নির্ধারণ হবে আশুরার তারিখ : জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভা বসছে আজ

আগের সংবাদ

সংক্রমণ ঠেকানোর কৌশল কী

পরের সংবাদ

বেশি দামের আশায় হিমাগারে আলু রেখে বিপাকে কৃষক : রংপুরের তারাগঞ্জ

প্রকাশিত: আগস্ট ১০, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ১০, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

সিরাজুল ইসলাম বিজয়, তারাগঞ্জ (রংপুর) থেকে : বেশি দামের আশায় হিমাগারে আলু মজুত করে রেখে বিপাকে পড়েছেন তারাগঞ্জের কৃষকরা। অন্যান্য বছর এ সময়ের মধ্যে হিমাগারের আলুর চার ভাগের তিন ভাগ বিক্রি হয়ে যায়। তবে এবারের চিত্র পুরো উল্টো। উপজেলার তিনটি হিমাগারে এখনো প্রায় ৩ লাখ ২৮ হাজার বস্তা আলু অবিক্রীত অবস্থায় পড়ে আছে।
তারাগঞ্জে ১৫ দিন আগেও আড়তে ও হিমাগারে প্রতি বস্তা (৫০ কেজি) আলু বিক্রি হয়েছে ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকায়। এখন সেই দাম গড়ে বস্তাপ্রতি কমে গেছে ২০০ টাকা।
উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, তারাগঞ্জে এবার ৪ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে আলুর চাষ হয়েছিল। বেশি দাম পাওয়ার আশায় চাষি ও ব্যবসায়ীরা এ আলু উপজেলার তিনটি হিমাগারে মজুত করে রাখেন। কিন্তু দাম পড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন তারা। সোমবার এনএন হিমাগারের সামনে কথা হয় ইকরচালী গ্রামের কৃষক সবুজ আহম্মেদের সঙ্গে। গত বছর দাম ভালো পাওয়ায় তিনি ১০ একরের জায়গায় ১৫ একর জমিতে আলু লাগিয়েছিলেন।
সবুজ জানান, বীজ, কীটনাশক ও শ্রমিকের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় এ বছর আলু উৎপাদনে খরচ হয়েছে বেশি। সাদা জাতের এক বস্তা আলু উৎপাদন ও হিমাগারে রাখতে খরচ হয়েছে ৮০০ টাকা। তা বর্তমানে বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকায়। আর লাল জাতের এস্ট্রারিক্স ও কার্টিনাল জাতের আলু উৎপাদন ও রাখতে খরচ হয়েছে ৮৫০ টাকা এবং বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৬৫০ টাকায়। ওই হিমাগারের সামনে আলু বিক্রির জন্য কাগজ নিয়ে ঘুরছিলেন নারায়ণজন গ্রামের বক্কর মিয়া। তিনি বলেন, ‘গত বছর পাঁচ গুণ লাভ পায়া মানুষ হুমড়ি খায়া আলু নাগাছলো। কিন্তু এ্যালা সেই আলু নিবার লোক নাই। যায় আলু চাষ করি স্টোরোত থুইছে, তারে করি এখন লস হওছে। হিসাব করলে দেখা যায় এক কেজি আলুত এ পর্যন্ত খরচ ১৬ টাকা। তাক ১২ টাকার বেশি বেচার পাওছু না। আমন চাষের খরচ নাই, এ জন্যে ঠেকাত পড়ি লস করি আলু বেচার আলচু।’ বামনদীঘির মোস্তফা মিয়া হিমাগার থেকে আলু কিনে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় পাঠান। তিনি জানান, গত বছর আলু কিনে হিমাগারে রেখে প্রতি কেজিতে ১৫ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত লাভ করেছেন। কিন্তু এখন তার যে পরিমাণ আলু কেনা আছে তা বিক্রি করলে কেজিপ্রতি তিন থেকে চার টাকা লোকসান গুনতে হবে। এজন্য তিনি আলু হিমাগার থেকে বের করছেন না।ব্রাদার্স হিমাগারের পরিচালক ইকরামুল হক জানান, এ সময় প্রতি বছর হিমাগার থেকে আলু বের করার হিড়িক লেগে যায় কৃষক ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে। কিন্তু এবার তেমন কোনো কর্মব্যস্ততা নেই। তাদের হিমাগারে ৭৫ হাজার বস্তার মধ্যে এখনো ৬৮ হাজার বস্তা আলু অবিক্রীত অবস্থায় আছে।
এদিকে এনএন হিমাগারের ব্যবস্থাপক আনারুল ইসলাম জানান, প্রতিটি হিমাগারের মালিক আলুর বিপরীতে কৃষকদের ঋণ দিয়েছে। এখন দর হ্রাস পেতে থাকলে হিমাগার মালিকদেরও লোকসান হবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ঊর্মি তাবাসসুম বলেন, গত বছর বাজারে আলুর সর্বোচ্চ দর গেছে। তা দেখে তারাগঞ্জের মানুষ প্রায় ৮০০ হেক্টর বেশি জমিতে আলুর চাষ করেন। তাছাড়া এবার বৃষ্টি না হওয়ায় আলুর বাম্পার ফলন হয়। এ কারণে বাজারে এখন সবজিটির দাম কম।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়