মজিদ কাজল, গঙ্গাচড়া (রংপুর) থেকে : রংপুরের গঙ্গাচড়ায় তিস্তার ভাঙনে সাউদপাড়া গ্রামের তিস্তা ডানতীর উপবাঁধটি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এতে সাউদপাড়া ডাকঘর, বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র ও সাউদপাড়া বহুমুখী ইসলামিয়া সিনিয়র মাদ্রাসাসহ শতাধিক পরিবার নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার চরম আশঙ্কা রয়েছে। সেই সঙ্গে বিনবিনা ও ইচলী গ্রামে ৭০টি পরিবারের বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। গ্রাম দুটিতে ভাঙন হুমকিতে রয়েছে চার হাজার পরিবারের বাড়িঘর, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ঈদগাহ, পাকা রাস্তাসহ বিশাল আবাদি জমি ও গাছপালা।
সরজমিন ভাঙন এলাকায় গিয়ে কথা হয়, সাউদপাড়া গ্রামের তৈয়ব আলী (৫০), জুয়েল (৩০), মো. আলী (৭০), আব্দুল বাকি (৬৫), রেয়াজুল (৫৫), আমিনুর (৬৫), আসাদুল হক আনছারীসহ (৪৫) অনেকের সঙ্গে। তারা জানান, ২৪ ঘণ্টায় তিস্তাগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে সাউদপাড়া সিনিয়র মাদ্রাসাসংলগ্ন ৫০ মিটার দৈর্ঘ্যরে একটি উপবাঁধ (ডাইক)। দ্রুত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নেয়া না হলে সাউদপাড়া ডাকঘর, কোটি টাকা মূল্যের বন্যা আশ্রয়ণকেন্দ্র ও সাউদপাড়া বহুমুখী ইসলামিয়া সিনিয়র মাদ্রাসাসহ প্রায় শতাধিক পরিবারের বাড়িঘর তিস্তার গর্ভে বিলীনের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
সাউদপাড়া সিনিয়র মাদ্রাসার অধ্যক্ষ রোকনুজ্জামান জানান, দ্রুত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নেয়া না হলে কোটি টাকা মূল্যের বন্যা আশ্রয়ণকেন্দ্র ও সাউদপাড়া বহুমুখী ইসলামিয়া সিনিয়র মাদ্রাসা, ডাকঘর, মসজিদসহ প্রায় শতাধিক পরিবারের বাড়িঘর তিস্তার গর্ভে বিলীনের চরম আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এছাড়া চলতি মৌসুমে বিনবিনা গ্রামের ৫০টি পরিবারের ও ল²ীটারি ইউনিয়নের ২০টি পরিবারের বাড়িঘর তিস্তার ভাঙনে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে।
বিনবিনা গ্রামের বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা নুর ইসলাম মাস্টার (৭০) জানান, তিস্তার অব্যাহত ভাঙনে গত দুই মাসে বিনবিনা ৫০টি পরিবারের বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়া ভাঙন হুমকিতে রয়েছে গ্রামের প্রায় ৩ হাজার পরিবারের বাড়িঘর, বিনবিনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পাকা রাস্তা, ঈদগাসহ বিপুল পরিমাণ আবাদি জমি ও গাছপালা।
ল²ীটারি ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল্লা আল হাদী বলেন, পশ্চিম ইচলী গ্রামে তিস্তার ভাঙন প্রতিরোধে রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডে যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে। চরাঞ্চলে প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ গ্রহণে তাদের তেমন সহযোগিতা পাচ্ছি না। এ ব্যাপারে তিনি স্থানীয় সংসদ সদস্যের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (এসডি-৩) প্রকৌশলী তৈয়বুর রহমান জানান, সাউদপাড়ায় আমাদের প্রকৌশলী রয়েছেন। প্রতিরক্ষায় জরুরি পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে এক হাজার জিও ব্যাগের ডাম্পিং চলছে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।