অভিনন্দন জানাল প্রজ্ঞা : রাষ্ট্রপতির শিল্প উন্নয়ন পুরস্কারের অযোগ্য তামাক কোম্পানি

আগের সংবাদ

স্বাস্থ্যবিধি গায়েব, তদারকি নেই : গণপরিবহন, দোকান, কাঁচাবাজার, বিনোদন কেন্দ্রে চলাচল স্বাভাবিক

পরের সংবাদ

গ্রেপ্তার আতঙ্কে আ.লীগ নেতাকর্মীরা : বরিশালে পালিত হয়নি গ্রেনেড হামলা দিবস

প্রকাশিত: আগস্ট ২২, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ২২, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

এম কে রানা, বরিশাল থেকে : বরিশাল নগরীতে এ বছর গ্রেনেড হামলা দিবস পালিত হয়নি। গত ১৮ আগস্ট রাতে শোক দিবসের ব্যানার অপসারণ করা নিয়ে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় কয়েকশ নেতাকর্মীকে আসামি করা এবং গতকাল শনিবার দুপুর পর্যন্ত ২২ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার হওয়ায় বেশির ভাগ নেতাকর্মী আত্মগোপনে থাকায় দিবসটি পালিত হয়নি বলে জানা গেছে। অবশ্য এ ব্যাপারে বরিশাল জেলা ও মহানগর আ.লীগ নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। তবে বরিশালের অন্যান্য উপজেলায় দিবসটি পালিত হয়েছে। এদিকে বরিশাল নগরীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অবস্থান করায় শান্ত রয়েছে বরিশাল নগরী। ফলে এ মুহূর্তে বিজিবি নামানোর কোনো প্রয়োজন নেই বলে শুক্রবার গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার সাইফুল হাসান বাদল।
জানা গেছে, বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বাসায় হামলার ঘটনায় পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের মামলার আসামি ২১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও মহানগর আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ সাইয়েদ আহম্মেদ মান্নাকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক খন্দকার আল মঈন শনিবার সকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। শুক্রবার রাতে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের শিয়া মসজিদ এলাকায় বোনের বাসা থেকে প্রশাসনের লোক পরিচয়ে সাদা পোশাকধারীরা তাকে নিয়ে যায় বলে দাবি করেন তার পরিবারের সদস্যরা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছিলেন কাউন্সিলর মান্নার বড়বোন কানিজ ফাতেমা। তবে মান্নাকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি তাৎক্ষণিক জানাতে পারেননি বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি নুরুল ইসলাম। এদিকে একই মামলায় বরিশাল-পটুয়াখালী মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি মমিন উদ্দিন কালুকেও শুক্রবার রাতে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ নিয়ে হামলার ঘটনায় ২২ জনকে গ্রেপ্তার করল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বুধবার ঘটনার দিন ও পরের দিন ১৩ জনকে বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। শনিবার দুপুর পর্যন্ত অভিযানে আরো ৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ঘটনার দিনই আটক করা হয় মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান মাহমুদ বাবু, ত্রাণবিষয়ক সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন ফিরোজ ও ছাত্রলীগের সহসভাপতি অলিউল্লাহ

অলি, রুপাতলী শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার বাবুসহ কয়েকজনকে।
শনিবার দুপুর পর্যন্ত যে ৮ জনকে আটক করা হয়েছে তাদের নাম জানা না গেলেও আটককৃতদের মধ্যে মহানগর ছাত্রলীগ নেতা রঈজ আহম্মেদ মান্না রয়েছেন বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।
এদিকে সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর নামে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে শনিবার সকাল সাড়ে ১১টায় নগরীর অশ্বিনী কুমার হলের সামনে মানববন্ধন করেছেন সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা বেলায়েত বাবলুর পরিচালনায় মানবন্ধনে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ফয়সাল, পরিচ্ছন্ন বিভাগের পরিদর্শক মাসুমসহ করপোরেশনের কয়েকশ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন। মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করেন মেয়রের ওপর হামলা করে উল্টো ইউএনও তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছেন। এতে সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্ন কর্মীসহ সবাই গ্রেপ্তার আতঙ্কে ভুগছে জানিয়ে বক্তারা অনতিবিলম্বে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান। অপরদিকে গত শুক্রবার বেলা ৩টায় নগরীর সোহেল চত্বরে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বরিশাল জেলা ও মহানগর মহিলা আওয়ামী লীগ। সমাবেশে ইউএনও এর বাসায় হামলার ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেন বক্তারা।
অপরদিকে বুধবার রাতের ঘটনার পর থেকে নগরীর ময়লা-আবর্জনা অপসারণ বন্ধ করে দিয়েছেন সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নকর্মীরা। পাশাপাশি নগরীর সব টিকাদান কেন্দ্র থেকে চলে গেছেন স্বেচ্ছাসেবকরা। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন করোনা টিকা গ্রহীতারা এবং নগরবাসী। সরেজমিনে নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ডে ঘুরে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত বুধবার রাতের ঘটনার পর থেকেই পরিচ্ছন্ন কর্মীরা ময়লা অপসারণ করা বন্ধ করে দেয়। তারা জানান, সাধারণত রাত ৮টার পরপরই নগরীর ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করতে নামে সিটি করপোরেশনের কর্মীরা। তবে গত তিনদিন যাবৎ নগরীর প্রতিটি ওয়ার্ডে ময়লার স্তূপ হলেও তা পরিষ্কার করা হয়নি। নগরীর সদর উপজেলা সংলগ্ন বাসিন্দারা বলেন, বুধবার রাতে সিটি করপোরেশনের ময়লার গাড়ি থেকে সড়কে যে ময়লা ফেলা হয়েছে তা এখনো সরানো হয়নি। উপরন্তু পাড়া মহল্লায়ও ময়লা অপসারণ না করায় দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পরিচ্ছন্ন কর্মী জানান, ‘বুধবার রাতের ঘটনায় কয়েকশ’ লোকের নামে মামলা হয়েছে। শুনেছি তার মধ্যে আমাদেরও নাম আছে। এজন্য গ্রেপ্তার আতংকে রয়েছেন তারা। তাই আত্মগোপনে রয়েছেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা নগরবাসীর সেবায় কাজ করি। আমাদের নিরাপত্তা না পেলে কিভাবে কাজ করব”
এ বিষয়ে বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ ফারুক হোসেন ও প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা রবিউল ইসলামকে একাধিকবার ফোন দিয়েও তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়