নির্ধারণ হবে আশুরার তারিখ : জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভা বসছে আজ

আগের সংবাদ

সংক্রমণ ঠেকানোর কৌশল কী

পরের সংবাদ

অবাধে বালু তোলায় নদীতে ধসে পড়ছে সামাজিক বন : হুমকিতে পরিবেশের ভারসাম্য

প্রকাশিত: আগস্ট ১০, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ১০, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

খোরশেদ আলম, শেরপুর থেকে : ঝিনাইগাতী উপজেলার মহারশি নদী থেকে অবাধে চলছে বালু উত্তোলন। বালু মহালের ইজারাদার শাহজাহান স্বপনের লোকজন নদীর পাড় কেটে ও গভীর গর্ত করে অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলন করে আসছে। নদীর পাড় ঘেঁষে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে অবাধে বালু উত্তোলনের ফলে বনবিভাগের সন্ধ্যাকুড়া বিটের গোমড়া সামাজিক বনায়নের বাগান ধসে পড়তে শুরু করেছে। এতে পরিবেশের ভারসাম্য হুমকির সম্মুখীন হয়ে পড়েছে।
নালিতাবাড়ি উপজেলার মধুটিলা রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. আব্দুল করিম বলেন, মহারশি নদীর গোমড়া মৌজায় তাদের সামাজিক বনের পাশে এক একর জমি থেকে বালু উত্তোলনের জন্য জেলা প্রশাসন থেকে ইজারা দেয়া হয়।
জানা গেছে, ওই এক একর জমিতে ৫/৬টি ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলনের সুযোগ রয়েছে। কিন্তু ইজারাদারের লোকজন নদীর ৭/১০ একর জমিতে ১৫/২০টি ড্রেজার মেশিন বসিয়ে অবাধে বালু লুটপাট করা হচ্ছে।
শুধু তাই নয় গোমড়া মৌজার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের প্রায় জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত বসানো হয়েছে বালু উত্তোলন যন্ত্র। বেপরোয়াভাবে বালু উত্তোলন করায় একদিকে যেমন পরিবেশের ভারসাম্য হুমকির সম্মুখীন হয়ে পড়েছে। অপরদিকে সরকার বঞ্চিত হচ্ছে বিপুল পরিমাণের রাজস্ব আয় থেকে। তবে হলদীগ্রাম সীমান্ত ফাঁড়ির বিজিবিদের পক্ষ থেকে সীমান্তের ১৫০ ফুটের মধ্যে বালু উত্তোলন না করার জন্য বলা হয়েছে। জানা গেছে, ওইসব বালু উত্তোলন যন্ত্রের সাহায্যে দিনে রাতে অবাধে বালু উত্তোলন ও পরিবহন করা হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, নদীটি বালু সংকটে পড়ায় বালু উত্তোলনকারীরা নদীর পাড় ও নদীর বুকে জেগে ওঠা চরে গভীর গর্ত করে অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলন করে আসছেন। এতে গোমড়া সামাজিক বন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। প্রতিদিন ভেঙে পড়ছে বনের গাছ। অবাধে বালু উত্তোলন, পরিবহন করায় ও অতিরিক্ত বালু বুঝাই ট্রাক অবাধে যাতায়াতের কারণে দুপাশে এলজিইডির রাস্তাঘাট ভেঙে লোক চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ফলে দুর্ভোগে পড়েছে এলাকার শত শত মানুষ।
উপজেলা প্রকৌশলী মোজাম্মেল হক বলেন, অতিরিক্ত বালু বুঝাই ট্রাক অবাধে যাতায়াতের কারণে রাস্তা টিকিয়ে রাখা সম্ভব হচ্ছে না। তার মতে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে রাস্তা নির্মাণের ব্যবস্থা করা হবে। বনবিভাগের শেরপুরের সহকারী বন সংরক্ষক ড. প্রান্তোষ চন্দ্র রায় বলেন, গোমড়া সামাজিক বন ঘেঁষে নদীতে জেলা প্রশাসনের ১ একর জমি রয়েছে।
প্রতি বছর ওই জমি থেকে বালু উত্তোলনের জন্য ইজারা দেয়া হয়। আর ইজারাদারের লোকজন নিয়মনীতি উপেক্ষা করে গায়ের জোরে নদীর পাড় ঘেঁষে বালু উত্তোলন করে সামাজিক বনায়ন ধ্বংস করে চলছে। বাধা নিষেধ করেও কোনো কাজে আসছে না। তিনি বলেন, সামাজিক বনায়ন ধ্বংস ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার্থে বালু মহালটি ইজারা না দিতে জেলা প্রশাসনকে বহুবার আবেদন নিবেদন করলেও কোনো কাজে আসেনি। তবে বন ধ্বংস করে বালু উত্তোলনের বিষয়ে উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি। ইজারাদার শাহজাহান স্বপনের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি ঢাকায় আছি। ফিরলে আপনার সঙ্গে কথা হবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারুক আল মাসুদ বলেন, এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়