পরীমনরি ঘনষ্ঠি কে এই কবীর

আগের সংবাদ

তালিকায় হাইপ্রোফাইলদের নাম

পরের সংবাদ

রিওর পর ব্রাজিলের টোকিও জয়

প্রকাশিত: আগস্ট ৮, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ৮, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : টোকিও অলিম্পিকের পুুরুষ ফুটবলের ফাইনালে গতকাল স্পেনকে ২-১ গোলের ব্যবধানে হারিয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো স্বর্ণপদক জয় করেছে ব্রাজিল। ২০১৬ সালে নিজ দেশে হওয়া রিও অলিম্পিকে প্রথম সোনার স্বাদ পায় সেলেসাওরা। রিও জয়ের পর এবার টোকিওতেও স্বর্ণ জয় করল তারা। ম্যাচটিতে ব্রাজিলের হয়ে প্রথমার্ধের শেষ মুহূর্তে গোল করেন ম্যাথিউস চুনা। ৬৪ মিনিটের সময় কার্লোস সোলার গোল করে স্পেনকে সমতায় ফেরান। অপরদিকে ১০৮ মিনিটের সময় ম্যালকম সেলেসাওদের হয়ে জয়সূচক গোলটি করেন। টোকিও অলিম্পিকে সর্বোচ্চ ৫টি গোল করে সেরা গোলদাতা হয়েছেন ব্রাজিলের রিচার্লিসন।
অলিম্পিকের ইতিহাসে ষষ্ঠ দল হিসেবে ব্রাজিল ২টি বা তার বেশি স্বর্ণপদক জয় করেছে। অলিম্পিকে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে সফল দল হলো হাঙ্গেরি এবং গ্রেট ব্রিটেন। তারা তিনবার করে অলিম্পিকে সেরা হয়েছে। অপরদিকে ২টি করে স্বর্ণপদক জয় করেছে আর্জেন্টিনা, সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন ও উরুগুয়ে। স্পেন ও ব্রাজিলের মধ্যকার ম্যাচটি ছিল অলিম্পিকের ২৭তম ফাইনাল ম্যাচ।
হাঙ্গেরি, গ্রেট ব্রিটেন ও উরুগুয়ে অলিম্পিকে অবশ্য সাফল্য পেয়েছে শুরুর দিকে। বিশেষ করে গ্রেট ব্রিটেন ও উরুগুয়ে আধুনিক সময়ে অলিম্পিকে আর সাফল্য পায়নি। গ্রেট ব্রিটেন অলিম্পিকের ফুটবলে স্বর্ণ জয় করেছিল ১৯০০ সালে, দ্বিতীয়বার ১৯০৮ সালে ও তৃতীয়বার ১৯১২ সালে। ১৯০০ সালেই অলিম্পিকে প্রথমবারের মতো ফুটবল যাত্রা শুরু করে। ১৮৯৬ সালে হওয়া অলিম্পিকের প্রথম আসরে ফুটবল ছিল না। অপরদিকে উরুগুয়ে ১৯২৪ ও ১৯২৮ সালে অলিম্পিকে সেরা হয়। হাঙ্গেরি ১৯৫২, ১৯৬৪ ও ১৯৬৮ সালে শিরোপা জয় করে। সোভিয়েত ইউনিয়ন স্বর্ণ জেতে ১৯৫৬ ও ১৯৮৮ সালে। দুইবার স্বর্ণ জয় করা দেশগুলোর মধ্যে সাম্প্রতিক সময়ে শিরোপা জয় করেছে আর্জেন্টিনা। তারা ২০০৪ ও ২০০৮ সালে টানা দুইবার নিজ দেশে সোনার পদক নিয়ে যায়। ২০০৮ সালে আর্জেন্টিনা অলিম্পিক দলের হয়ে খেলেছিলেন লিওনেল মেসি। তাছাড়া একবার করে অলিম্পিকে স্বর্ণ জয় করেছে যুগোস্লাভিয়া, পোল্যান্ড, ওয়েস্ট জার্মানি, নাইজেরিয়া, ফ্রান্স, চেকস্লাভিয়া, ইতালি, সুইডেন, মেক্সিকো ও বেলজিয়াম।
অলিম্পিকে ১৯৯২ সালের পর যে ৫টি আসর হয়েছে এর মধ্যে ৪টিতেই ব্রাজিল পদক জয় করেছে। ১৯৯৬ সালে আটলান্টা অলিম্পিকে ব্রোঞ্জ, ২০০৮ সালে বেইজিং অলিম্পিকে ব্রোঞ্জ, ২০১২ সালে লন্ডন অলিম্পিকে রৌপ্য ও ২০১৬ সালে রিও অলিম্পিকে স্বর্ণপদক জয় করেছে তারা। অপরদিকে স্পেন ২০০০ সালের সিডনি অলিম্পিকের পর টানা ২টি অলিম্পিকের মূলপর্বে জায়গা করে নিতে পারেনি। ২০১২ সালে লন্ডন অলিম্পিকে জায়গা পেয়েও গ্রুপপর্ব থেকে বিদায় নিয়েছিল। ১৯৯২ সালে স্পেনে হয়েছিল অলিম্পিক। আর আয়োজক দেশ হিসেবে তারা সরাসরি খেলার সুযোগ পেয়েছিল এবং শেষ পর্যন্ত চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। স্পেন যদিও এবার স্বর্ণ জয় করতে পারেনি তবে ২০০০ সালের পর ফুটবলে প্রথমবারের মতো রৌপ্যপদক পেয়েছে তারা। সিডনি অলিম্পিকেও রৌপ্য পেয়েছিল স্পেন।
এদিকে এবারের টোকিও অলিম্পিকের ফাইনালে জায়গা করে নিয়ে ব্রাজিল টানা তৃতীয়বার অলিম্পিকের ফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে। অলিম্পিকের ইতিহাস প্রায় পাঁচ দশক বা পঞ্চাশ বছর পর প্রথম কোনো দল হিসেবে ব্রাজিল ফাইনালে যাওয়ার হ্যাটট্রিক করেছে। প্রায় ৫০ বছর আগে একমাত্র দল হিসেবে টানা ৩টি অলিম্পিকের ফাইনালে যাওয়ার কীর্তি দেখিয়েছিল হাঙ্গেরি। এখন পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ব্রাজিলের অনূর্ধ্ব-২৩ বা অলিম্পিক দলও বেশ ভালো খেলছে। অলিম্পিকে ১৯৯২ সাল থেকে অনূর্ধ্ব-২৩ দলের অংশগ্রহণের প্রচলন করা হয়। এরপর থেকে ব্রাজিলের তরুণরা আধিপত্য দেখাচ্ছে।
ম্যাচটির প্রথমার্ধের বাঁশি বাজানোর ঠিক আগ মুহূর্তে গোলটি করেন মাথিউস চুনা। বল বলতে গেলে অনেকটা বাইরে থেকে অসাধারণ দক্ষতায় পেনাল্টি বক্সের ভেতর পাঠান দানি আলভেস। আর সে বল থেকে গোল করেন চুনা। ম্যাচের ৬৪ মিনিটের সময় কার্লোস সোলার স্পেনকে সমতায় ফেরান। তবে দ্বিতীয়ার্ধে রিচার্লিসনের করা একটি শটবারে লেগে ফিরে আসে। আবার স্পেনেরও করা ২টি শটবারে লেগে ফিরে আসে। নির্ধারিত সময়ে দুদলের কেউ আর বল জালে জড়াতে সমর্থ হয়নি। ফলে ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। আর এ অতিরিক্ত সময়ের ১০৮ মিনিটের মাথায় ম্যালকম গোল করে ব্রাজিলকে লিড এনে দেন। এই গোল স্পেন আর শোধ করতে পারেনি। ফলে ব্রাজিল টানা দ্বিতীয়বারের মতো অলিম্পিকের স্বর্ণপদক জয় করল।
এবারের অলিম্পিকে সর্বোচ্চ ৫টি গোল করেছেন ব্রাজিলের রিচার্লিসন। তিনি গ্রুপপর্বের প্রথম ম্যাচে জার্মানির বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করেন। গ্রুপপর্বের শেষ ম্যাচে সৌদি আরবের বিপক্ষে করেন জোড়া গোল। যদিও নক-আউট পর্বে তিনি আর কোনো গোল করতে পারেননি। তবে গতকালের ফাইনালে তার গোল সংখ্যা বাড়ানোর সুযোগ ছিল পেনাল্টি শট থেকে। কিন্তু তিনি পেনাল্টি থেকে বল জালে জড়াতে সমর্থ হননি। তবে তাতেও গোল করার দিক দিয়ে অন্যদের চেয়ে অনেক এগিয়ে ছিলেন রিচার্লিসন। এবারের অলিম্পিকে ছেলেদের ফুটবলে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩টি গোল করেছেন স্পেনের রাফা মির। মানে রিচার্লিসনের ধারে কাছে যেতে পারেননি তিনি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়