নির্ধারণ হবে আশুরার তারিখ : জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভা বসছে আজ

আগের সংবাদ

সংক্রমণ ঠেকানোর কৌশল কী

পরের সংবাদ

সুনামই হলো কাল : আশুলিয়ায় কলেজ অধ্যক্ষের খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার

প্রকাশিত: আগস্ট ১০, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ১০, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মো. আজিম উদ্দিন, সাভার (ঢাকা) থেকে : সাভারের আশুলিয়ায় প্রায় চার সপ্তাহ ধরে নিখোঁজ কলেজ অধ্যক্ষ মিন্টু চন্দ্র বর্মণের খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার করেছে র‌্যাব। এ ঘটনায় হত্যাকারী মূল হোতাসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে মরদেহের খণ্ডিত বাকি অংশ উদ্ধারে অভিযান চলছে বলে জানিয়েছে র‌্যাব। গতকাল সোমবার দুপুর ১টার দিকে আশুলিয়ার জামগড়া রূপায়ণ এলাকায় সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
নিহত মিন্টু চন্দ্র বর্মণ লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার টংভাঙ্গা ইউনিয়নের বাড়াইপাড়া গ্রামের শরত বর্মণের ছেলে। তিনি আশুলিয়ার জামগড়া এলাকার সাভার রেসিডেন্সিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে রবিউলকে আব্দুল্লাপুর থেকে আটক করা হয়। তার ভাগিনা বাদশাকে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ থেকে আর মোতালেবকে আশকোনা থেকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। পরে রবিউলের দেয়া তথ্যমতে, স্কুলের আঙিনা থেকে মিন্টুর শরীরের ৫টি খণ্ডিত অংশ উদ্ধার করা হয়। তাদের তথ্যমতে আশকোনার ডোবায় রাখা হয় মিন্টুর খণ্ডিত মাথা।
নিহতের পরিবারের স্বজনরা জানান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় আশুলিয়ার জামগড়া এলাকায় ভাড়া বাসায় থেকে টিউশনি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন অধ্যক্ষ মিন্টু চন্দ্র বর্মণ। গত ১৩ জুলাই আশুলিয়ার বেরন এলাকা থেকে তিনি নিখোঁজ হন। এরপর পরিবারের সদস্যরা অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান পাননি। তার ফোনও বন্ধ ছিল। পরে ২২ জুলাই তার ছোট ভাই দীপক চন্দ্র বর্মণ আশুলিয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। অভিযোগ জানানো হয় র‌্যাব সদর দপ্তরেও।
অভিযোগ পেয়ে ছায়া তদন্তে নামে র‌্যাব। তারা জানতে পারে, মিন্টু বর্মণকে হত্যার পর লাশ ৬ টুকরা করে স্কুলের মাঠে পুঁতে রাখা হয়েছে। দেহ থেকে মিন্টুর মাথা বিচ্ছিন্ন করে রাজধানীর দক্ষিণখানের আশকোনার একটি ডোবায় ফেলে দেয়া হয়।
র‌্যাব জানায়, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আশুলিয়ার জামগড়ায় রেসিডেন্সিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ এলাকায় মিন্টুর লাশ উদ্ধারে অভিযান শুরু করে র‌্যাব। মিন্টু চন্দ্র বর্মণ ৭ বছর ধরে আশুলিয়ার জামগড়া এলাকায় বসবাস করতেন। তিনি সেখানকার আমিন মডেল টাউন স্কুল এন্ড কলেজে শিক্ষকতা করতেন। ২ বছর আগে (২০১৯ সাল) মিন্টু চন্দ্র বর্মণসহ ৪ জন মিলে জামগড়া এলাকায় একটি বাসা ভাড়া নিয়ে সাভার রেসিডেন্সিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ নামে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। অন্য তিন সহপ্রতিষ্ঠাতা হলো- রবিউল ইসলাম, মোতালেব ও শামসুজ্জামান। মিন্টু বর্মণ ছিলেন সাভার রেসিডেন্সিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ। গত ১৩ জুলাই থেকে তার সন্ধান মিলছিল না। প্রায় ২৮ দিন ধরে তিনি নিখোঁজ ছিলেন।
স্কুলের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক সনেকা বেগম বলেন, মিন্টু অনেক ভালো ছিলেন। অনেক ভদ্র ছিলেন। মোতালেব ও রবিউলও ভালো ছিল। তারা এ কাজ করতে পারে এটা বিশ্বাসই হচ্ছে না। এমন স্কুলে আমার সন্তানকে আর পড়াব না। আমরা এখন অনেক আতঙ্কে রয়েছি।
র‌্যাব সদর দপ্তরের মিডিয়া উইয়ং কমান্ডার খন্দকার আল মঈন সংবাদ সম্মেলনে বলেন, প্রথমে ৭ জুলাই মিন্টুকে হত্যার পরিকল্পনা করে হত্যাকারীরা। পরে ১৩ জুলাই স্কুলটিতে কোচিং পরবর্তী সময়ে ১০৬ নম্বরে কক্ষে মিন্টুকে ডেকে নিয়ে যায় বাদশা ও মোতালেব। এ সময় মিন্টুর মাথায় হাতুড়ি দিয়ে বাদশা আঘাত করে। পরে পুরো শরীর ৬ টুকরো করে মাথা রাজধানীর আশকোনার একটি ডোবায় ফেলে দেয়। বাকি ৫ টুকরো স্কুলের আঙিনায় পুঁতে রাখে তারা।
তিনি আরো বলেন, মিন্টু বর্মণের সুনাম ও খুব ভালো শিক্ষক হওয়ায় পেশাগত হিংসা শুরু করে গ্রেপ্তারকৃতরা। এছাড়া প্রতিষ্ঠানের লভ্যাংশ নিয়েও তাদের মধ্যে মনোমালিন্য ছিল। এর জের ধরেই তাকে হত্যা করা হয়। এরপর থেকেই রবিউল পলাতক ছিল।
গতকাল সোমবার মধ্যরাতে রবিউলকে আব্দুল্লাপুর, তার ভাগিনা বাদশাকে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ থেকে আর মোতালেবকে আশকোনা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে রবিউলের দেয়া তথ্যমতে স্কুলের আঙিনা থেকে মিন্টুর শরীরের ৫টি খণ্ডিত অংশ উদ্ধার করা হয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়