মির্জা ফখরুল : জিয়ার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার মানুষ বিশ্বাস করে না

আগের সংবাদ

বিলুপ্তির পথে সোনাগাজীর ঐতিহ্য ‘পানের বরজ’

পরের সংবাদ

ব্লক অপসারণ করায় আমডাঙ্গা খালে ভাঙন : হুমকির মুখে ২৭টি পরিবার

প্রকাশিত: আগস্ট ২০, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ২০, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

এস এম রফিকুল আলম, নওয়াপাড়া (যশোর) থেকে : অভয়নগর উপজেলার মহাকাল গ্রামের আমডাঙ্গা খালের পাড় ভেঙে বাড়িঘর, শ্মশান ও সমাধি বিলীন হয়ে যাচ্ছে। প্রতিদিন ভেঙে যাচ্ছে বাড়িঘর। খালের পাড় রক্ষায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্মিত ব্লকগুলো অপসারণের কারণে খালের পাড় ভেঙে যাচ্ছে বলে জানান পাড়ের বাসিন্দারা।
খালের উত্তরপাড়ে বসবাস করেন আব্দুস সালাম মোড়ল (৬৭) আব্দুস সালাম মোড়ল বলেন, গতবছর বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধ এলাকার সহস্রাধিক মানুষ কয়েকদিন ধরে খালের ভিতর থাকা ব্লক তুলে দেয়ার পর খালের পাড় ভেঙে শোয়ার ঘরটির অর্ধেক খালের ভিতর চলে যায়। যে কোনো সময় পুরোঘরটি ভেঙে পড়তে পারে। ওখানে আমার আর জায়গা নেই। ফলে ভয়ে ঘর ছেড়ে রাস্তার পাশে চালা দিয়ে কোনোমতে আছি। আব্দুস সালামের অপর পড়শি মধু চন্দ্র পাল বলেন, ‘খাল কাটার পর থেকে এ পর্যন্ত আমার পাঁচ শতক জমি খালের ভিতর চলে গেছে। খালের পাড় রক্ষায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্মিত ব্লকগুলো গত বছর অপসারণের কারণে এবার ভাঙন খুব বেশি।’ আব্দুস সালাস মোড়ল ও মধু চন্দ্র পালের মত যশোর খুলনা মহাসড়ক থেকে ভৈরব নদ পর্যন্ত আমডাঙ্গা খালের দুপাশে ২৭টি পরিবারের বসবাস। ভুক্তভোগী ওই পরিবারগুলোর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০০৬ সালে খালটি কাটার পর ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড অপরিকল্পিতভাবে পাড় বরাবর সিমেন্ট বালুর নির্মিত ব্লক বিছিয়ে দেয়। কিন্তু এরপর থেকে প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে বিভিন্ন জাগায় ব্লকগুলো সরে গিয়ে পাড় ভাঙতে থাকে। গত বছর ভবদহ এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। কিন্তু ২০১৩ সালের পর এলাকার কোনো বিলে টিআরএম চালু না থাকায় ব্যাপক এলাকার পানি নিষ্কাশনের একমাত্র পথ টেকা-হরি-শ্রী নদীর বুক উঁচু হয়ে পড়ায় জলাবদ্ধ এলাকার ভুক্তভোগী কিছু মানুষ তাদের অনুরোধ উপেক্ষা করে সপ্তাহব্যাপী খালের ভিতরে থাকা ব্লকগুলো অপসারণ করে। এ বছর বর্ষা শুরু হলে খালের পানির তোড়ে পাড় ভাঙন প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হয়।
তারা জানান, এ পর্যন্ত ৫-৬টি ঘর খালের মধ্যে ভেঙে পড়েছে। বাড়ির আঙিনাসহ কয়েকটি পরিবারের ঘরবাড়ি যে কোনো সময় ভেঙে খালের মাঝে নিপাতিত হতে পারে। ভুক্তভোগী দীনবন্ধু সরকার জানান, বাপদাদার আমলের পুরনো শ্মশান, সমাধি, বাড়িঘর ভেঙে খালের মধ্যে চলে গেছে। ভাঙনরোধে তারা পানি উন্নয়ন বোর্ড, টিএনও অফিস, ডিসি অফিস এমনকি রাজনৈতিক নেতাদের কাছে বারবার ধর্ণা দিয়েছেন কিন্তু কোনো প্রতিকার পায়নি। মো. তানভির হোসেন তানু বলেন, ‘আমরা নিরুপায় হয়ে মিটিং করে তিনটি বিকল্প সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ঘরবাড়ি রক্ষায় খালের পাড় বাঁধার জন্য আমরা প্রথমে নওয়াপাড়া পৌর মেয়রের কাছে যাব। তিনি সমাধান দিতে না পারলে এরপর এমপির কাছে যাব। তাতেও যদি সমাধান না পায় তবে বাঁচার তাগিদে আমরা খাল বেঁধে দেব।’অভয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমি পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছেন। পানি উন্নয়ন বোড (পাউবো) যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. তাওহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের নিষেধ সত্ত্বেও গত বছর অতিউৎসাহী স্থানীয়রা আমডাঙ্গা খালের ব্লক তুলে ফেলায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। আমরা জমি অধিগ্রহণ করে খালটি বড় করার জন্য মন্ত্রণালয়ে ডিপিপি পাঠিয়েছি। সেটা বেশ সময় লাগবে। আপাতত বরাদ্দ নাই। বরাদ্দ পেলে ব্যবস্থা নেব।’

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়