ে নিঃস্ব হচ্ছে নদীপাড়ের শত শত পরিবার। অসহায় অবস্থায় অনেকেই আশ্রয় নিয়েছে খোলা স্থানে।
মধুমতি নদীগর্ভে হারিয়ে গেছে উপজেলার চরপাচুড়িয়া গ্রামের মেইন পাকা সড়কের কিছু অংশ। এতে কয়েকটি গ্রামের হাজার হাজার মানুষের দুর্ভোগ চরমে। এই পাকা সড়ক দিয়ে প্রতিনিয়ত উপজেলা সদরে আশা-যাওয়া করে চরপাচুড়িয়া, পাচুড়িয়া, চরদেউলীসহ আশপাশের পাঁচ গ্রামের ১০-১৫ হাজার মানুষ। ফলে দুর্ভোগের অন্ত নেই এলাকাবাসীসহ পথচারীদের। তাই মধুমতির তীব্র এই ভাঙনের শিকার পাকা সড়কটি বাঁচানোর জন্য স্থায়ী বাঁধের দাবি জানান এলাকাবাসী।
প্রতিনিয়ত স্থানীয় কয়েক হাজার মানুষের নানা কাজে উপজেলা সদরে আসা ও এলাকার কৃষকদের উৎপাদনকৃত কৃষি ফসল বাজারজাত করার জন্য উপজেলা সদরে নেয়া হয় এই রাস্তা দিয়ে। এছাড়াও আলফাডাঙ্গা উপজেলার চরনারান্দিয়া ও চাঁদড়াসহ আশপাশের কয়েকটি এলাকার লোকজন আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে আশা-যাওয়াসহ বিভিন্ন প্রয়োজনে মহম্মদপুরে আসার একমাত্র সড়ক এটি। রায়পাশার পর চরপাচুড়িয়া গ্রামের মধ্যে পাকা এই সড়কটি সামান্য কাঁচা ছিল। যা গত বছর বালু দিয়ে সমতল করেছিলেন এলাকাবাসী। এ বছর আবার নদী ভাঙনে কার্পেটিং রাস্তাসহ সেই স্থান ভেঙে যায়। ফলে এলাকাবাসীসহ পথচারীদের চরম দুর্ভোগ পোয়াতে হচ্ছে। ইজিবাইক বা ভ্যান থেকে নেমে জুতা-স্যান্ডেল হাতে নিয়ে পারাপার হতে হচ্ছে পথচারীদের। পানিতে পড়ে অনেকের কাপড়-চোপড় ভিজে যাচ্ছে। বেশি সমস্যায় পড়তে হচ্ছে নারী ও শিশুদের।
পথচারী নাজমা বেগম বলেন, আমার ছেলে মহম্মদপুরে একটি মাদ্রাসায় পড়ালেখা করে। আমি ছেলের কাছে এসেছিলাম। কিন্তু এখানে এসে খুবই সমস্যায় পড়েছি। আমার কাপড়-চোপড় ভিজে গেছে।
রায়পাশা গ্রামের কৃষক মো. রফিউদ্দীন বলেন, এই রাস্তা দিয়ে আমাদের ক্ষেতে যেতে হয়। আবার মাঠ থেকে ফসল বাড়ি আনতে হয়। এই রাস্তার জন্য আমাদের খুব সমস্যা হচ্ছে। তাই রাস্তাটি ভালো হলে খুব উপকার হতো। চরপাচুড়িয়ার কৃষক আলী আবজাল বলেন, আমাগের গ্রামের অনেকের ফসলি জমিজমা, গাছপালা ও ঘরবাড়ি নদীতে চলে গেছে। তারপরও আমাগের বিভিন্ন কাজে ও ফসল বিক্রির জন্য উপজেলা সদরে যাওয়ার রাস্তা ভেঙে যাওয়ায় আমরা খুব সমস্যায় পড়েছি। রাস্তাটা ভালো করার দাবি আমাগের। চরপাচুড়িয়ার বাসিন্দা ব্যবসায়ী মো. মহিদুল ইসলাম বলেন, নদীগর্ভে হারিয়ে যাচ্ছে হাজার হাজার মানুষের উপজেলা সদরে যাওয়ার একমাত্র সড়কটি। গত বছর এলাকাবাসীর সার্বিক সহযোগিতায় আমি প্রায় ৮০ হাজার টাকার বালু দিয়েছিলাম এই রাস্তায়।
এ বছর আবার ভেঙে গেছে। তাই কর্তৃপক্ষ যদি আশু দৃষ্টি দিতেন তাহলে উপকৃত হতো এ অঞ্চলের হাজার হাজার মানুষ। মধুমতি নদী ভাঙন কবলিত চরপাচুড়িয়া এলাকা পরিদর্শন করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার রামানন্দ পাল। পরিদর্শনকালে তিনি জানান, ভাঙনকৃত এই রাস্তা দ্রুত সংস্কার করে এলাকাবাসীসহ পথচারীদের ভোগান্তি দূর করা হবে।
স্থানীয় সংসদ সদস্য ড. শ্রী বীরেন শিকদার জানান, গত বছর হরেকৃষ্ণপুর থেকে ঝামা পর্যন্ত ৩শ মিটার এলকায় জিও ব্যাগ ফেলা এবং কাশিপুর এলাকায় প্রায় দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে ১৫০ মিটার বাঁধ নির্মাণ কাজ করেছি। এ বছরেও ঝামা বাজার এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে এবং ভোলানাথপুর ও কাশিপুর জিও ব্যাগ ফেলার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে আমি চেষ্টা করছি ভাঙন প্রবল এলাকাগুলো চিহ্নিত করে স্থায়ী বাঁধ দেয়ার জন্য।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়