ম্যান ইউতে ফিরলেন রোনালদো

আগের সংবাদ

চেনা উইকেটে অচেনা নিউজিল্যান্ড

পরের সংবাদ

পূজা উদযাপন পরিষদ : সাম্প্রদায়িক শক্তির উত্থানে সজাগ থাকতে হবে

প্রকাশিত: আগস্ট ২৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ২৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : সার্কভুক্ত দেশ আফগানিস্তানে তালেবান পুনরায় ক্ষমতায় আসায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ ও মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটি। গতকাল শনিবার জন্মাষ্টমী উপলক্ষে আয়োজিত সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় কমিটির সদস্যরা বলেন, মানবিক মূল্যবোধ বিবর্জিত তালেবানের দৃষ্টিভঙ্গি গণতন্ত্রমনা ও মানবাধিকারকামী বিশ্ববাসীকে ভাবনায় ফেলেছে। আমরাও উদ্বিগ্ন। আমরা বর্তমান গণতান্ত্রিক মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের সরকার, সব রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজ, পেশাজীবী সংগঠন ও গণমাধ্যমের প্রতি সাম্প্রদায়িক শক্তির উত্থানের বিষয়ে সজাগ থাকার ও যথাযথ ভূমিকা পালনের আহ্বান জানাই।
সকালে শ্রীশ্রী ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির প্রাঙ্গণে এই সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি মিলন কান্তি দত্ত ও সাধারণ সম্পাদক নির্মল কুমার চ্যাটার্জি, মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি সাবেক সচিব শৈলেন্দ্রনাথ মজুমদার ও সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট কিশোর রঞ্জন মণ্ডল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সম্প্রতি সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর ও মন্দিরে হামলার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বক্তারা বলেন, বিগত কয়েক মাসে করোনা অতিমারির মধ্যেও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে লুটপাট, মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুর, জোরপূর্বক অপহরণ ও ধর্মান্তরকরণ, ধর্ষণ, দেশত্যাগের হুমকির ঘটনা ঘটেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুয়া গুজব ছড়িয়ে একাধিকবার দেশের বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে সাম্প্রদায়িক অপশক্তির আক্রমণের শিকার হতে হয়েছে। কখনো কখনো দলবদ্ধভাবে সর্বদলীয় হামলার শিকার হতে হয়েছে। আমরা দুষ্কৃতকারীদের ঘৃণ্য সহিংসতার মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বিঘœ সৃষ্টির অপচেষ্টার তীব্র নিন্দা জানাই এবং দোষী ব্যক্তিদের দ্রুত বিচার আইনের আওতায় শাস্তি দিতে সরকারের প্রতি জোর দাবি জানিয়ে আসছি। যে কোনো ঘটনায় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কিছু ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম ছাড়া তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা গ্রহণে সচেষ্ট থেকেছে।
কিন্তু বিচার প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রিতায় শাস্তির বিষয়টি ত্বরিত দৃশ্যমান না হওয়ায় মানুষ হতাশ হয়, আস্থার সংকট তৈরি করে, দুষ্কৃতকারীরা উৎসাহিত হয়। সাম্প্রদায়িক শক্তির এই ধরনের কর্মকাণ্ডের পেছনে দেশের স্থিতিশীলতা নষ্ট করার কোনো গভীর ষড়যন্ত্র কাজ করছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা দরকার। বক্তারা বলেন, অতীতে সংঘটিত সাম্প্রদায়িক হামলার সঠিক বিচার হলে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটত না। বর্তমান সরকারের কাছে সংখ্যালঘুদের প্রত্যাশা অনেক বেশি। আমরা আশা করবো প্রতিটি সাম্প্রদায়িক হামলার সাথে জড়িতদের বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া হবে যাকে এ ধরনের ঘটনা ঘটানোর আর কোনো সাহস না পায়।
এছাড়া বক্তারা অর্পিত সম্পত্তি সংশোধনী আইনের সুফল ভুক্তভোগীদের কাছে যথাযথ দৃশ্যমান নয় উল্লেখ করে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সদিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও নানাবিধ প্রশাসনিক জটিলতায় অর্পিত সম্পত্তি সংশোধনী আইনের সুফল ভুক্তভোগীদের কাছে যথাযথ দৃশ্যমান নয়। ইশতেহারে প্রদত্ত অন্যান্য প্রতিশ্রæতি বিষয়েও কোনো অগ্রগতি পরিলক্ষিত হচ্ছে না। এতে ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায় হতাশা প্রকাশ করছে। আমরা প্রতিশ্রæত বিষয়গুলো এই মেয়াদে বাস্তবায়নের জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রাক্কালে বর্তমান সরকারের ক্ষমতাসীন দল তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে অর্পিত সম্পত্তি সংশোধনী আইন বাস্তবায়ন, জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠন ও সংখ্যালঘু বিশেষ সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, সংখ্যালঘু ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী প্রতি বৈষম্যমূলক আইন ও অন্যায় ব্যবস্থার অবসানসহ কয়েকটি প্রতিশ্রæতি দিয়েছিল।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়