মানুষের কল্যাণ করার জন্যই আল্লাহ বাঁচিয়ে রেখেছেন : সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনা

আগের সংবাদ

প্রশাসনের উচ্চপর্যায়ে বিভাজন! মাঠ প্রশাসনকে কেন্দ্রের বিশেষ নির্দেশনা : জানালেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব

পরের সংবাদ

খেলাপি ঋণের জের : ব্যাংক খাতে সঞ্চিতি ঘাটতি সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা

প্রকাশিত: আগস্ট ২৩, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ২৩, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : ব্যাংক খাতে খেলাপির সঙ্গে বেড়েছে প্রভিশন ঘাটতিও। চলতি বছরের জুন শেষে অঙ্কটি দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৫৮৩ কোটি টাকায়। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, খেলাপি বাড়ায় প্রভিশন (নিরাপত্তা সঞ্চিতি) ঘাটতি বাড়ছে। যারা প্রয়োজনীয় প্রভিশন সংরক্ষণে ব্যর্থ হয়, তাদের আবার মূলধন ঘাটতিতে পড়ার আশঙ্কা থাকে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা যায়, চলতি বছরের জুন পর্যন্ত ব্যাংক খাতে প্রভিশন সংরক্ষণের প্রয়োজন ছিল ৬৯ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকা। এর বিপরীতে সংরক্ষণ করা হয় ৬৪ হাজার ১১৫ কোটি ৪০ লাখ টাকা। ফলে নিরাপত্তা সঞ্চিতির ঘাটতি দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫ হাজার ৫৮৩ কোটি ৪০ লাখ টাকা। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, করোনার কারণে ব্যবসাবাণিজ্য মন্দা। ব্যবসায়ীরা ঋণ পরিশোধ করতে পারছেন না। আবার অনেকে ইচ্ছা করে ঋণের কিস্তি দিচ্ছেন না। ঋণের ঝুঁকি কমাতে হলে আদায় বাড়াতে হবে। বিশেষ করে সরকারি ব্যাংকগুলোর বিষয়ে নজর দিতে হবে। সুশাসন, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। এখন ব্যাংক খাতের উদ্বৃত্ত যে তারল্য আছে, তা সঠিক জায়গায় বিনিয়োগ করতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী, সরকারি, বেসরকারি, বিদেশিসহ সব ধরনের ব্যাংক যেসব ঋণ বিতরণ করে, সেসব গুণমান বিবেচনায় নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ প্রভিশন হিসেবে জমা রাখতে হয়। কোনো ঋণ শেষ পর্যন্ত মন্দমানে পরিণত হলে তাতে যেন ব্যাংক ও গ্রাহক আর্থিকভাবে ঝুঁকিতে না পড়ে, সেজন্য এ নিরাপত্তা সঞ্চিতি বা প্রভিশন সংরক্ষণের বিধান রাখা হয়েছে। জানা গেছে, ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের যে পরিমাণ ঋণ বিতরণ করে, তার বেশির ভাগই আমানতকারীদের অর্থ। আমানতকারীদের অর্থ যেন কোনো প্রকার ঝুঁকির মুখে না পড়ে, সেজন্য বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে নানা বিধিনিষেধ আরোপ করা আছে। নিয়ম অনুযায়ী, ব্যাংকের অশ্রেণিকৃত বা নিয়মিত ঋণের বিপরীতে দশমিক ৫০ থেকে ৫ শতাংশ হারে প্রভিশন রাখতে হয়। এর মধ্যে ক্ষুদ্র ও মাঝারি ঋণের (এসএমই) বিপরীতে সবচেয়ে কম দশমিক ২৫ শতাংশ আর ক্রেডিট কার্ডে রাখতে হয় সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ নিরাপত্তা সঞ্চিতি। ব্যাংকের আয় খাত থেকে অর্থ এনে প্রভিশনিং করা হয়। খেলাপি ঋণ বাড়লে আর সে অনুযায়ী ব্যাংকের আয় না হলে এতে ঘাটতি দেখা দেয়। ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী, প্রভিশন ঘাটতি থাকলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক শেয়ারহোল্ডাদের জন্য কোনো লভ্যাংশ ঘোষণা করতে পারে না।
এদিকে মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে বিশেষ সুযোগ নিয়ে বছরজুড়ে কিস্তি না দিয়েও যেসব ঋণ খেলাপি হওয়ার হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে, ওই সব ঋণের বিপরীতে এখন অতিরিক্ত ১ শতাংশ প্রভিশন সংরক্ষণ করতে ডিসেম্বরে একটি নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ‘স্পেশাল জেনারেল প্রভিশন কোভিড-১৯’ নামের এ প্রভিশনে স্বাভাবিকভাবে বিভিন্ন ধরনের ঋণের বিপরীতে দশমিক ২৫ থেকে ৫ শতাংশ পর্যন্ত প্রভিশন রাখতে হয়। এখন তার সঙ্গে আরো

১ শতাংশ অতিরিক্ত রাখতে বলা হয়েছে। চলতি বছরের জুন শেষে ব্যাংকিং খাতের মোট ঋণ স্থিতি দাঁড়িয়েছে ১২ লাখ ১৩ হাজার ১৬৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপিতে পরিণত হয়েছে ৯৯ হাজার ২০৫ কোটি টাকা। তিন মাস আগে গত মার্চে মোট বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ছিল ১১ লাখ ৭৭ হাজার ৬৫৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ছিল ৯৫ হাজার ৮৫ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৮ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ।
 

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়