মির্জা ফখরুল : জিয়ার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার মানুষ বিশ্বাস করে না

আগের সংবাদ

বিলুপ্তির পথে সোনাগাজীর ঐতিহ্য ‘পানের বরজ’

পরের সংবাদ

তিস্তায় পানি বেড়ে বন্যার আশঙ্কা লালমনিরহাটে : রাজশাহীতে পদ্মার পানি বিপদসীমা ছুঁইছুঁই

প্রকাশিত: আগস্ট ২০, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ২০, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : রাজশাহীতে বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই করছে পদ্মার পানি। ইতোমধ্যে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে নগরীর নিচু এলাকার ২ হাজার পরিবার। এদিকে তিস্তায় পানি বেড়ে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে লালমনিরহাটে। এ সম্পর্কে আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো রিপোর্ট-
লালমনিরহাট : উজানের পাহাড়ি ঢল ও হালকা বৃষ্টিতে আবারো তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ১৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে তিস্তার তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে ফের বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজ ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ৭৬ সেন্টিমিটার (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ৬০ সেন্টিমিটার)। যা বিপদসীমার ১৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
জানা গেছে, ভারতের সিকিম উপত্যকা থেকে সৃষ্ট তিস্তা নদী ভারতে প্রবাহিত হয়ে লালমনিরহাট জেলা দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। বর্ষাকালে অতিবর্ষণের ফলে ভারত অতিরিক্ত পানি ছেড়ে দেয়ায় বাংলাদেশ অংশে ভয়াবহ বন্যা আর তীব্র ভাঙনের মুখে পড়েন লালমনিরহাটের ৫টি উপজেলার তীরবর্তী মানুষরা। উজানের পাহাড়ি ঢলে গত মঙ্গলবার রাত থেকে তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ বৃদ্ধি পেয়ে গত ১৩ আগস্ট বিপদসীমা অতিক্রম করে। দিনভর বৃষ্টিতে আরো বাড়তে থাকে তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ। দুদিন পানি বেড়ে দুপুর ১২টায় দেশের বৃহত্ততম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজ ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ৭৬ সেন্টিমিটার (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ৬০ সেন্টিমিটার)। যা বিপৎসীমার ১৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে ব্যারাজ রক্ষার্থে সব জলকপাট খুলে পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। ফলে তিস্তা নদীর বাম তীরে লালমনিরহাটের ৫টি উপজেলার শত শত পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। লকডাউনের ধকল না কাটতে বন্যার শঙ্কায় চরম দুর্ভোগে পড়েছে তিস্তাপারের মানুষ।
তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, উজানের পাহাড়ি ঢলে তিস্তার পানি বিপদসীমার ১৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তা ব্যারাজের সব গেট খুলে দিয়ে পানির চাপ নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। ফলে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। তবে তা রাতে বিপদসীমার নিচে নেমে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে পানি

কমে যাওয়ার পর ভাঙনের কবলে পড়তে পারে অনেক পরিবার।
রাজশাহী : রাজশাহীতে বেড়েই চলেছে পদ্মা নদীর পানি। বর্তমানে নদীটির বিপদসীমা ১৮ দশমিক ৫০ মিটার। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে জেলায় পানির উচ্চতা ১৭ দশমিক ৭৯ মিটার মাপা হয়েছে। অর্থাৎ বিপদসীমার ৭১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে পদ্মার পানি। ইতোমধ্যে পানিবন্দি হয়েছে নগরীর অন্তত দুই হাজার পরিবার। ফলে অনেকে বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন। তবে পানিবন্দিদের উদ্ধারে কার্যকরী কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, পদ্মা নদীতে প্রতিদিন প্রায় ৯-১০ সেন্টিমিটার করে পানি বাড়ছে। বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় জেলায় পানির উচ্চতা ১৭ দশমিক ৭৯ মিটার থাকলেও তার আগের দিন বুধবার সন্ধ্যা ৬টায় মাপা হয় ১৭ দশমিক ৭৪ সেন্টিমিটার। আর গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টায় ছিল ১৭ দশমিক ৬৪ মিটার, সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় ১৭ দশমিক ৫৫ মিটার এবং ১৭ দশমিক ৪৫ মিটার উচ্চতা ছিল গত রবিবার সন্ধ্যা ৬টায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, পদ্মার পানি বাড়তে থাকায় রাজশাহী সিটি করপোরেশনের ২৪, ২৮ ও ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের প্রায় দুই হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়েছে। ভাঙন শুরু হয়েছে জেলার বাঘা ও গোদাগাড়ী উপজেলার কয়েকটি গ্রামে। গোদাগাড়ীর নিমতলা এলাকায় প্রথমবারের মতো ভাঙন ধরেছে। এছাড়া পবা উপজেলার চর খিদিরপুর এলাকায় ভাঙন শুরু হওয়ায় ভরা পদ্মায় ঝুঁকি নিয়েই নৌকায় পার হয়ে এপারে আসছেন চরবাসী। আর নগরীর আইবাঁধ থেকে তালাইমারী পেরিয়ে জাহাজঘাট এলাকা পর্যন্ত প্রায় দুই হাজার পরিবার পানিবন্দি থাকলেও এখনো কার্যকরী কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
এ বিষয়ে রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম শেখ বলেন, পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় অনেকের বাড়িঘর ডুবে গেছে। আগামী ৩-৪ দিন পানি বাড়তে পারে। তবে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ রয়েছে। বাঁধ উপচে বন্যার পানিতে শহর এলাকা প্লাবিত হবে না। ওই বাঁধ অনেক উঁচু হওয়ায় এখনো নিরাপদ রয়েছে জনবসতি। পানি কমলেও কাল হয়ে দাঁড়াতে পারে নদীভাঙন। সে ব্যাপারে সজাগ দৃষ্টি রাখা হয়েছে। অবস্থা বুঝে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়