মানুষের কল্যাণ করার জন্যই আল্লাহ বাঁচিয়ে রেখেছেন : সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনা

আগের সংবাদ

প্রশাসনের উচ্চপর্যায়ে বিভাজন! মাঠ প্রশাসনকে কেন্দ্রের বিশেষ নির্দেশনা : জানালেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব

পরের সংবাদ

উজানের ঢলে তিস্তার ভাঙন অব্যাহত : গঙ্গাচড়ায় পানিবন্দি আট হাজার পরিবারের দুর্ভোগ

প্রকাশিত: আগস্ট ২৩, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ২৩, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মজিদ কাজল, গঙ্গাচড়া (রংপুর) থেকে : ভারত থেকে নেমে আসা উজানের ঢলে তিস্তা নদীর ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। তবে পানি কিছুটা কমে গত দুইদিন ধরে বিপদসীমার কাছাকাছি প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে তিস্তার তীরবর্তী বিশাল এলাকা এখনো জলমগ্ন রয়েছে। এতে উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে প্রায় ৮ হাজার পরিবার পানিবন্দি রয়েছে। গত ২ দিনের ভাঙনে বিলীন হয়েছে আরো ১০৮ পরিবারের বাড়িঘর। চলতি মৌসুমে মোট বিলীন হয়েছে প্রায় ২০০ পরিবারের বাড়িঘর। তলিয়ে গেছে আমন ক্ষেত, মরিচ, বেগুন, মাছের প্রজেক্টসহ, বিভিন্ন সবজি ও ফসলের ক্ষেত। পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে তিস্তার পানি ডালিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গতকাল রবিবার ও শনিবার এখানে পানির উচ্চতা ছিল ৫২.৫৫ মি., যা শুক্রবার একই সময়ে ছিল ৫২.৮০ মি.।
সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান সূত্র জানায়, বন্যার পানি কিছুটা কমায় উপজেলার নোহালী ইউনিয়নের চর নোহালী ও বাগডহরা গ্রামে এখনো ১ হাজার পরিবার; আলমবিদিতর ইউনিয়নের পাইকান হাজাীপাড়া ও ব্যাঙপাড়া এলাকায় প্রায় ৩০০ পরিবার; কোলকোন্দ ইউনিয়নের মটুকপুর, উত্তর চিলাখাল, মধ্য চিলাখাল, বিনবিনা, খলাইর চর, শখের বাজার, আবুলিয়া, সাউদপাড়া ও আলেকিশামত গ্রামে প্রায় ২ হাজার পরিবার; ল²ীটারি ইউনিয়নের বাগেরহাট আশ্রয়ণ প্রকল্প, চব্বিশসাল, পূর্ব ইচলি, পশ্চিম ইচলি ও জয়রামওঝা গ্রামের ২ হাজার ৫০০ পরিবার; গজঘণ্টা ইউনিয়নের চর ছালাপাক মহিষাশুর, কালিরচর ও রমাকান্ত গ্রামে প্রায় ৫০০ পরিবার এবং মর্নেয়া ইউনিয়নের আলালের চর, নীলারপাড়, তালপট্টির চর, হাজীরপাড়া নরসিংহ, চর মর্নেয়া দেড় হাজার পরিবার পানিবন্দি রয়েছে।
রংপুরের জেলা প্রশাসক আসিব আহসান শনিবার উপজেলার ল²ীটারি ইউনিয়নের পানিবন্দি ও ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে তিনি ইউনিয়নের বাগেরহাট এলাকায় নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত ১৫০ পরিবারের মাঝে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার (খাদ্যসামগ্রী) বিতরণ করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন- উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাসলীমা বেগম, রংপুর পাউবোর এসডি-৩ তবিবুর রহমান, ল²ীটারি ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল্লা আল হাদী, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মুনিমুল হকসহ অনেকে।
এ সময় জেলা প্রশাসক আসিব আহসান বলেন, পানিবন্দি ও নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে খাদ্য সহায়তা অব্যাহত থাকবে। তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের বিষয়টিও প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে তিস্তা পাড়ে অর্থনৈতিক বিপ্লব ঘটবে। চেয়ারম্যান আব্দুল্লা আল হাদী জানান, ইউনিয়নের বাগেরহাট আশ্রয়ণ প্রকল্প, চব্বিশসাল, পূর্ব ইচলি, পশ্চিম ইচলি ও জয়রামওঝা গ্রামে বন্যার কিছুটা উন্নতি হলেও এখনো আড়াই হাজার পরিবার পানিবন্দি রয়েছে। এছাড়া গত ৩ দিনে পশ্চিম ইচলি কেল্লারপাড় গ্রামের তিস্তার প্রবল ভাঙনে ১০৮ পরিবারের বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। চলতি মৌসুমে এখানে আরো ২০ পরিবারের বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ফলে কেল্লারপাড় গ্রামটি মানচিত্র থেকে পুরোপুরি মুছে গেছে।
কেল্লারপাড় গ্রামের নদীভাঙনের শিকার মজিবর রহমান (৭০) এলাকাবাসীর পক্ষে জেলা প্রশাসককে জানান, তিস্তার বন্যা ও ভাঙনে আমাদের শ্রম প্রতিবারই ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। ফলে দারিদ্র্য আমাদের চিরসঙ্গী হয়ে রয়েছে। এর থেকে রেহাই পেতে তিনি তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন অগ্রগামী করার দাবি জানান।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়