খুলনায় মন্দির ও প্রতিমা ভাঙচুর : সম্প্রীতি পরিষদ ও বিশিষ্ট নাগরিকদের প্রতিবাদ

আগের সংবাদ

হার্ড ইমিউনিটি কতটা সম্ভব : নতুন নতুন ধরন নিয়ে শঙ্কা >> টিকার সুফল কিছুটা হলেও মিলবে : আশা বিশেষজ্ঞদের

পরের সংবাদ

মো. আব্দুস ছাত্তার কমান্ডার মেয়র, ঈশ্বরগঞ্জ পৌরসভা > মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আধুনিক পৌরসভা গড়াই লক্ষ্য

প্রকাশিত: আগস্ট ১২, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ১২, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মো. সেলিম, ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ) থেকে : ময়মনসিংহ জেলা সদর থেকে ২৩ কিমি দূরে ব্রহ্মপুত্র নদের শাখা নদী কাঁচামাটিয়ার তীরে অবস্থিত ঈশ্বরগঞ্জ পৌরসভা। স্থানীয় সরকারের শক্তিশালী ও জনগুরুত্বপূর্ণ সেবামূলক প্রতিষ্ঠান এই পৌরসভার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে- সব ধর্ম-বর্ণের লোকের অসাম্প্রদায়িক ও সম্প্রীতির মধ্যে সহাবস্থান।
ভোরের কাগজকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে পৌর মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুস ছাত্তার বলেন, ১৯৯৭ সালের ৭ অক্টোবর ঈশ্বরগঞ্জ ইউনিয়নকে ভেঙে ৯টি মৌজা আলাদা করে ৯টি ওয়ার্ড সৃষ্টির মাধ্যমে পৌরসভা ঘোষণা করা হয়। পরে ২০১১ সালের ৩ অক্টোবর এটিকে ‘ক’ শ্রেণিতে উন্নীত করা হয়। এই পৌরসভার আয়তন ১২.৪১ বর্গকিলোমিটার, জনসংখ্যা ৬২ হাজার ৯৮০ জন। ২০২১ সালের হিসাব অনুযায়ী ভোটার ২২ হাজার ৫৩৪ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার ১১ হাজার ২৬৩ জন, পুরুষ ভোটার ১১ হাজার ২৭১ জন। বর্তমান পৌর মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুস ছাত্তার দ্বিতীয়বারেও নির্বাচিত হয়েছেন।
তিনি জানান, ১৯৬৯ সালে ছাত্ররাজনীতিতে প্রবেশ করে বঙ্গবন্ধুর ডাকে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে আহত হন। স্বাধীনতা-পরবর্তী মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে বিভিন্ন সামাজিক ও সাংকৃতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার প্রতিবাদ করায় তার বিরুদ্ধে মামলা হয়। এত কঠিন অবস্থার মধ্যেও তিনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে কর্মকাণ্ড চালিয়ে যান এবং ঈশ্বরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র পদে নির্বাচিত হন।
মেয়র আব্দুস ছাত্তার বলেন, ১৯৯৭ সালে গঠিত হওয়ার পর থেকে পৌরসভা অবহেলিত ছিল। সেই অবস্থা থেকে উন্নতিকল্পে দুটি গভীর নলকূপের মাধ্যমে সুপেয় পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। ৬৫০টি লাইটিং, ১৪৫টি সোলার লাইটিং

ও১৭টি গণশৌচাগার স্থাপন করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, পৌর এলাকার ৫৭টি মসজিদ, ৯টি মন্দির, পৌর কবরস্থান, ৩টি শ্মাশানঘাট উন্নয়ন করা হয়েছে। পুরনো রাস্তার সংস্কার ও নতুন রাস্তা সিসি, আরসিসিসহ প্রায় ১২ কিলোমিটার সম্পন্ন করা হয়েছে। আরো ৩ কিলোমিটার রাস্তার কাজ চলমান রয়েছে।
মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে মো. আব্দুস ছাত্তার বলেন, পৌর এলাকায় একটি বধ্যভূমি সংরক্ষণ, শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের কবর পাকা করা ও মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য একটি স্থায়ী কমপ্লেক্সের কাজ চলমান রয়েছে। পৌর বাজারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে প্রতিটি মোড়ে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। আরসিসি ড্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে আরো কিছু অংশে কাজ চলমান আছে।
বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সমস্যার বিষয়ে তিনি ভোরের কাগজকে বলেন, জায়গার ব্যবস্থা না থাকায় কাঁচামাটিয়া নদীর তীরে একটি স্থানে আপাতত বর্জ্য রাখা হচ্ছে। এটি অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার কাজ চলছে। পৌর নাগরিকদের জীবনমান উন্নয়নে আবাসিক এলাকার পুরনো রাস্তা সংস্কার ও নতুন রাস্তা এবং ড্রেন নির্মাণকাজ অব্যাহত আছে।
শিক্ষার পরিবেশ ও উন্নয়ন সম্পর্কে মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুস ছাত্তার বলেন, পৌর এলাকায় একটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, একটি কামিল মাদ্রাসা, একটি মহিলা কলেজ ও একটি বেসরকারি কলেজ রয়েছে। সরকারি একটিসহ ৪টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং ৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যাতায়াতের সব রাস্তার উন্নয়ন করা হয়েছে। ছাত্রীদের উত্ত্যক্তকারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে অভিভাবক ও পুলিশের সহায়তা নেয়ায় বিষয়টি নিয়ন্ত্রণে আছে।
বয়স্ক-বিধবা-প্রতিবন্ধী, অসহায় গরিব জনগোষ্ঠীর উন্নয়ন বিষয়ে মেয়র ছাত্তার বলেন, বয়স্ক-বিধবা-প্রতিবন্ধীদের ভাতার আওতায় আনা হয়েছে। দুস্থদের নিয়মিত খাদ্য সহায়তা হিসেবে ভিজিএফ চালু আছে। করোনাকালে কর্মহীনদের জন্য খাদ্য সহায়তাও চালু আছে। শহরের বাইরে কৃষিভিত্তিক শিল্প ও গবাদিপশুর খামার স্থাপনে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।
বিনোদন ও নারী অধিকার বিষয়ে তিনি বলেন, শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে বিনোদন কেন্দ্র স্থাপন এবং নারী উদ্যোক্তাদের স্বনির্ভর করতে বিভিন্ন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করার পরিকল্পনা রয়েছে।
পৌরসভাকে ডিজিটালাইজড করার প্রশ্নে বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুস ছাত্তার বলেন, অনলাইনের মাধ্যমে জন্মনিবন্ধন কার্যক্রম চালু আছে। পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন প্রকার বিল ও ট্যাক্স আদায় প্রক্রিয়াও অনলাইনের আওতায় আনা হবে। নাগরিক সুবিধার জন্য সময় উপযোগী আধুনিক সেবা প্রদানের ব্যবস্থা করা হবে।
পরিশেষে মেয়র মো. আব্দুস ছাত্তার কমাণ্ডার ‘মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের মুক্ত প্রাণের প্রতিধ্বনি ভোরের কাগজ’ পরিবারকে এ ধরনের উদ্যোগের জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়