নির্ধারণ হবে আশুরার তারিখ : জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভা বসছে আজ

আগের সংবাদ

সংক্রমণ ঠেকানোর কৌশল কী

পরের সংবাদ

খুলনায় হিন্দু গ্রামে হামলা : সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা আর কতকাল

প্রকাশিত: আগস্ট ১০, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ১০, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

খুলনার রূপসা উপজেলার শিয়ালী গ্রামে চারটি মন্দির এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের বেশ কিছু দোকান ও কয়েকটি বাড়িতে ভাঙচুর চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। গত শনিবার শতাধিক দুর্বৃত্ত দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ওই গ্রামে হামলা চালায়। এ সময় চারটি মন্দির, ছয়টি দোকান ও একটি বাড়ি ভাঙচুর করা হয়। এ ঘটনা দুঃখজনক ও বেদনাদায়ক। আমরা বলি আমাদের দেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। কিন্তু ইদানীংকালে অসহিষ্ণুতা ও অধৈর্যের যে প্রকাশ প্রায়ই দেখা যাচ্ছে- তা কোনোভাবেই প্রত্যাশিত নয়। গ্রামবাসী অভিযোগ করেন, শুক্রবার রাত ৯টার দিকে পূর্বপাড়া মন্দির থেকে কয়েকজন নারীভক্ত কীর্তন করতে করতে শিয়ালী মহাশ্মশানের দিকে যাচ্ছিলেন। পথের মাঝে একটি মসজিদ ছিল। মসজিদের ইমাম নারীদের কীর্তন করতে নিষেধ করেন। তখন কিছুটা তর্কাতর্কি হয়। এ নিয়ে থানায় বৈঠকের কথা ছিল। কিন্তু পরদিন শনিবার বিকালে অতর্কিত শতাধিক যুবক রামদা, চাপাতি, কুড়াল নিয়ে শিয়ালী গ্রামে হামলা চালায়। এ সময় কয়েকজন বাধা দিতে গেলে তাদের পিটিয়ে আহত করা হয়। পরে এলাকাবাসী প্রতিরোধ তৈরি করার আগেই যুবকরা পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। ১০ জনকে পুলিশ গ্রেপ্তারও করেছে। গত পাঁচ বছরে এই একই ধরনের আরো ১০টির বেশি ঘটনা ঘটেছে। সেসব ঘটনার কোনোটিরই এখনো পর্যন্ত বিচার হয়নি। কোনোটির তদন্ত এখনো শেষ হয়নি, কোনোটি আদালতে বিচারাধীন অবস্থায় আছে। খুলনার ঘটনায় বিচার হবে কিনা আমাদের জানা নেই। নারীদের কীর্তনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে একটি ধর্মীয় সম্প্রদায়ের ওপর কোনো যুক্তিতেই হামলা হতে পারে না। আমরা লক্ষ করছি, ইসলামের অবমাননা করা হয়েছে- এই জিকির তুলে স্বার্থান্ধ সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী মাঝে মাঝেই ধর্মপ্রাণ নিরীহ মানুষকে এমনভাবে উত্তেজিত করছে যে, তারাও হয়ে পড়ছে উন্মত্ত। সত্যি সত্যি ধর্মের অবমাননা হচ্ছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে না অথবা হলেও প্রকৃত অপরাধীর পরিবর্তে টার্গেট হয়ে পড়ছে সামগ্রিকভাবে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়। এ প্রবণতা বিপজ্জনক। আক্রান্তরা বলছেন, পুলিশকে আগে হামলার আশঙ্কার কথা জানানো হলেও তারা কোনো নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেয়নি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণেও প্রশাসন চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। সংখ্যালঘুদের ওপর এ রকম আক্রমণ জাতীয় সংহতির ওপর বিরাট আঘাত। এ ধরনের ঘটনার রোধ করতে না পারলে বাংলাদেশে মিলেমিশে বসবাসের যে সংস্কৃতি তা বাধাগ্রস্ত হবে এবং মানুষের জীবনযাপনের স্বাভাবিকতা হারাবে। আমরা বলব, দ্রুত দায়ীদের চিহ্নিত করা এবং তাদের যথোপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করা। সঙ্গে সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত মন্দির, দোকান ও বাড়িঘর পুনর্র্নিমাণ-মেরামত করাসহ ক্ষতিগ্রস্তদের ন্যায়সঙ্গত ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করতেও হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়