১৩ দিনেও খোঁজ মেলেনি স্কুলছাত্র আব্দুর রহিমের

আগের সংবাদ

প্রত্যাবাসনে বাধা চীন-রাশিয়া! বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে আন্তর্জাতিক মহলও নিষ্ক্রিয়

পরের সংবাদ

যুবদল নেতার টর্চার সেলে স্বামী-স্ত্রীকে নির্যাতন

প্রকাশিত: আগস্ট ২৪, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ২৪, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

গৌতম কুমার মহন্ত, মহাদেবপুর (নওগাঁ) থেকে : নওগাঁর মহাদেবপুরে যুবদলের টর্চার সেলে এক সংখ্যালঘু নার্সারি ব্যবসায়ী ও তার স্ত্রীকে আটকে রেখে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনসহ মাথার চুল কেটে নেয়ার ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার ৮ দিন পর মামলা নিয়েছে থানা পুলিশ। মামলায় নির্যাতনকারী দুই নারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
জেলার পতœীতলা উপজেলার উত্তর মাহমুদপুর গ্রামের কৃষ্ণ চৌধুরীর ছেলে নার্সারি ব্যবসায়ী নির্যাতিত মিঠুন চন্দ্র চৌধুরী (২৮) ও তার স্ত্রী শ্যামলী রানী চৌধুরী (২৩) জানান, মহাদেবপুর উপজেলা শহরের দক্ষিণ হোসেনপুর গ্রামের বোয়ালমারী মোড়ের কারিমা চাউলকল মালিক মৃত আবুল কালামের ছেলে ও উপজেলা যুবদল নেতা মো. রুহুল আমীন বেশ কিছু দিন ধরে তাদের নার্সারি থেকে বিভিন্ন জাতের চারা গাছ কিনে আসছে। গত ১৫ আগস্ট সকালে নার্সারিতে গিয়ে রুহুল আমীন, মিঠুন চন্দ্র চৌধুরীকে জোর করে একটি প্রাইভেট গাড়িতে তুলে নিয়ে তার মহাদেবপুরের বয়লার গুদাম ঘরে আটকে রাখে। এখানে অবস্থিত রুহুল আমীনের টর্চার সেলে মিঠুনকে আটকে রেখে মোবাইল ফোনে তার স্ত্রীর কাছে ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। টাকা জোগার করতে মিঠুনের স্ত্রী শ্যামলী রানী একটি সোনার মালা বন্ধক রেখে ১০ হাজার টাকা তার কাছে বিকাশে পাঠান। টাকা পাঠাতে দেরি হওয়ায় রুহুল আমীন ও তার সহযোগীরা চাঁদার টাকার পরিমাণ বাড়িয়ে দিয়ে তা বিকাশে পাঠাতে বলে শ্যামলীকে। শ্যামলী চাহিদার অতিরিক্ত টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে রুহুল আমীন এবং তার দুই স্ত্রী রুবাইয়া ইসলাম বৃষ্টি ও মুক্তা পারভীন গং মধ্যযুগীয় কায়দায় তাদের টর্চার সেলে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে মিঠুন চৌধুরীর পায়ের রগ কাটাসহ প্লাস দিয়ে হাতের আঙুলের চারা তুলে নেয়। এ সময় হাতুড়ি দিয়ে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতও করা হয়।
বর্বরতম এ নির্যাতনের ঘটনার তিন দিন পরে ১৭ আগস্ট মিঠুনের স্ত্রী শ্যামলী চৌধুরী মহাদেবপুর থানার এসআই সাইফুল ইসলামকে ঘটনাটি অবহিত করে রুহুল আমীনের বয়লারে যান। এ সময় রুহুল আমীনের বয়লারে শ্যামলী রানী গেলে তাকেও শারীরিক নির্যাতন করাসহ মাথার চুল কেটে দেয় রুহুল আমীন ও তার দুই স্ত্রী। নির্যাতনের পর তার কাছে থাকা টাকা হাতিয়ে নেয়াসহ স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেয় রুহুল আমীন গং।
তাৎক্ষণিক খবর পেয়ে মহাদেবপুর থানার এসআই সাইফুল ইসলাম যুবদল নেতার টর্চার সেল থেকে গুরুতর আহত অবস্থায় মিঠুন চৌধুরী ও তার স্ত্রী শ্যামলীকে উদ্ধার করে এবং তাদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দিয়ে মিঠুন ও তার স্ত্রী শ্যামলীকে পতœীতলায় তাদের

বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। গুরুতর আহত মিঠুন ও তার স্ত্রী শ্যামলীকে পতœীতলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় গত ২২ আগস্ট রাতে নির্যাতিতা শ্যামলী বাদী হয়ে রুহুল আমীন ও তার দুই স্ত্রী রুবাইয়া ও মুক্তা পারভীনসহ চারজনের বিরুদ্ধে মহাদেবপুর থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলা দায়েরের পর রাতে থানার তদন্ত ওসি আবুল কালাম আজাদের নেতৃত্বে একদল পুলিশ যুবদল নেতা রুহুল আমীনের বাড়িতে অভিযান চালায়। অভিযানে তার দুই স্ত্রী রুবাইয়া ও মুক্তাকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় বাড়ি থেকে রুহুলের ব্যবহৃত প্রাইভেট কারটি জব্দ করে পুলিশ। ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে থানার ওসি আজম উদ্দিন মাহমুদ জানান, গ্রেপ্তারকৃত দুই নারীকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়