নির্ধারণ হবে আশুরার তারিখ : জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভা বসছে আজ

আগের সংবাদ

সংক্রমণ ঠেকানোর কৌশল কী

পরের সংবাদ

জিয়াউল হক জুয়েল মেয়র, বাউফল পৌরসভা > আলোকিত পৌরসভা গড়তে চাই

প্রকাশিত: আগস্ট ১০, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ১০, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

অতুল পাল, বাউফল (পটুয়াখালী) থেকে : বাউফল পৌরসভাকে আলোকিত পৌরসভা করতে চাই। পৌরবাসীর জন্য শিক্ষা, বাসস্থান, চিকিৎসা, উন্নত যাতায়াত ব্যবস্থাসহ অন্যান্য মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা এবং পৌরসভা থেকে পৌরবাসী যাতে আধুনিক সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা পেতে পারেন সে লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছি। পৌরবাসী যাতে সুখে-শান্তিতে বসবাস করতে পারেন সেজন্য মাদক ও সন্ত্রাসকে চিরতরে নির্মূল করতে চাই। পৌর কার্যালয়কে শতভাগ দুর্নীতিমুক্ত রাখতে চাই।
এ কথাগুলো বলেছেন পটুয়াখালীর বাউফল পৌরসভার মেয়র জিয়াউল হক জুয়েল ভোরের কাগজের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে। তিনি বলেন, ২০০১ সালে বাউফল পৌরসভা প্রতিষ্ঠা করা হয়। এরপর ২০১২ সালের নির্বাচনে আমার নির্বাচনী ইশতেহারে অন্যতম অঙ্গীকার ছিল আলোকিত বাউফল পৌরসভা গড়ার। নির্বাচনের পর ২ জুন আমি মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পেয়ে বাউফল পৌরসভাকে আলোকিত করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ শুরু করি। বর্তমানে বাউফল পৌরসভার আয়তন ৬.৫ বর্গকিলোমিটার। জনসংখ্যা প্রায় ৫০০ হাজার। ২০১৬ সালে বাউফল পৌরসভা ‘এ’ গ্রেডে উন্নীত হয়েছে।
‘এ’ গ্রেডে উন্নীত হওয়ার পর পৌরভবন নির্মাণের জন্য প্রায় তিন কোটি টাকা মূল্যের ৫২ শতাংশ জমি আমি নিজে দান করেছি। ২০১৮ সালে পৌরভবন নির্মাণকাজ শেষ হয়। সরকারিভাবে ৩ কোটি ২৫ লাখ টাকা বরাদ্দ থাকলেও আমার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে পৌর ভবনের জন্য আরো প্রায় ২ কোটি টাকা ব্যয় করেছি।
মেয়র বলেন, পৌরসভার প্রায় সব রাস্তাতেই বাতি দেয়া হয়েছে। পৌরসভার অভ্যন্তরীণ সব রাস্তাঘাটই পাকা করা হয়েছে। বাউফল পৌর এলাকার মধ্যে কোনো সাঁকো নাই। যত সাঁকো কিংবা ভাঙা ব্রিজ ছিল তার সবকই নতুন ব্রিজ করা হয়েছে। পৌরসভায় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর কর্তৃক নির্মিত ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের আওতায় ১০ কিলোমিটার সুপেয় পানি সরবরাহের লাইনের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বাসাবাড়িতে পানির সংযোগ আগামী এক মাসের মধ্যেই দেয়া শুরু করা হবে। কিছু রাস্তায়

ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় পৌরবাসীসহ যানবাহন চলাচলে সমস্যা হচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, এর পরিমাণ খুই কম। করোনার কারণে আমরা ওই কাজগুলো করতে পারছি না। আশা করি, দুয়েক মাসের মধ্যেই পৌর শহরের বাকি ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন করা হবে। পৌর শহরের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া কয়েকটি খালের পাড় প্রভাশালীরা দখল করে স্থাপণা নির্মাণ করেছে। অবৈধ দখলদারদের কাছ থেকে ওই খালের পাড় উদ্ধারে কোনো পরিকল্পনা রয়েছে কিনা জানতে চাইলে মেয়র জুয়েল বলেন, কোনোভাবেই অন্যায়ভাবে খালের পাড় দখল করতে দেয়া হবে না। ইতোমধ্যেই আমি খালের পাড়ে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা কিছু স্থাপনা উচ্ছেদ করেছি। এজন্য আমাকে মামলায়ও জড়ানো হয়েছে। এখন সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে আমি নিজে দাঁড়িয়ে থেকে সেগুলো উদ্ধার করব।
২০২১-২০২২ সালের বাজেট প্রণয়ন সম্পর্কে মেয়র বলেন, করোনার কারণে আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দিতে পারি নাই। তবে বাজেট প্রণয়ন প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। কী পরিমাণ বাজেট হতে পারে এমন প্রশ্নে মেয়র বলেন, ২০২০-২০২১ অর্থবছরে ৩০ কোটির একটু বেশি ছিল। ২০২১-২০২২ অর্থবছরে ৩৩ কোটি টাকার মতো হতে পারে। পৌরবাসী এখন কর পরিশোধে আগ্রহী হচ্ছেন। আমি বাড়ি বাড়ি ঘুরে কর প্রদানে পৌরবাসীকে উদ্বুদ্ধ করেছি। বর্তমানে কর আদায়ের হার প্রায় ৮০ শতাংশের উপরে রয়েছে।
মেয়র বলেন, পৌরসভা এলাকায় দুস্থ ভাতা, বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, অসচ্ছল ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা এবং মাতৃত্বকালীন ভাতা প্রদান চলমান রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে করোনা রোগীদের সহায়তার জন্য ‘মেয়র অক্সিজেন ব্যাংক’ করে সেখানে আমি অক্সিজেন সিলিন্ডার দিয়ে সহায়তা করছি। ইতোমধ্যেই শেখ কামালের ৭২তম জন্মদিন উপলক্ষে ১ হাজার ৪০০ লিটারের চারটি অক্সিজেন সিলিন্ডার বাউফল হাসপাতালে দেয়া হয়েছে। আরো চারটি সিলিন্ডার পৌর ভবনে সংরক্ষিত রয়েছে।
বাউফল পৌর শহরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত বাউফল-বগা খালের মদনপুরা অংশে ইকোপার্ক নির্মাণে দুর্নীতি হয়েছে বলে কেউ কেউ বলছেন। এ প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, ইকোপার্ক নামে কোনো প্রকল্প নাই। খালের এক অংশ ভেঙে যাচ্ছিল, সেখানে গাইডওয়াল দেয়া হয়েছে। কিন্তু গাইডওয়াল রাখা যাচ্ছে না। এ কারণে হয়তো কেউ মনে করছেন ঠিকাদার ভালো কাজ করেননি। তবে অভিযোগটি সত্য নয়।
মেয়র জুয়েল বলেন, আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শে লালিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কর্মী। প্রধানমন্ত্রী বাউফল পৌরসভাকে উন্নয়নের জন্য অনেক কিছু দিচ্ছেন। এজন্য আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞ। আমি বাউফল পৌরসভাকে মাদকমুক্ত, সন্ত্রাসমুক্ত করে প্রত্যেকটি মানুষকে আলোকিত করতে চাই। শিশু থেকে বৃদ্ধ, ছাত্র-শিক্ষক, চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী সবাইকেই আলোকিত করতে চাই। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যাতে আলোতিক পৌসভার সুফল ভোগ করতে পারে সেদিকেই আমার লক্ষ্য। সর্বক্ষেত্রে সুশাসনও প্রতিষ্ঠা করতে চাই। পৌরভবনকে দুর্নীতিমুক্ত করতে চাই। পৌরবাসীর মনে স্থায়ী ঠিকানা গড়তে চাই।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়