সবুজ বাংলাদেশকে সবুজতর করার আহ্বান আইজিপির

আগের সংবাদ

হুমকির মুখে রোহিঙ্গা জাতিসত্তা : বিশ্বব্যাংক ও জাতিসংঘের প্রস্তাব নিয়ে কূটনৈতিক বিশ্লেষকদের অভিমত

পরের সংবাদ

বিনোদন কেন্দ্র খুলছে : সবকিছু খুলে দিয়ে ফের লকডাউনের ইঙ্গিত

প্রকাশিত: আগস্ট ১৩, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ১৩, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাস বাংলাদেশে সর্বোচ্চ ছোবল দেয়ার সময় একে একে সবই খুলে দেয়ার পাশাপাশি ফের নতুন করে লকডাউনের ইঙ্গিত দিচ্ছে সরকার। এই দুইয়ের মধ্যে পড়ে অনেকে বিভ্রান্তিতেও আছেন। অনেকেই নিজেদের মতো করে হিসাব কষে একে অন্যকে বলছেন, চলতি মাসের শেষ থেকে ফের লকডাউন শুরু হচ্ছে।
তবে গত দুদিনে মানুষের চলাচল দেখে বোঝার উপায় নেই, দেশে করোনার ছোবলের সর্বোচ্চ ধাপ পার করছে। এ পরিস্থিতিতে আগামী বৃহস্পতিবার থেকে বিনোদন কেন্দ্র, পার্ক খুলে দেয়ার আদেশ জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ। এর আগে গত বুধবার থেকে গণপরিবহনসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হয়।
পরিস্থিতির অবনতি হলে ফের বিধিনিষেধ : লকডাউন তুলে নেয়া হলেও করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতির অবনতি হলে আবার বিধিনিষেধ দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। গতকাল বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সাংবাদিককের তিনি বলেন, দুটি কৌশলই আমরা অবলম্বন করব। একটা হলো- বিধিনিষেধ বা লকডাউন দেয়া। আরেকটি হচ্ছে ছেড়ে দেয়া। কিন্তু সবাইকে মাস্ক পরতে হবে। পরিস্থিতি খারাপ হলে আবারো লকডাউন দেয়া হবে কিনা জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, হ্যাঁ, পৃথিবীর যে কোনো দেশে বাড়লেই যেমন, অস্ট্রেলিয়াতে সেনাবাহিনী নামানো হয়েছে, কারফিউ দেয়া হয়েছে, সেখানে লকডাউন দেয়া হয়েছে। আমেরিকাতে দেয়া হয়েছে। দেয়া হচ্ছে কেন? কারণ এর কোনো বিকল্প নেই। আমরা দীর্ঘদিন ধরে বিধিনিষেধের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলাম। এক্ষেত্রে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের অপরিহার্যতার কারণে বিশেষত যারা ব্যবসা করে, কাজ করে, তাদের দিকে তাকিয়ে বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়েছে। যদিও পরিস্থিতি এখনো সন্তোষজনক নয়।
করোনা ভাইরাসের বিস্তার নিয়ন্ত্রণে ঈদের পর ২৩ জুলাই থেকে শুরু হওয়া বিধিনিষেধ ১১ আগস্ট থেকে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তুলে নেয়া হয়েছে। সেদিন থেকেই সব ধরনের সরকারি-বেসরকারি অফিস, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বিপণিবিতান ও দোকানপাট খোলা। আর শিল্পকারখানা খোলা রয়েছে ১ আগস্ট থেকে। বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার প্রক্রিয়ায় আগামী ১৯ আগস্ট থেকে কয়েকটি শর্তে পর্যটন কেন্দ্র, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদনকেন্দ্রও খুলে দিচ্ছে সরকার। সেদিন থেকে সব গণপরিবহনই সড়কে নামতে পারবে।
ধাপে ধাপে বিধিনিষেধগুলো শিথিল করা হচ্ছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, এর ধারাবাহিকতায় আরেকটি প্রজ্ঞাপনে পর্যটন কেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদন কেন্দ্র যে পরিমাণ আসন, তার অর্ধেক বা ৫০ ভাগ চালু করতে বলা হয়েছে। আমরা বলছি, আগামী ১৯ আগস্ট থেকে যানবাহন শতভাগ চলবে। আমরা চাই প্রত্যেকে সতর্কতার সঙ্গে তাদের পেশার কাজ করবেন।
বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতে স্বাস্থ্যবিধি কার্যকর করা কতটুকু বাস্তবসম্মত হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের অবশ্যই মনে রাখতে হবে, আমি অসতর্ক হলে আক্রান্ত হব। আর আক্রান্ত হলে আমার যদি শারীরিক কোনো সমস্যা থাকে, আমার মৃত্যুর ঝুঁকি আছে, স্বাস্থ্যঝুঁকিও মারাত্মক আছে। সবার বিষয়টি উপলব্ধি করতে হবে।
পর্যটন ও বিনোদন কেন্দ্র খুলছে, চলবে সব গণপরিবহন : বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার প্রক্রিয়ায় আগামী ১৯ আগস্ট থেকে কয়েকটি শর্তে পর্যটন কেন্দ্র, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদন কেন্দ্র খুলে দিচ্ছে সরকার। সেদিন থেকে সব গণপরিবহনই সড়কে নামতে পারবে। দেশের ‘আর্থসামাজিক অবস্থা, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সচল রাখা এবং সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে’ গতকাল এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত এই আদেশ বহাল থাকবে।
১১ আগস্ট থেকে আসন সংখ্যার সমান যাত্রী নিয়ে গণপরিবহন চালুর অনুমতি দেয়া হলেও প্রত্যেক এলাকার প্রতিদিন মোট যানবাহনের অর্ধেক গাড়ি রাস্তায় নামানোর শর্ত ছিল। এখন সেই শর্ত আর থাকছে না। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ১৯ আগস্ট থেকে যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে সড়ক, রেল ও নৌপথে সব ধরনের গণপরিবহন চলাচল করবে।
তবে শর্ত হলো আসন বা ধারণক্ষমতার অর্ধেক খালি রাখতে হবে। পাশাপাশি সব ক্ষেত্রে মাস্ক পরা নিশ্চিত করা এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেয়া স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ বলেছে, যে কোনো প্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে অবহেলা পরিলক্ষিত হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দায়িত্ব বহন করবে এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এখন শপিংমল, মার্কেট, দোকানপাট সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে খোলা রাখার অনুমতি আছে। আর খাবারের দোকান, হোটেল-রেস্তোরাঁ অর্ধেক আসন খালি রেখে সকাল ৮টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা। এ নিয়মে কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি।
দেশে করোনা ভাইরাসের প্রকোপ শুরুর পর গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। সেসব খোলার বিষয়ে এখনো কোনো নির্দেশনা আসেনি। সবশেষ গত ২৯ জুলাই এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বন্ধের সিদ্ধান্ত জানিয়েছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়। আর শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সবাইকে টিকা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খুলে দেয়ার পরিকল্পনার কথা বলা হচ্ছিল সরকারের তরফ থেকে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়