জন্মদিন : প্রমথ চৌধুরীর সাহিত্যচিন্তা

আগের সংবাদ

বঙ্গবন্ধুর চোখে বঙ্গমাতা

পরের সংবাদ

জীবননগরে স্থানীয় শহীদ দিবস আজ

প্রকাশিত: আগস্ট ৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

জীবননগর (চুয়াডাঙ্গা) প্রতিনিধি : চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে স্থানীয় শহীদ দিবস আজ ৭ আগস্ট। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের এই দিনে দেশমাতৃকাকে স্বাধীন করার লক্ষ্যে ভারতের বানপুর থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি দল জীবননগর উপজেলার ধোপাখালী সীমান্তে প্রবেশ করলে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী তাদের ওপর অতর্কিত ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং শুরু হয় তুমুল যুদ্ধ। যুদ্ধে ৫ বীর মুক্তিযোদ্ধা ইপিআর জওয়ান শহীদ হন। সমানসংখ্যক সৈন্য হারায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। মুক্তিবাহিনীর ব্যাপক গুলিবর্ষণ ও প্রতিরোধের মুখে হানাদার বাহিনী পিছু হটতে বাধ্য হয়।
ধোপাখালী সীমান্তে যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী মুক্তিযোদ্ধা নিজামউদ্দীন জানান, পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ৮নং সেক্টরের বানপুর সাব-সেক্টর কমান্ডার ক্যাপ্টেন (পরবর্তী সময়ে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল) মোস্তাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে লে. মোস্তফা, ইপিআর জওয়ান ও স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে জীবননগরের ধোপাখালী গ্রামের আজহারুল করিম রেজু, রেজাউল করিম আলো, আবুল কাসেম, সদর আলী, রইচ উদ্দীন, দর্শনার আব্দুস সামাদ ও আক্তার হোসেন, জয়রামপুর গ্রামের সাইদুর রহমান, জীবননগরের নিজাম উদ্দীন প্রমুখ ৭ আগস্ট প্রত্যুষে ধোপাখালী সীমান্ত দিয়ে দেশে প্রবেশ করেন। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধাদের এ প্রবেশের খবর হানাদার বাহিনীর দোসর স্থানীয় রাজাকাররা আগেই পেয়ে ছুটে যায় পাকিস্তানিদের ক্যাম্পে। এলাকার মানুষের মধ্যে আতঙ্কিত ও ঘৃণ্য ব্যক্তি হিসেবে আবির্ভূত পাকিস্তানি ক্যাপ্টেন মো. মুনছুর আলীর কাছে রাজাকাররা মুক্তিবাহিনীর কথা ফাঁস করে দেয়। এ সময় ক্যাপ্টেন মুনছুর বেলুচ রেজিমেন্টের সৈন্যদের নিয়ে ধোপাখালী বাজার মোড়ে মুক্তিবাহিনীর আসার অপেক্ষায় ওঁৎ পেতে থাকে। মুক্তিবাহিনী ধোপখালী বাজারে প্রবেশ করার সঙ্গে সঙ্গে হানাদার বাহিনী তাদের ওপর অতর্কিত ঝাঁপিয়ে পড়লে মুক্তিযোদ্ধারা হতচকিত হয়ে পড়েন। পজিশন নেয়ার পর মুক্তিবাহিনী পাল্টা আক্রমণ চালিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুললে তুমুল যুদ্ধ শুরু হয়। যুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর ৫ জন সৈন্যকে হত্যা ও ব্যাপক ক্ষতিসাধন করার পর হানাদার বাহিনীর বুলেটে মুক্তিকামী মুক্তিযোদ্ধা দলের ৫ জন শহীদ হন।
শহীদ ৫ বীর মুক্তিযোদ্ধা হলেন- হাবিলদার আব্দুল গফুর, নায়েক আব্দুর রশিদ, সিপাহী আবু বকর, সিপাহী আব্দুল আজিজ ও সিপাহী সিদ্দিক আলী। শহীদ ৫ মুক্তিযোদ্ধাকে স্থানীয় গ্রামবাসী উদ্ধার করে হাবিলদার আব্দুল গফুরকে ধোপাখালী মসজিদের পাশে এবং অপর ৪ জনকে ধোপাখালী-বানপুর সীমান্তে নোম্যান্স ল্যান্ডের একটি কবরে পাশাপাশি সমাহিত করেন। তবে তাদের পরিচয় এখনো উদ্ঘাটিত হয়নি।
সম্মুখ এ সমরে নেতৃত্ব প্রদানকারী ক্যাপ্টেন পরবর্তী সময়ে সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) মোস্তাফিজুর রহমান যশোর সেনানিবাসের জিওসি থাকাকালীন ১৯৯৪ সালের ২২ জানুয়ারি জীবননগর পরিদর্শন করেন এবং নিজ উদ্যোগে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের কবর বাঁধাই করে দেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়