কাগজ ডেস্ক : চীনের অভিযোগ, করোনা ভাইরাসের উৎপত্তি নিয়ে ‘রাজনীতি’ শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকা দিতেই এক্ষেত্রে চীনকে ‘বলির পাঁঠা’ হিসেবে হাজির করার চেষ্টা চালাচ্ছে তারা। ভাইরাসের উৎপত্তি নিয়ে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদন প্রসঙ্গে এ মন্তব্য করে বেইজিং। হোয়াইট হাউসের প্রেসসচিব জেন সাকির বরাতে গত বুধবার রয়টার্স জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে ভাইরাসের উৎপত্তির বিষয়ে গোপনীয় গোয়েন্দা প্রতিবেদন দেয়া হয়েছে।
প্রতিবেদনে এর আগে করোনা ভাইরাসের উৎপত্তি নিয়ে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর দেয়া বিভিন্ন তত্ত্বের মধ্যকার ফারাক দূর করার চেষ্টা করা হয়েছে, যার মধ্যে এক সময় বাতিল করা চীনের পরীক্ষাগারের দুর্ঘটনার তত্ত্বটিও রয়েছে। এই প্রতিবেদনের জবাবে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক ফু কং বলেন, চীনকে বলির পাঁঠা বানানোর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ‘ধোয়া তুলসী পাতা’ হয়ে যাবে না।
সাকি সাংবাদিকদের বলেন, গোয়েন্দা সংস্থাগুলো জনসমক্ষে প্রকাশযোগ্য একটি সংস্করণ তৈরির জন্য কাজ করে যাচ্ছে, তবে কবে নাগাদ সেটা প্রকাশ করা হতে পারে সে বিষয়ে কোনো সময়সীমা তিনি জানাননি।
যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা বলছেন, তারা এই পর্যালোচনা প্রতিবেদন থেকে কোনো দৃঢ় উপসংহারে পৌঁছানোর আশা করছেন না, যেহেতু চীন এর আগের মাঠপর্যায় থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যউপাত্ত সংগ্রহের আন্তর্জাতিক উদ্যোগকে কোণঠাসা করে ফেলেছিল।
চীন বলে আসছে পরীক্ষাগারের দুর্ঘটনা থেকে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা খুবই ক্ষীণ এবং উহানের কোনো একটি পরীক্ষাগার থেকে ভাইরাসটি ছড়িয়েছে এমন তত্ত্ব হাস্যকর। বরং বেইজিং এখন দাবি করছে ২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ডে মার্কিন সেনাদের ফোর্ট ডেটরিক ঘাঁটির একটি পরীক্ষাগার থেকে ভাইরাসটি অবমুক্ত হয়েছে।
ফু কং বলেন, এটা তখনই যৌক্তিক হবে যদি যুক্তরাষ্ট্র এমনটি দাবি করে, এটা একটি সমর্থনযোগ্য অনুমান (উহান পরীক্ষাগার দুর্ঘটনা) তাহলে, তাদের ক্ষেত্রেও একই ধরনের পদক্ষেপ নেয়া উচিত এবং তাদের পরীক্ষাগারেও তদন্তকারীদের আমন্ত্রণ জানানো উচিত।
চীন কোনো ধরনের বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার চালানোর কাজে জড়াতে চায় না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের পরীক্ষাগার থেকে ভাইরাস ছাড়ানোর এই ক্ষীণ ধারণাটি একবার কিছু চীনা কর্মকর্তার বক্তব্য উঠে এসেছিল, যার কোনো বাস্তব প্রমাণ নেই। এটিই এখন চীন সরকারের একটি বক্তব্য হিসেবে দাঁড়িয়েছে। করোনা ভাইরাসের উৎপত্তিস্থল হিসেবে চীনের সম্ভাব্য ভূমিকার সমালোচনার পাল্টা জবাব দিতেই এই অবস্থান নিয়েছে বেইজিং। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘে চীনের দূত যুক্তরাষ্ট্রের পরীক্ষাগারগুলোতে তদন্ত পরিচালনার জন্য ডব্লিউএইচওর প্রতি আহ্বান জানায়।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।