মির্জা ফখরুল : জিয়ার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার মানুষ বিশ্বাস করে না

আগের সংবাদ

বিলুপ্তির পথে সোনাগাজীর ঐতিহ্য ‘পানের বরজ’

পরের সংবাদ

সরকারিভাবে টিকা উৎপাদনের আশার আলো

প্রকাশিত: আগস্ট ২০, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ২০, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মানুষের মধ্যে করোনা টিকা নেয়ার ব্যাপক আগ্রহ দেখা যাচ্ছে। সরকার কয়েকটি দেশ থেকে টিকা আনার জন্য চেষ্টা-প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। কিন্তু সংকট হলো, টিকা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো চাহিদা অনুযায়ী টিকা সরবরাহ করতে পারছে না। এ অবস্থায় দেশেই করোনার টিকা উৎপাদনের কথা বলা হচ্ছে। সম্প্রতি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিও দেশে সরকারিভাবে টিকা উৎপাদনের জোর সুপারিশ করেছে। ওষুধশিল্পে বাংলাদেশের অগ্রগতি অনেক। গত ৫০ বছরে স্বাস্থ্য খাতে গুরুত্বপূর্ণ অনেক সাফল্য আমরা দেখেছি। ইতোমধ্যে অনেক দেশ ও প্রতিষ্ঠান করোনা ভাইরাসের টিকা আবিষ্কারে গবেষণা করছে। বেশকিছু টিকা আবিষ্কার, উৎপাদন এবং প্রয়োগ করা হচ্ছে। কিন্তু আমরা টিকা আবিষ্কার তো দূরের কথা, করোনা টেস্ট কিট তৈরির গবেষণায়ও গুরুত্ব দিইনি। সময় এসেছে বাংলাদেশকেও আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর টিকা উৎপাদন ব্যবস্থায় যেতে হবে। টিকা উৎপাদনে সক্ষমতা অর্জন করতে হবে। সংসদীয় কমিটির সুপারিশ গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনায় আনতে হবে। টিকার মাধ্যমে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হলে অন্তত ১৩ কোটি লোককে টিকা দিতে হবে। দুই ডোজ হিসাব করলে মোট ২৬ কোটি ডোজ টিকা। চারটি ব্র্যান্ড মিলিয়ে এ পর্যন্ত দেশে এসেছে মাত্র ৩ কোটি ২০ লাখ ডোজ টিকা। এত সংখ্যক ডোজ টিকা সংগ্রহ বর্তমান প্রেক্ষাপটে বেশ কষ্টসাধ্য। এমন অবস্থায় দেশে টিকা উৎপাদনের কথা বারবার আলোচনায় আসছে। ইতোমধ্যে চীনের তৈরি টিকা বাংলাদেশে উৎপাদনের জন্য চীন সরকার, বাংলাদেশ সরকার ও ইনসেপ্টা ভ্যাকসিন লিমিটেডের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী টিকার কাঁচামাল জোগাবে চীনের সিনোফার্ম। বাংলাদেশে ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস এ টিকা বোতলজাত ও লেবেলিং করে সরকারকে সরবরাহ করবে। তবে চ্যালেঞ্জও রয়েছে। টিকা উৎপাদনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের মূলত দুটি বিষয়ে সীমাবদ্ধতা রয়েছে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে উচ্চমানসম্পন্ন প্রযুক্তি এবং টিকা তৈরির কাঁচামাল। প্রযুক্তিগতভাবে দেশ পিছিয়ে রয়েছে। কারণ প্রযুক্তির উন্নয়নের জন্য যে গবেষণা ও তহবিল দরকার তা আমাদের নেই। বিষয়গুলো বিবেচনায় নিতে হবে। সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় এখনই। ধনী রাষ্ট্রগুলো নিজেদের জনগণের জন্য টিকা নিশ্চিত করেছে। অন্যদিকে অনেক দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের দেশ টিকা পাচ্ছে না। বৈশ্বিকভাবে টিকা বণ্টন ঘিরে একটা বৈষম্যমূলক পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। সঠিক ব্যবস্থাপনায় টিকা বণ্টন নিশ্চিত করতে হবে। এ মুহূর্তে যেহেতু পৃথিবীর প্রতিটি মানুষ একটাই সমস্যার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, ফলে ভ্যাকসিনের সুষম বণ্টনের দিকে নজর রাখা জরুরি। কারণ করোনার ভ্যাকসিন প্রস্তুত, এর কার্যকারিতা এবং সুষ্ঠু বণ্টনের ওপর নির্ভর করছে করোনার ভবিষ্যৎ। পুরো পৃথিবীর মানুষ একটি টিকার জন্য অধীর আগ্রহে আছে। আমরাও এর বাইরে নই। আশার খবর, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় গোপালগঞ্জে এসেনশিয়াল ড্রাগসের কারখানার পাশে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন টিকা উৎপাদন কারখানা গড়ে তোলার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। এর আনুষঙ্গিক কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। অন্যদিকে চীনের সঙ্গে দ্রুত টিকা উৎপাদনে যেতে হবে। উৎপাদনে যেসব ঘাটতি রয়েছে তাও পূরণ করতে হবে। সর্বোপরি আমাদের টিকা উৎপাদনে সক্ষমতা অর্জন করতে হবে। এর বিকল্প নেই।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়