কুমিল্লায় ট্রাকচাপায় প্রাণ গেল দুই নারীর

আগের সংবাদ

শাড়িতেই এবার পকেট

পরের সংবাদ

মগবাজারে বিস্ফোরিত ভবনটি এলাকাবাসীর গলার কাঁটা

প্রকাশিত: আগস্ট ২৮, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ২৮, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

আজিজুর রহমান জিদনী : রাজধানীর মগবাজারে ভয়াবহ বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত তিনতলা রাখিনীড় ভবনটি এখনো এলাকাবাসীর গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। এখনো তারা আতঙ্কে রয়েছেন ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটি থেকে আবার কোন বিপর্যয়ই না ঘটে। তবে মর্মান্তিক এ ঘটনার ২ মাস পেরুলেও বিধ্বস্ত ভবনটি এখনো অপসারণ করেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। যদিও ঘটনার পরের দিনই ২৮ জুন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর ভবনটিকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে।
এমন পরিস্থিতিতে ভবনটি অপসারণ করে ওই এলাকার পরিবেশকে যথাযথ করা একটি গুরুদায়িত্ব ও তা প্রতিপালনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের যথেষ্ট আগ্রহের অভাব রয়েছে বলে মনে করছেন পরিবেশবিদরা। দ্রুত এমনটি না করলে জনস্বার্থের যে ক্ষতি হবে তাতে সাংঘাতিক বিপর্যয় ঘটে যেতে পারে বলে মনে করছেন তারা।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) যুগ্ম সম্পাদক ও স্থপতি ইকবাল হাবিব ভোরের কাগজকে বলেন, উদ্ধার কার্যক্রম থেকেই বিষয়টি আমাকে হতাশ করেছে। আর ঘটনার ৪৮ ঘণ্টা পর যখন ধ্বংসস্তূপ থেকে একজন তত্ত্বাবধায়কের লাশ অবিষ্কার করা হয় তাতে হেলাফেলার বিষয়টি একদম স্পষ্ট। ঘটনার এতদিন পেরুলেও ভবনটি অপসারণ হয়নি। কিন্তু ভবনটিকে দ্রুত অপসারণ না করায় প্রতীয়মান হয় যে কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব পালনে আগ্রহের অভাব রয়েছে। আর এ দায়িত্বহীনতার জন্যও ঘটনার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে। এ কারণেই আমরা অবহেলা করতে শিখেছি। দায়মোচনের নিয়ম থাকলেও আসলে তা দেখা যাচ্ছে না। আর এ ভবনটি অপসারণ করে পরিবেশকে যথাযথ করার দায়িত্ব শুধু সিটি করপোরেশনের। অন্য কারো পক্ষে তা সম্ভব নয়। আইনানুযায়ী সেই কাজটা তাদেরই করা উচিত। না করার কোনো যুক্তি নেই। বরং না করলে এর দরুণ জনস্বার্থের যে ক্ষতি হবে তাতে সাংঘাতিক বিপর্যয় ঘটে যেতে পারে।
ঘটনাস্থলের পেছনের ৮১/২ বাড়ির বাসিন্দা সাইফুর রহমান রানা ভোরের কাগজকে জানান, রাখিনীড় ভবনটি এখনো এলাকাবাসীর গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখনো তারা আতঙ্কে রয়েছেন ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটি থেকে আবার কোন বিপর্যয়ই না ঘটে। এমনিতেই ঘটনার দিন বাসার অনেক ক্ষতি হয়েছে। কেউ ক্ষতিপূরণ দেয়নি।
এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে বাপার যুগ্ম সম্পাদক ও স্থপতি ইকবাল হাবিব বলেন, নারায়ণগঞ্জের মসজিদের ঘটনার পর যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। আর হয়নি বলেই এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি। যদি আমরা ঘটনার পর ব্যবস্থা নিতাম তাহলে এমন হতো না। এ বিষয়ে তিতাস গ্যাসের মুখপাত্র গোলাম মোস্তফাকে ফোন করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের বিস্ফোরণস্থল এলাকার ১৯নং ওয়ার্ডের কমিশনার আবুল বাশার ভোরের কাগজকে বলেন, আমরা ইতোমধ্যে ভবনটি অপসারণের জন্য মালিককে চিঠি দিয়েছি। তারা নির্ধারিত সময়ে না ভাঙলে সিটি করপোরেশন তা ভেঙে দেবে। জরিমানা করা হবে। আর তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাস্তার কাজ করতে পারছিলাম না। তবে তদন্ত কমিটির কাছ থেকে জেনেছি বিস্ফোরণেই এমন ঘটনা। এর পরেই আমরা রাস্তা সংস্কারের কাজ করে যাচ্ছি।
প্রসঙ্গত, গত ২৭ জুন সন্ধ্যায় মগবাজার ওয়্যারলেস গেট এলাকায় তিনতলা ভবন রাখীনীড়ের নিচতলা ও দোতলা প্রচণ্ড বিস্ফোরণে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। মগবাজার-মৌচাক সড়কের পাশে ৭৯ নম্বর আউটার সার্কুলার রোডে ওই বিস্ফোরণের মাত্রা এতটাই তীব্র ছিল যে তাতে আশপাশের এক ডজনেরও বেশি ভবনের প্রায় সব কাচ ভেঙে তীব্র বেগে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে উপর থেকে।
ওই ভবনের নিচতলায় থাকা বেঙ্গল মিটের বিক্রয় কেন্দ্র ও খাবারের দোকান শরমা হাউস এবং দোতলায় অবস্থিত ইলেকট্রনিক্স পণ্য সিঙ্গারের বিক্রয় কেন্দ্র মিশে যায়। বিভিন্ন পিলারও ধসে পড়ে। ভয়াবহ এই বিস্ফোরণে ১২ জন নিহত হয়। আহত হয় শতাধিক।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়