আলি হায়দার, কুলিয়ারচর (কিশোরগঞ্জ) থেকে : কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে মাত্র ২ মিনিটের ঝড়ে পাল্টে গেছে দুটি গ্রামের চেহারা। মাঝ রাতে আচমকা ঝড়ে উড়ে গেছে গ্রামের অসংখ্য ঘর, হাঁস-মুরগির খামারের টিনের চাল এবং বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে গিয়ে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে কয়েক গ্রাম।
গত মঙ্গলবার রাত ১টার দিকে কুলিয়ারচর উপজেলার সালুয়া ও রামদী ইউনিয়নের সীমন্তবর্তী মাছিমপুর ও মনোহরপুর গ্রামের কিছু অংশের ওপর দিয়ে এ ঝড় বয়ে যায়।
সরজমিন গিয়ে গিয়ে দেখা যায়, বিশাল আকৃতির শতাধিক গাছগাছালি ও বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে ঘরবাড়ি এবং রাস্তাঘাটের উপর পড়ে আছে। আচমকা এই ঝড়ে অনেকের ঘরের টিনের চাল উড়ে যাওয়ায় ঝড়ের পরবর্তী সময়ে সারা রাত বৃষ্টিতে ভিজে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা।
মাছিমপুর গ্রামের মোছা. সুচি ভুঁইয়া (৩২) জানান, ঘুমের মধ্যে রাত ১টার দিকে হঠাৎ কয়েক সেকেন্ডের একটি ঝড় এসে আমাদের ঘরে বিকট শব্দে হানা দেয়। এ সময় বিশাল একটি গাছ আমার ঘরের উপর পড়লে ঘর ভেঙে আমার ও আমার মেয়ের উপর পড়ে। এ সময় আমরা বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করতে থাকি কিন্তু ঝড়ের শব্দে কেউ আমাদের ডাক শোনেননি। তখন মনে হয়েছিল এটাই বোধহয় আমার শেষ রাত। একপর্যায়ে পাশের বাড়ির মানুষজন এসে ঘরের দরজা কেটে আমার মেয়ে ও আমাকে ঘর থেকে উদ্ধার করেন। এই ঝড় আমার ঘরে থাকা ফ্রিজ, আলমারি, সৌর বিদ্যুৎসহ এককথায় আমার সারা জীবনের সম্বল ধ্বংস করে দিয়েছে।
মনোহরপুর গ্রামের জসিম খান (৫০) বলেন, গত রাতের আচমকা ঝড়ে আমার দুটি গরুর ঘর ও বসতঘরের টিনের চালা উড়ে গেছে এবং অসংখ্য গাছগাছালি উপড়ে গেছে। আমার চাচাতো ভাইয়ের একটি টিনের ঘর পুরো বিলীন হয়ে গেছে। হঠৎ করে এমন ভয়াবহ ঝড় আমার জীবনে আমি দেখিনি। এ বিষয়ে সালুয়া ইউনিয়ন পরিষদের

চেয়ারম্যান শাহ মাহবুবুর রহমান বলেন, ঝড়ের খবর পেয়ে সকালে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি। তবে ঠিক কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে এ বিষয়টি এখনো নির্ধারণ করা যায়নি। তবে বিষয়টি আমি উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসারকে অবগত করেছি। তারাও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করবেন বলে জানান। যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের প্রত্যেককে ক্ষতির পরিমাণ উল্লেখ করে ইউনিয়ন পরিষদ বরাবর আবেদন করতে বলেছি।
এ বিষয়ে রামদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলাল উদ্দিনকে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
ক্যাপশন : দুই মিনিটের ঝড়ে মঙ্গলবার রাতে বিধ্বস্ত কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলার মাছিমপুর গ্রামের একটি বসতবাড়ি- ভোরের কাগজ