শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি : চলতি সপ্তাহেই শতভাগ শিক্ষক টিকার আওতায়

আগের সংবাদ

উৎসবের গণটিকায় বিশৃঙ্খলা

পরের সংবাদ

টানা বর্ষণে মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পে জলজট

প্রকাশিত: আগস্ট ৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মনিরুল ইসলাম মনির, মতলব উত্তর (চাঁদপুর) : কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিপাতে চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের বেড়িবাঁধের ভেতরে অনেক কৃষিজমিতে জলজটের পরিমাণ বেড়ে গেছে। জলাবদ্ধতা দূর না হওয়ায় সেখানকার আমন ধান চাষ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা। বৃহস্পতি ও শুক্রবারের দুদিনের টানা বর্ষণে সেচ প্রকল্পে জলজট দেখা দিয়েছে। পানির নিচে রয়েছে রোপা আমন ধান। পানি নিষ্কাশনে বিলম্ব হলে ধান গাছে পচন দেখা দেয়া সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করেন কৃষিবিদরা।
উপজেলা কৃষি কার্যালয় ও চাঁদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্র জানায়, মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের বেড়িবাঁধের ভেতর চলতি মৌসুমে নয় হাজার হেক্টর কৃষিজমিতে আমন ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এতে আমন উৎপাদনের সম্ভাব্য পরিমাণ ধার্য করা হয় ৩৫ হাজার টন। গত বছর সেখানে আমন ধান উৎপাদিত হয়েছিল ৩৩ হাজার টন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. সালাউদ্দিন বলেন, বৃহস্পতি ও শুক্রবার সেচ প্রকল্পের বেড়িবাঁধের ভেতরে টানা বৃষ্টি হয়। এতে অনেক নিচু কৃষিজমি ও বেশ কয়েকটি বিলে দুই থেকে তিন ফুট উচ্চতার জলাবদ্ধতা তৈরি হয়। সেটি দূর করতে পদক্ষেপ নেয়নি পাউবো কর্তৃপক্ষ। এতে গত আউশ মৌসুমে দুই হাজার হেক্টর কৃষিজমিতে আবাদ করতে পারেননি চাষিরা।
কৃষি কর্মকর্তা মো. সালাউদ্দিন আরো বলেন, চলতি জুলাইয়ের শুরু থেকে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ আরো বেড়ে যায়। এতে বেড়িবাঁধটির ভেতরে কৃষিজমিতে আগের জলাবদ্ধতার সঙ্গে ওই বৃষ্টির পানি যোগ হয়। এখন এসব জমিতে গভীর জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। এ কারণে চলতি মৌসুমে সেখানকার এক হাজার হেক্টর কৃষিজমিতে আমনের আবাদ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। আমন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রাও অর্জিত না হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। শনিবার সরেজমিন দেখা গেছে, সেচ প্রকল্পের বেড়িবাঁধের ভেতরে ছেংগারচর, আদুরভিটি, টাকুরচর, গজরা, নারী, আমুয়াকান্দা, সিপাইকান্দি, ঠেটালিয়া, রাঢ়িকান্দি, ছোট ও বড় হলদিয়া, লুধুয়া, নন্দলালপুরসহ আরো কয়েকটি এলাকার বেশ কিছু নিচু জমি ও বিলে দৃশ্যত তিন-চার ফুট উচ্চতার জলাবদ্ধতা। গেল আউশ মৌসুমেও এসব জমিতে ধানের আবাদ করা হয়নি।
আগাছা, শাপলা ও শেওলায় ভরে গেছে এসব জমি। জলাবদ্ধতা দূর করার উদ্যোগও চোখে পড়েনি।
উপজেলার কলাকান্দা এলাকার চাষি বাদল মিয়া বলেন, জমিতে বৃষ্টির পানি আটকাইয়া রইছে। রোপা আমন ধান পানির নিচে এ নিয়া খুব দুশ্চিন্তায় আছি।
সেচ প্রকল্পটির ফতেপুর, ঠেটালিয়া ও সেপাইকান্দি এলাকার পানি ব্যবহারকারী দলের সাধারণ সম্পাদক গোলাম নবী অভিযোগ করেন, বেড়িবাঁধের ভেতরে অনেক খাল বেদখল হয়ে আছে।
প্রভাবশালী ব্যক্তিরা এগুলো দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করেছেন। পাউবো কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিচ্ছে না। জলাবদ্ধতা দূর করারও উদ্যোগ নেই তাদের। এতে ক্ষতির শিকার হচ্ছেন চাষিরা। জলাবদ্ধতা দূর করতে এবং অবৈধ স্থাপনা সরাতে পাউবোকে একাধিকবার জানানো হয়েছে।
জানতে চাইলে মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা চাঁদপুর পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন, জলাবদ্ধতা দূর করতে দুটি পাম্প হাউস কাজ করছে।
প্রায় প্রতিদিন বৃষ্টি হওয়ায় ওই পানি সম্পূর্ণভাবে সরানো যাচ্ছে না। বেশ কিছু নিষ্কাশন খাল বেদখলে থাকায় নিচু জমির পানি মূল খালে আনা যাচ্ছে না। এজন্য জলাবদ্ধতা থেকেই যাচ্ছে। তবু জলাবদ্ধতা নিরসনের চেষ্টা চলছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়