মানুষের কল্যাণ করার জন্যই আল্লাহ বাঁচিয়ে রেখেছেন : সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনা

আগের সংবাদ

প্রশাসনের উচ্চপর্যায়ে বিভাজন! মাঠ প্রশাসনকে কেন্দ্রের বিশেষ নির্দেশনা : জানালেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব

পরের সংবাদ

পরিচ্ছন্ন নগর গড়াই মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য : হাজী এমদাদুল ইসলাম তুহিন মেয়র, লালমোহন পৌরসভা

প্রকাশিত: আগস্ট ২৩, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ২৩, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মো. আমজাদ হোসেন, লালমোহন (ভোলা) থেকে : জলাবদ্ধতা নিরসনের মধ্য দিয়ে লালমোহন পৌরসভাকে নতুন আঙ্গিকে একটি পরিচ্ছন্ন নগর গড়াই আমার মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বলেছেন ভোলার লালমোহন পৌরসভার দুবারের সফল নির্বাচিত মেয়র হাজী এমদাদুল ইসলাম তুহিন।
ভোলা-৩ আসনের সাবেক সাংসদ ও বাণিজ্যমন্ত্রী আলহাজ মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমেদের একান্ত প্রচেষ্টায় ১৯৯০ সালের ৯ ডিসেম্বর লালমোহন পৌরসভা প্রতিষ্ঠিত হয়। পরে পর্যায়ক্রমে ‘গ’, ‘খ’ ও সর্বশেষ ‘ক’ শ্রেণিতে উন্নীত করা হয়। পৌরভবনের উন্নয়ন হলেও সে সময় উন্নয়ন হয়নি লালমোহন পৌরবাসীর। জোট সরকার আমলে উন্নয়ন হলেও উন্নয়ন হয়েছে তখনকার আমলের নেতাকর্মীদের বা তখনকার পৌর মেয়র বিএনপির সভাপতি মরহুম এনায়েত করিরের। দীর্ঘদিন মেয়র থাকা সত্ত্বেও পৌর নাগরিকদের কোনো উন্নয়নমূলক কাজ করতে পারেননি। ১১.৮৬ বর্গকিলোমিটারের এলাকাজুড়ে অবস্থিত এই পৌরসভাটি। ১২টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত লালমোহন এই পৌরসভা। একজন মেয়র ১২ জন পুরুষ কাউন্সিলর ও ৪ জন মহিলা কাউন্সিলরের সমন্বয়ে প্রায় ৪০ হাজার পৌরবাসীর নাগরিকসেবা পৌঁছে দিচ্ছে পৌর কর্তৃপক্ষ। বর্তমান মেয়র ২০১১ সালে নৌকা প্রতীকে মনোনীত হয়ে সাবেক পৌর মেয়র বিএনপির সভাপতি মরহুম এনায়েত করিবকে বিপুল ভোটে পরাজিত করে নগর পিতার আসন অলঙ্কৃত করেন। ভোরের কাগজের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে পৌর মেয়র হাজী এমদাদুল ইসলাম তুহিন বলেন, আমি প্রথমে ধন্যবাদ জানাই রাষ্ট্রের সফল প্রধানমন্ত্রী আমার প্রিয় নেত্রী প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে। তারপর ধন্যবাদ জানাই আমার অভিভাবক লালমোহন-তজুমদ্দিন আসনের জনপ্রিয় সংসদ

সদস্য আলহাজ নূরুন্নবী চৌধুরী শাওনকে। তার প্রচেষ্টায় এবং সমর্থনে নৌকার প্রতীক মনোনয়ন পেয়ে মেয়র নির্বাচিত হয়ে পৌরবাসীর সেবা করতে পেরেছি। আমি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাই লালমোহন পৌরসভার সব নাগরিকে। পৌরসভার বিভিন্ন এলাকার জলাবদ্ধতাকে প্রধান সমস্যা বিবেচনা করে মেয়র হাজী এমদাদুল ইসলাম তুহিন বলেন, পৌরসভার মধ্যে ছোট ছোট সব খাল, জলাশয় ও ডোবা নালাগুলো ড্রেন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে পুরনো কয়েকটি খাল পরিষ্কার করা হচ্ছে। ২০১১ সালে প্রথম মেয়র নির্বাচিত হয়ে ধীরগতিতে এগিয়ে আসছি লালমোহন পৌরসভার উন্নয়নের দিকে। বর্তমানে স্থানীয় সাংসদ আলহাজ নূরুন্নবী চৌধুরী শাওনের নির্দেশে পৌর নগর উন্নয়নের মাস্টার প্ল্যান তৈরি করে পৌর শহরের উন্নয়নের কাজ পুরোদমে অগ্রসর হচ্ছে। প্রথম টার্মে প্রায় ২০০ কোটি টাকার উন্নয়নমূলক কাজ ও রাস্তাঘাট সংস্কার করি। এর মধ্যে ৪১.৩০ কিলোমিটার পাকা রাস্তা, ১২.৫০ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা, ১৫.২০ কিলোমিটার পাকা ড্রেন, ৩১.৫০ কিলোমিটার কাঁচা-পাকা রাস্তা সংস্কার করি।
পৌর মেয়র হাজী এমদাদুল ইসলাম তুহিন আরো বলেন, পৌরসভার সড়কগুলো সোজা না থাকায় যানজট প্রকট আকার ধারণ করেছে। তাই সড়কগুলো প্রশস্ত করার পরিকল্পনা করেছি। পৌর শহরের প্রধান সড়ক ২ পাশে ২-৩ ফুট প্রশস্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে। নিরাপদ শহর হিসেবে গড়ে তুলতে পুরো লালমোহন পৌর শহরকে সিসি টিভির আওতায় আনার পরিকল্পনা রয়েছে। জেলা প্রশাসন ও স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে।
তিনি আরো জানান, পৌরসভার ৪০ হাজার ভোটার রয়েছেন। পৌর শহরে প্রায় ৮০ হাজার লোক বসবাস করছেন। দুস্থ ও অসহায়দের জন্য আলাদা কোনো প্রকল্প নেই। থোক বরাদ্দ থেকে প্রতি বছর দুস্থ ও অসহায়দের আর্থিক সহায়তা দেয়া হয়। পৌর মেয়র তুহিন বলেন, স্থানীয় সাংসদ আলহাজ নূরুন্নবী চৌধুরী শাওনের সহযোগিতায় সামনের দিকে এগিয়ে আসছে। তার সব সহযোগিতার ধারা অব্যাহত থাকলে লালমোহন পৌর শহরকে যানজট, জলাবদ্ধতা, মাদক ও সন্ত্রাসমুক্ত একটি আধুনিক মডেল পৌরসভা হিসেবে গড়ে তুলতে সক্ষম হব। লালমোহন পৌরসভাকে মডেল ও পর্যটন এলাকা উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আমরা ২০২১-২২ অর্থবছরে ১০৮ কোটি ২০ লাখ ৩৫ হাজার ৮০৯ টাকার বাজেট ঘোষণা করেছি। রাজস্ব আয় উন্নয়ন আয় ব্যয় পৌরসভার নাগরিকদের উন্নয়ন পরিকল্পনায় প্রস্তাবনা রয়েছে। পৌর মেয়র আরো বলেন, পৌরসভার প্রত্যেকটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কে বিদ্যুৎ, সৌরবিদ্যুৎচালিত ৮৬০টি ল্যাম্পপোস্ট রয়েছে এবং আগামী নির্বাচনের আগে লালমোহন পৌরসভাকে একটি পর্যটন এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা হবে। বর্তমানে নাগরিকদের বিনোদনের জন্য সজীব ওয়াজেদ জয় ডিজিটাল পার্কে পর্যটক আকর্ষণে অবকাঠামো উন্নয়নের পরিকল্পনা রয়েছে। মেয়র আরো বলেন, আগামী ৫ বছরের মধ্যে পৌরসভার জলাবদ্ধতা দূর করতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন নগর গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রত্যেক ওয়ার্ডে ড্রেনেজ ব্যবস্থা চালুসহ বাজারের যানজট নিরসন করা হবে। এছাড়া স্থানীয় নাগরিক কমিটির সমন্বয়ে বিভিন্ন পরিকল্পনা একাধিক প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
পৌরসভার বয়স্ক ভাতা, বিধবা ও প্রতিবন্ধীদের জন্য যোগ্যতার ভিত্তিতে ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের মাধ্যমে ভাতা কার্ড প্রদান করা হয়। পৌর শহরে ৪৫ ভাগ গরিব-অসহায় হতদরিদ্রদের ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের নিজস্ব তহবিল ও পৌরসভার রাজস্ব আয় থেকে সহযোগিতা করা হয়। অসহায়-গরিব মুমূর্ষু রোগীদের পৌরসভার নিজস্ব তহবিল থেকে আর্থিক সহযোগিতা করে থাকি। মেয়র হাজী এমদাদুল ইসলাম তুহিন আরো বলেন, পৌরসভার প্রত্যেকটি নাগরিককে সেবা প্রদান করা আমার নির্বাচনী অঙ্গীকার। পরিশেষে ভোরের কাগজকে ধন্যবাদ জানান মেয়র।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়