ওবায়দুল কাদের : ২১ আগস্ট মামলার আপিল শুনানি শুরু শিগগিরই

আগের সংবাদ

মহামারিতে মেগা প্রকল্পে স্থবিরতা

পরের সংবাদ

অপহরণ ও মুক্তিপণ দাবি : সিআইডির এক এএসপিসহ ৪ জন কারাগারে

প্রকাশিত: আগস্ট ২৬, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ২৬, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

দিনাজপুর ও চিরিরবন্দর প্রতিনিধি : দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার নান্দেরাই গ্রাম থেকে মা ও ছেলেকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবির অভিযোগে করা মামলায় সিআইডির এএসপিসহ ৪ জনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গতকাল বুধবার দিনাজপুরের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (চিরিরবন্দর-৪) আদালতের বিচারক শিশির কুমার বসু এ আদেশ দেন। এছাড়া অপহরণের শিকার জহুরা বেগম ও তার ছেলে জাহাঙ্গীর আলমের বক্তব্য লিপিবদ্ধ করে তাদের ছেড়ে দেয়ার আদেশ দেন বিচারক।
কারাগারে পাঠানো চারজন হলেন- রংপুর সিআইডির এএসপি মো. সারোয়ার কবির, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মো. হাসিনুর রহমান, কনস্টেবল আহসানুল হক ও গাড়িচালক হাবিব মিয়া। দিনাজপুর কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক মো. মনিরুজ্জামান চারজনকে কারাগারে পাঠানোর খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আদালতের আদেশ পাওয়া মাত্র ওই চারজনকে দিনাজপুর জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
জানা গেছে, চলতি মাসের প্রথম দিকে দিনাজপুর সদর উপজেলার বাসিন্দা ফসিহ উল আলম পলাশ সিআইডি রংপুর কার্যালয়ে চিরিরবন্দর উপজেলার লুৎফর রহমানের বিরুদ্ধে ৫০ লাখ টাকা প্রতারণার একটি অভিযোগ করেন। ২৩ আগস্ট রাত সাড়ে ৯টায় সিআইডির এএসপি সারোয়ার কবির এএসআই হাসিনুর ও কনস্টেবল আহসানকে নিয়ে লুৎফর রহমানের বাড়িতে অভিযান চালান। বাড়িতে লুৎফরকে না পেয়ে তার স্ত্রী জহুরা ও ছেলে জাহাঙ্গীরকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যান তারা। পরে মা ও ছেলের মুক্তির জন্য লুৎফর রহমানের পরিবারের কাছে মুক্তিপণ হিসেবে ১৫ লাখ টাকা দাবি করেন। পরে ভুক্তভোগী পরিবারকে সাড়ে আট লাখ টাকা নিয়ে আসতে বলেন তারা। একপর্যায়ে ভুক্তভোগী পরিবার বিষয়টি দিনাজপুর জেলা পুলিশকে অবগত করে।
জেলা পুলিশের পরামর্শে মঙ্গলবার (২৪ আগস্ট) বিকালে ভুক্তভোগী পরিবার প্রথমে চিরিরবন্দর উপজেলার রানীরবন্দরে, পরে কাহারোল উপজেলার দশমাইলে অভিযুক্ত সিআইডি কর্মকর্তাদের আসতে বলেন। পরবর্তীতে ভুক্তভোগী পরিবারের লোকজন দিনাজপুর সদর উপজেলার বাঁশেরহাটে আসতে বলেন তাদের। সিআইডি কর্মকর্তারা বাঁশেরহাটে এলে জেলা পুলিশ ও সিআইডি একটি দল তাদের আটক করে প্রথমে চিরিরবন্দর থানায় এবং পরে দিনাজপুর পুলিশ সুপার কার্যালয়ে নিয়ে যায়।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে রংপুর জোনের সিআইডির ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আতাউর রহমান বলেন, আটক তিনজনের মধ্যে একজন এএসপি, একজন এএসআই এবং একজন কনস্টেবল রয়েছেন। তাদের মধ্যে এএসআই ও কনস্টেবল ২১ আগস্ট থেকে ১০ দিনের ছুটিতে ছিলেন। তিনি আরো বলেন, সরকারি গাড়ি ব্যবহার না করে আমার অনুমতি ছাড়া ভাড়া করা একটি গাড়ি নিয়ে অপারেশনে যান তারা। আটক হওয়ার পর আমাকে জানানো হয়েছে। তারা যে আমাদের স্টাফ তা আমি জানিয়েছি। এর বাইরে কিছু জানি না।
দিনাজপুর সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমন কুমার সরকার জানান, রংপুর বিভাগীয় পুলিশের রেঞ্জ ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্যের নির্দেশে মঙ্গলবার রাতেই ৫ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে আটককৃত ৩ পুলিশ সদস্যকে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এরপর গতকাল বুধবার বেলা ১১টায় অপহৃত গৃহবধূ জহুরা বেগমের দেবর খলিলুর রহমান বাদী হয়ে চিরিরবন্দর থানায় একটি অপহরণ মামলা করেন। সেই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে বিকালে দিনাজপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল আদালতে সোপর্দ করলে বিচারক তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এছাড়া মামলার অন্যতম আসামি ফসিউল আলম পলাশের ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করেছেন আদালত। তবে গতকাল রাত ৮টা পর্যন্ত পলাশের বিষয়ে আদালতের কোনো সিদ্ধান্ত জানা যায়নি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়