মির্জা ফখরুল : জিয়ার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার মানুষ বিশ্বাস করে না

আগের সংবাদ

বিলুপ্তির পথে সোনাগাজীর ঐতিহ্য ‘পানের বরজ’

পরের সংবাদ

কুষ্টিয়ার গড়াই নদীতে ফের ভাঙন শুরু

প্রকাশিত: আগস্ট ২০, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ২০, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

নুর আলম দুলাল, কুষ্টিয়া থেকে : কুষ্টিয়া সদর উপজেলায় শেখ রাসেল কুষ্টিয়া-হরিপুর সংযোগ সেতু রক্ষা ব্লক বাঁধের ধ্বসে পড়া অংশে আবারো ভাঙন শুরু হয়েছে। বুধবার সন্ধ্যায় এ ভাঙন দেখা দেয়। এতে বেশকিছু বাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। নদী তীরবর্তী বাসিন্দারা তাদের বাড়ির অংশ খুলে ও মালামাল দ্রুত অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন।
এর আগে রবিবার ভোরে হাটশ হরিপুর এলাকায় বাঁধের প্রায় ৪০ মিটার ব্লক গড়াই নদীতে বিলীন হয়ে যায়। ধসে পড়া বাঁধের পাশেই মানুষের বসতি। ব্লক ধসে পড়ায় একটি বাড়ির কিছু অংশ ভেঙে পড়ে। গত তিনদিনে পানি আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। বাঁধের কয়েক মিটার পাশে থাকা বাড়ির দিকে পানি চলে যাচ্ছে। এতে ঝুঁকিতে রয়েছে বাড়িগুলো। ফলে, নদী তীরবর্তী বাসিন্দারা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।
বুধবার বিকালের পর সেখানে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হয়। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে অন্তত ১ হাজার ৬০০ বস্তা ফেলা হয়। কিন্তু তাতে কোনো কাজ হয়নি। হঠাৎ সন্ধ্যা ৭টার দিকে সেখানে পানির নিচ থেকে বুদবুদ উঠতে থাকে। এক পর্যায়ে ব্লক বাঁধ ভাঙতে থাকে। এ সময় তীরবর্তী বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পাকা দালানের বাসিন্দারা রাতের আঁধারের মধ্যে দ্রুত আসবাব অন্যত্র সরাতে শুরু করেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার পর সামসুল হক নামে এক ব্যক্তির একটি বাড়ি ভেঙে তলিয়ে যায়। রাত ৮টার দিকে মোজাম্মেল হকের পাকা বাড়ির কিছু অংশ ভেঙে নদীতে তলিয়ে যায়। সাড়ে ৮টা পর্যন্ত ব্লক বাঁধ ভেঙে সেতুর দিকে এগিয়ে আসতে থাকে। সন্ধ্যার পর থেকে দেড় ঘণ্টায় অন্তত ৪০ মিটার ভেঙে যায়। সেতুর কাছাকাছি চলে আসে ভাঙন। ভাঙন স্থল থেকে মাত্র ১০০ মিটার দূরে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ওই সেতুর অবস্থান।
ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে হাটশ হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান এম সম্পা মাহমুদ বলেন, ভেঙেপড়া অংশে বালুর বস্তা ফেলা হয়েছে। কিন্তু পানির ¯্রােত বেশি হওয়ায় ভাঙন ঠেকানো যাচ্ছে না। শুধু চেয়ে চেয়ে দেখছি। প্রকৃতির কাছে হার মানতে হচ্ছে। তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রথম দিনের ভাঙনের পর যদি দ্রুত বাঁধ প্রতিরোধক গড়া যেত, তাহলে সন্ধ্যার ঘটনা নাও ঘটতে পারত। এ জন্য প্রশাসনের গাফিলতি রয়েছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন। কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সোমবার কিছু বস্তা ফেলা হয়েছিল। মঙ্গলবার বিকালেও ফেলা হয়েছে। জেলা প্রশাসক মো. সাইদুল ইসলাম বলেন, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাধন কুমার বিশ্বাসকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন হরিপুরবাসীর স্বপ্ন গড়াই নদীর ওপর সংযোগ সেতু। কুষ্টিয়ার জননেতা মাহবুবউল আলম হানিফের আন্তরিক প্রচেষ্টায় ২০১৭ সালে গড়াই নদীর ওপর শেখ রাসেল সেতু নির্মাণ করা হয়। এর পর থেকে হরিপুর ইউনিয়নবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণ হয় এবং সেখানকার জীবনযাত্রায় ব্যাপক পরিবর্তন আসে। অল্পদিনের মধ্যেই পুরো হরিপুর ইউনিয়নজুড়ে শুরু হয়েছে বহুতল বাড়ি, মার্কেট, শপিংমলসহ নানা স্থাপনা নির্মাণের প্রতিযোগিতা। কিন্তু গড়াই নদীর এমন ভাঙনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নীরবতায় জনমনে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। এ ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি করেছে এলাকাবাসী।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়