বিজিএমইএ : সব স্থলবন্দর দিয়ে ইয়ার্ন আমদানির সুযোগ দাবি

আগের সংবাদ

করের আওতায় আসছেন ব্যাংকের কার্ডধারীরা!

পরের সংবাদ

নিজাম উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী সাজেল মেয়র, পরশুরাম পৌরসভা > মাদকমুক্ত আধুনিক ও আদর্শ পৌরসভা গঠনে কাজ করছি

প্রকাশিত: আগস্ট ১৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ১৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

আবদুল মান্নান, পরশুরাম (ফেনী) থেকে : পরশুরাম পৌরসভার পরপর তিনবার নির্বাচিত মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী সাজেল বলেছেন, সম্পূর্ণ মাদকমুক্ত একটি আধুনিক ও আদর্শ পৌরসভা গঠনে কাজ করছি।
ফেনী থেকে ২৫ কিমি উত্তরে ভারত সীমান্তবর্তী এলাকায় অবস্থিত পরশুরাম পৌরসভা ২০০১ সালের ২২ এপ্রিল প্রতিষ্ঠিত হয়। ২৪.৭০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই পৌরসভা ৯টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত।
শতভাগ বিদ্যুতায়িত পৌরসভা এটি। এই পৌরসভার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে অসাম্প্রদায়িক ও সম্প্রীতির মাঝে সবাই বাস করছেন।
পৌর এলাকায় বড়, মাঝারি ও ছোট আকারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সরকারি হিসাবে ৭টি বালুমহাল ও একটি স্থলবন্দর রয়েছে। পৌরসভায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের আওতাধীন এডিবি, ইউজিআইপিসহ দ্বিতীয় নগর পরিচালনা ও উন্নয়নের কাজ চলমান রয়েছে। কৃষক, ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ, চাকরিজীবীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ বাস করছেন এই পৌরসভায়। বর্তমানে ভোটার পুরুষ ১২ লাখ ৬৮১ ও নারী ১১ হাজার ৯১৫ জন।
২০০১ সালে পৌরসভা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর প্রথম পৌর প্রশাসক ছিলেন বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন মজুমদার। ২০০২ সালে মেয়র নির্বাচিত হন তৎকালীন পরশুরাম উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু তালেব মজুমদার। এরপর ২০১১ এসে বিএনপি নেতা আবু তালেবের সঙ্গে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করে বিপুল ভোটে মেয়র নির্বাচিত হন তৎকালীন উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি বর্তমান মেয়র নিজাম উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী সাজেল। এরপর থেকে সাজেল চৌধুরী টানা দুবার বিনাপ্রতিদ্ব›িদ্বতায় নির্বাচিত হন।

নানা প্রতিশ্রæতি দিয়ে তৃতীয়বারের মতো মেয়র নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় এসেছেন। পৌরবাসীর জন্য কতটুকু করতে পেরেছেন, আর কী করবেন- ভোরের কাগজের এমন প্রশ্নের জবাবে কিছুটা চুপ থেকে তিনি বলেন, ছোটবেলা থেকেই আমার মানুষের পাশে দাঁড়ানোর প্রবণতা কাজ করত। সে থেকে সব সময় মানুষের যে কোনো বিপদ-আপদে পাশে দাঁড়ানোর রাজনীতি করে আসছি। ২০১১ সালে জনগণ আমাকে ভালোবেসে ভোট দিয়েছেন। নির্বাচনে জয়লাভের পর থেকে পৌরবাসীকে নিজের সর্বোচ্চটা দেয়ার চেষ্টা করছি।
মেয়র বলেন, পৌর এলাকায় শতভাগ ড্রেনেজ ব্যবস্থা করা হয়েছে, রাস্তাঘাট, পুল-কালভার্ট নির্মাণ শেষ হয়েছে। এছাড়া পরশুরাম বাজারসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে সড়কবাতিও শতভাগ লাগানো হয়েছে। বর্তমানে গুরুত্বপূর্ণ নগর অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ১০ কোটি টাকার প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে এবং ৪ কোটি টাকার কাজের দরপত্র প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশের ৩০টি পৌরসভায় (পরশুরামসহ) পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন প্রকল্পের ১৩ কোটি টাকার কাজ চলমান রয়েছে। অবকাঠামোগত শতভাগ কাজ প্রায় শেষ হয়েছে। বর্তমানে সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ হাতে নেয়া হয়েছে।
ডেঙ্গুর প্রকোপ থেকে পৌরবাসীকে সুরক্ষিত রাখতে নিয়মিত মশক নিধনে ওষুধ ছিটানো হচ্ছে। ভবিষ্যতে পৌর এলাকাকে সম্পূর্ণ মাদকমুক্ত করতে ইতোমধ্যে একাধিকবার এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তি ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে জনসচেতনতামূলক বিভিন্ন কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। পরশুরাম পৌরসভাকে সম্পূর্ণ মাদকমুক্ত করে একটি আধুনিক সুযোগ-সুবিধার পৌরসভা গঠন করা হবে।
মেয়র বলেন, করোনা দুর্যোগকালে অসহায়, হতদরিদ্র, কর্মহীন মধ্যবিত্ত মানুষের পাশে অবিরাম ছুটে চলার চেষ্টা করেছি কখনো নেতাকর্মী ও জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে, কখনো নিজে একা, কখনো পৌরসভার সার্ভিস টিম নিয়ে। ত্রাণ সহায়তা কার্যক্রম শুরু হয় ৪ এপ্রিল থেকে। তখন থেকে একটি ত্রাণ বিতরণ টিম গঠন করে রাতের আঁধারে উপজেলার কর্মহীন, মধ্যবিত্ত, নিম্ন আয়ের মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দিয়েছি ত্রাণ সহায়তা। খোলা হয়েছে সাহায্য প্রার্থীদের জন্য একটি হটলাইন। ফোন করলেই রাতের আঁধারে তাদের দুয়ারে পৌঁছে দিয়েছি ত্রাণ। করোনার প্রাদুর্ভাব শুরুর পর থেকে এ কার্যক্রম এখনো চলছে।
এছাড়া মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, সাবানসহ বিভিন্ন সুরক্ষাসামগ্রী বাড়িতে পৌঁছে দেয়া হয়েছে। পৌরসভায় সরকারি বরাদ্দগুলো কাউন্সিলরদের মাধ্যমে বিতরণ করা হচ্ছে নিয়মিত। তিনি বলেন, করোনাকালে কোভিড রোগীদের চিকিৎসার জন্য পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পুরুষ ওয়ার্ডকে পরিপাটি করে সাজিয়ে দিয়েছি।
হাসপাতালের যে টয়লেটে কেউ যেতে চাইত না, সে হাসপাতালে লাগিয়েছি হাইকমোড, ট্যাপ, বেসিন, শাওয়ারসহ সব ধরনের অত্যাধুনিক ফিটিংস।
বর্তমানে করোনা রোগী ও অসুস্থ মানুষের জন্য ফ্রি অ্যাম্বোলেন্স সেবার পাশাপাশি শ্বাসকষ্টের রোগীদের সেবা দিতে সার্বক্ষণিক চালু রয়েছে একটি হটলাইন যাতে কল করলেই বাড়িতে পৌঁছে দেয়া হচ্ছে অক্সিজেন সিলিন্ডার।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়