অক্সিজেন ঘাটতি নিয়ে রওশন এরশাদ আইসিইউতে

আগের সংবাদ

এবার লক্ষ্য কূটনৈতিক জয় : তালেবানের ওপর বাড়ছে আন্তর্জাতিক চাপ >> চ্যালেঞ্জের মুখে ভারত

পরের সংবাদ

দুর্নীতিমুক্ত মডেল পৌরসভা গড়তে কাজ করছি : সহিদুজ্জামান সেলিম মেয়র, কোটচাঁদপুর পৌরসভা

প্রকাশিত: আগস্ট ১৮, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ১৮, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কামাল হাওলাদার, কোটচাঁদপুর (ঝিনাইদহ) থেকে : সাহিত্য, সংস্কৃতি ও ব্যবসা-বাণিজ্যে সমৃদ্ধ একসময় বৃহত্তর যশোর জেলার থানা ছিল কোটচাঁদপুর। ১৮৬১ সালে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনামলে কোটচাঁদপুরকে মহকুমা করা হয়। দীর্ঘ আড়াই বছরেরও বেশি সময় সরকারিভাবে কোটচাঁদপুরে মহকুমার কার্যক্রম চলার পর ১৮৬৩ সালের শেষের দিকে কোটচাঁদপুরকে বিলুপ্ত করে ঝিনাইদহকে মহকুমা (বর্তমানে জেলা) করা হয়। মহকুমা বিলুপ্তির দুদশক পর প্রতিষ্ঠিত হয় দেশের অন্যতম প্রচীন এ পৌরসভা।
এ পৌরসভার প্রথম চেয়ারম্যান ছিলেন যশোরের জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ক্যাসল। তিনি ১৮৮৩ থেকে ১৮৯২ সাল পর্যন্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। মাইকেল মধুসূদন দত্তের স্মৃতিবিজড়িত কপোতাক্ষ নদের পাশে এ পৌরসভার মোট আয়তন ১৭.৪৬ বর্গকিলোমিটার। পৌরসভার মোট জনসংখ্যা ৫৬ হাজার ৯০। ১৯৯৯ সালের ২৪ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতির নির্দেশে কোটচাঁদপুর পৌরসভাকে ক-শ্রেণিতে উন্নীত করা হয়। চলতি বছরের ৩০ জানুয়ারির নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বর্তমান মেয়র সহিদুজ্জামান সেলিম বিপুল ভোটের ব্যবধানে জয়লাভ করেন। ২৮ ফেব্রুয়ারি তিনি মেয়র হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। সহিদুজ্জামান সেলিম এ পৌরসভার ৪২তম মেয়র।
ভোরের কাগজের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকালে তিনি বলেন, দায়িত্ব নেয়ার পর সাবেক মেয়রদের রেখে যাওয়া প্রায় ১০ কোটি টাকা দেনা আমাকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলে, যা পৌরসভার স্বাভাবিক উন্নয়নে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। তারপরও আমি পৌরসভার সার্বিক উন্নয়ন ও নাগরিক সেবা নিশ্চিত করতে যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছি। তিনি বলেন, দায়িত্বে আসার পর পৌর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গড়ে ২৭ মাসের বেতন বকেয়া ছিল। বিগত

সময়ের কাউন্সিলরদের সম্মানী বছরের পর বছর দেয়া হয়নি। আমি আসার পর অতিমারি করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে অর্থনৈতিক কাঠামোসহ সব ক্ষেত্রে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়। তারপরও আমি সাধ্যমতো উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি কর্মচারীদের বেতন মাস শেষে পরিশোধ করছি। কাউন্সিলরদের সম্মানীও বকেয়া নেই।
সব অকেজো ড্রেন সংস্কার করে চালু করা হয়েছে। শিগগিরই নতুন টেন্ডার করে কালভার্ট ও ড্রেন নির্মাণ করে জলজট নিরসন করা হবে। নতুন করে পৌর এলাকায় দুটি পানির পাম্প সংযুক্ত করার কারণে পৌরবাসীর দীর্ঘদিনের পানির ভোগান্তি লাঘব হয়েছে। বৈদ্যুতিক পিলারে ৭০০ বাল্ব লাগানো হয়েছে। ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে বিভিন্ন রাস্তার কাজ চলমান রয়েছে। বিগত মেয়রদের রেখে যাওয়া ৩ কোটি টাকা বিদ্যুৎ বিলের মধ্যে ২৫ লাখ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। পোস্টপেইড কার্ডের মাধ্যমে আমরা পৌর এলাকায় বিদ্যুৎ ব্যবহার করছি। যে কারণে আমার আমলে একটি টাকাও বিদ্যুৎ বিভাগে বকেয়া নেই। বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানেও আর্থিক অনুদান দেয়া হয়েছে। জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহ থেকে অতিমাত্রায় পৌর এলাকায় মানুষ করোনায় আক্রান্ত হন। সাধারণ নাগরিকদের অক্সিজেন সেবা দিতে মেয়র পৌরসভার পক্ষ থেকে স্থানীয় হাসপাতালে ১৬টি অক্সিজেন সিলিন্ডার দেন। সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালের সব অক্সিজেন সিলিন্ডার রিফিলের অর্থায়নও করছেন। তাছাড়া ব্যক্তিগত উদ্যেগে বিনামূল্যে অক্সিজেন সিলিন্ডার সরবরাহ অব্যাহত রয়েছে। দেয়া হচ্ছে বিনামূলে ওষুধ। মেয়র সহিদুজ্জামান সেলিম বলেন, দায়িত্ব পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সাবেক মেয়রদের আমলের আর্থিক লেনদেনের হিসাব সিএ ফার্ম দিয়ে অডিট করানো হয়েছে। রিপোর্ট পেলে আমি তা পৌরবাসীর সামনে তুলে ধরব। হিসাবে অসঙ্গতি থাকলে প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেবে। তিনি কোটচাঁদপুরকে দুর্নীতিমুক্ত মডেল পৌরসভা করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। এটি বাস্তবায়নে যা যা প্রয়োজন তাই করবেন। তিনি বলেন, আমার মেয়াদে শহরে একটি কলেজিয়েট স্কুল, সুইমিং পুল, অডিটোরিয়াম, চ্যারিটেবল, ডিসপেন্সারি করারও পরিকল্পনা রয়েছে। সর্বশেষে তিনি কোটচাঁদপুর পৌরবাসীর পক্ষ থেকে দেশের বহুল প্রচারিত মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবাহী দৈনিক ভোরের কাগজকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়