সবুজ বাংলাদেশকে সবুজতর করার আহ্বান আইজিপির

আগের সংবাদ

হুমকির মুখে রোহিঙ্গা জাতিসত্তা : বিশ্বব্যাংক ও জাতিসংঘের প্রস্তাব নিয়ে কূটনৈতিক বিশ্লেষকদের অভিমত

পরের সংবাদ

পতনের দ্বারপ্রান্তে কাবুল : তালেবানের সঙ্গে ক্ষমতা ভাগাভাগি চায় আফগান সরকার

প্রকাশিত: আগস্ট ১৩, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ১৩, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : গত এক সপ্তাহে তালেবান বিদ্রোহী গোষ্ঠী দেশটির ৩৪ প্রদেশের মধ্যে ১০টির পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিজেদের দখলে নেয়ার পর গতকাল বৃহস্পতিবার প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি নিয়ন্ত্রিত কাবুল সরকার তালেবানের সঙ্গে ক্ষমতা ভাগাভাগির প্রস্তাব দিয়েছে। সরকারি বাহিনীর সঙ্গে তালেবানের তুমুল লড়াইয়ের মধ্যে সরকারি সূত্রের বরাত দিয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা তালেবানের সঙ্গে ক্ষমতা ভাগাভাগি করতে কাবুল সরকারের এমন প্রস্তাবের খবর জানায়। কাতারে কাবুল সরকার এবং তালেবান নেতাদের মধ্যে চলমান ‘আফগান শান্তি’ আলোচনা থেকে এমন প্রস্তাব এসেছে। তবে আফগান সরকার বা তালেবানের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমতা ভাগাভাগির প্রস্তাব নিয়ে এখনো কোনো ঘোষণা আসেনি। আল-জাজিরা ও এএফপির প্রতিবেদন অনুযায়ী সূত্রটি বলছে, আফগান সরকার মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাতারের কাছে একটি প্রস্তাব জমা দিয়েছে যেখানে আফগানিস্তানে সহিংসতা বন্ধের শর্তে তালেবানদের সঙ্গে ক্ষমতা ভাগাভাগির কথা বলা হয়েছে।
এদিকে যে দুরন্ত গতিতে এগোচ্ছে তালেবান বাহিনী, তাতে আগামী তিন মাসের মধ্যে তারা কাবুলের দখল নেবে বলে ভবিষ্যদ্বাণী করেছে মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগন। এ বিষয়ে পেন্টাগনের একাধিক সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে, তালেবানরা বর্তমান গতি অব্যাহত রাখতে পারলে এক মাসের মধ্যে কাবুলকে সারাদেশ থেকে তারা বিচ্ছিন্ন করে ফেলতে পারবে। পরে আর দুমাসের মধ্যেই দেশের রাজধানীকে নিজেদের দখলে নিয়ে নেবে। অর্থাৎ, তিন মাসের মধ্যেই কাবুলের পতন অনিবার্য!
মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের এ প্রতিবেদন সমর্থন করছে দেশটির মাঠপর্যায়ের বাস্তবতা। একের পর এক প্রাদেশিক রাজধানীর দখল নিচ্ছে তালেবানরা। ক্রমশ পিছু হটছে আফগান বাহিনী। পশ্চিম ও উত্তর আফগানিস্তানের তিন প্রাদেশিক রাজধানীর দখল নিয়েছে। কুন্দুজের সেনাঘাঁটি ও বিমানবন্দর দখল করেছে। গতকাল মাজার-ই-শরিফ যান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি। আগামী কয়েক দিনের জোরদার লড়াইয়ে সেনাদের মনোবল বাড়াতেই প্রেসিডেন্ট গনি মাজারে যান বলে জানায় প্রশাসন সূত্র। গত রবিবার কুন্দুজ দখল করে তালেবান বাহিনী। সেখান থেকে প্রাণ হাতে পালিয়ে আসা মানুষ জানিয়েছে ওই শহরে ভয়াবহ তালেবান-তাণ্ডবের কথা। শরণার্থী শিবিরে বসে এক আফগান মহিলা জানান, সরকারি কর্মী, কর্মকর্তা ও নিরাপত্তা রক্ষীদের বাড়ি থেকে বের করে এনে রাস্তায় দাঁড় করিয়ে গুলি করে মারছে তালেবানরা। কারও বা প্রকাশ্যেই গলা কেটে নেয়া হচ্ছে। অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মী ও বৃদ্ধদেরও রেহাই দিচ্ছে না তারা। পালাতে পালাতে দেখেছিলাম, রাস্তায় মরদেহের পাহাড়। তালেবানরা সরাসরি ঘোষণা করেছে, পরিবারপিছু একজন পুরুষকে তাদের বাহিনীতে যোগ দিতে হবে। আর পরিবারের দুটি মেয়ে থাকলে তাদের মধ্যে কোনো একজনকে কোনো তালেবান সেনার সঙ্গে ‘বিয়ে দিতে’ হবে। বিবাহিতা, মধ্যবয়সি থেকে শুরু করে নাবালিকা, রেহাই পাচ্ছে না কেউ। এই নির্যাতন থেকে বাদ দেয়া হচ্ছে না ১৪-১৫ বছর বয়সি মেয়েদেরও।
ইতোমধ্যে তালেবানের দখলে চলে আসা শেবের গান, ফারা সিটি, তালোকান ও কুন্দুজের ভয়াবহ ছবি উঠে এসেছে একাধিক প্রত্যক্ষদর্শীর বিবরণে। একে-৪৭ ও নানা আধুনিক অস্ত্র নিয়ে সারাক্ষণ রাস্তায় রাস্তায়

দাপিয়ে বেড়াচ্ছে তালেবান জঙ্গিরা। কাউকে মেরে রক্তাক্ত দেহগুলো টেনে-হিঁচড়ে রাস্তা দিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। এদিকে সেনাবাহিনীর একটি সূত্রের দাবি, সেনাপ্রধান জেনরেল ওয়ালি আহমেদজাইকে সেনাপ্রধানের পদ থেকে সরিয়ে দিচ্ছেন প্রেসিডেন্ট গনি। নতুন দায়িত্ব পাচ্ছেন আফগান বাহিনীর ‘স্পেশাল অপারেশন কোর’ এর কমান্ডার হিবাতুল্লাহ আলিজাই। তবে এ খবর সত্যি কিনা, সেনাবাহিনী সে বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চায়নি। এদিকে আফগানিস্তানের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য দোহায় বৈঠকে বসছে প্রতিবেশী দেশগুলো। রাশিয়া, চীন, পাকিস্তানের সঙ্গে সেখানে থাকার কথা ভারতের প্রতিনিধিরও। আগামী ৩১ আগস্ট মার্কিন ও ন্যাটো বাহিনী পুরোপুরি আফগানিস্তান থেকে চলে গেলে কী হবে, মূলত সে বিষয় নিয়েই আলোচনা করবেন তারা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়