খুলনায় মন্দির ও প্রতিমা ভাঙচুর : সম্প্রীতি পরিষদ ও বিশিষ্ট নাগরিকদের প্রতিবাদ

আগের সংবাদ

হার্ড ইমিউনিটি কতটা সম্ভব : নতুন নতুন ধরন নিয়ে শঙ্কা >> টিকার সুফল কিছুটা হলেও মিলবে : আশা বিশেষজ্ঞদের

পরের সংবাদ

বাউফলে সাজাপ্রাপ্ত আসামি করছে সরকারি চাকরি!

প্রকাশিত: আগস্ট ১২, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ১২, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি : বাউফলে চাঞ্চল্যকর স্কুলছাত্র হত্যা মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি তথ্য গোপন করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দীর্ঘ বছর ধরে চাকরি করে আসছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সাজাপ্রাপ্ত ওই আসামির নাম আল আমিন সিকদার। সে উপজেলার কনকদিয়া ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডে স্বাস্থ্য সহকারী পদে চাকরি করছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৩ সালে ঝিলনা লঞ্চঘাটে একটি ক্লাব ঘর নির্মাণ করাকে কেন্দ্র করে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে ওই গ্রামের লিটন সিকদার ও আল আমিন সিকদারের নেতৃত্বে ৬-৭ জনের একটি দল ওই গ্রামের আব্দুর রশিদের দ্বিতীয় ছেলে আয়লা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র বশিরকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করে। এ ঘটনায় বশিরের বাবা আব্দুর রশিদ বাদী হয়ে তৎকালীন স্থানীয় চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল, খসরু হাওলাদার, মিজানুর রহমান,আল আমিন সিকদার ও লিটন সিকদারসহ ১১ জনকে আসামি করে বাউফল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছিলেন।
পুলিশ দীর্ঘদিন তদন্ত করে চেয়ারম্যান আব্দুুল জলিল, খসরু হাওলাদার, মিজানুর রহমান, আল আমিন সিকদার ও লিটন সিকদারের বিরুদ্ধে পটুয়াখালী জেলা ও দায়রা জজ আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। এরপর ২০০৮ সালে বিচারের জন্যে মামলাটি বরিশাল দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আদালতে পাঠায়। ২০১১ সালে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক স্কুলছাত্র বশিরকে হত্যার দায়ে কনকদিয়া ইউনিয়নের সাবেক প্রয়াত চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল, খসরু হাওলাদার, মিজানুর রহমান, আল আমিন সিকদার এবং লিটন সিকদারকে ৩০ বছর সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ এবং প্রত্যেকের ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো এক বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেন। এরপর আসামিদের জেলহাজতে পাঠানো হয়। কিছু দিন পর সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা উচ্চ আদালতে আপিল করে। আপিলের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান এবং বিচারপতি শেখ আব্দুল আউয়াল গঠিত আসামিদের ৬ মাসের জামিন মঞ্জুর করেন। জামিনে এসেই বাদীর পরিবারকে মামলা তুলে নেয়ার জন্য আসামি পক্ষ হুমকি দিতে থাকে। পরে আসামিরা উচ্চ আদালতে মামলাটি স্থগিত করে রাখেন। এরপর ২০১৩ সালে আল আমিন কনকদিয়া ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের স্বাস্থ্য সহকারী পদে চাকরি নেয়।
বশিরের বাবা আব্দুর রশিদ অভিযোগ করে বলেন, তার সন্তানকে যারা হত্যা করেছে তাদের ৩০ বছরের সাজা হয়েছে। সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে আল আমিনও রয়েছে। তারপরেও তার সরকারি চাকরি হলো কীভাবে। তিনি কান্না জড়িতকণ্ঠে বলেন, আমাদের টাকা-পয়সা নাই, তাই উচ্চ আদালতের খোঁজখবরও নিতে পারছি না।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য সহকারী আল আমিন সিকদার মুঠোফোনে মামলায় সাজা ও জরিমানার কথা স্বীকার করে জানায়, মামলাটি নিষ্পত্তি হয়েছে। মামলা নিষ্পত্তির পর চাকরি হয়েছে। আমার ডিপার্টমেন্ট জেনেশুনে মামলা নিষ্পত্তির পরে আমাকে চাকরি দিয়েছে। মামলা নিষ্পত্তির কাগজ আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে গিয়ে বলে, এটা কোর্টের ব্যাপার।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. প্রশান্ত কুমার সাহা বলেন, এ বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেব। উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাকির হোসেন বলেন, কোনো ব্যক্তি ফৌজদারি কোনো মামলায় আদালতে দোষী সাব্যস্ত হলে তার সরকারি চাকরি পাওয়ার কোনো বিধান নাই। তবে মামলাটি সম্পর্কে আমাদের কিছু জানা নেই।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়