৯৯৯-এ কলে ৮ কেজি গাঁজা উদ্ধার

আগের সংবাদ

রবীন্দ্রনাথ ও বাঁশির চিত্রকল্প

পরের সংবাদ

ডেঙ্গু রোধে সচেতনতা জরুরি

প্রকাশিত: আগস্ট ৫, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ৫, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে এ রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি দেখা যায়। এখন বর্ষাকাল তাই এ রোগের প্রভাব ছড়িয়ে পড়ছে খুব দ্রুত। গ্রাম-শহর সব স্থানে প্রতি বছর ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয় অনেক মানুষ। এবারো তার ব্যতিক্রম নয়। একদিকে মহামারি করোনা ভাইরাসের প্রকোপ মাত্রাতিরিক্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে, সঙ্গে সঙ্গে শহরের হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গুজ্বর আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে রোজ। গত শনিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রোমের ডেঙ্গু বিষয়ক বিবৃতিতে বলা হয় যে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে নতুন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২৬৪ জন। যার মাঝে ঢাকাতেই ২৪৮ জন, বাকি ১৬ জন ঢাকার বাইরে। খুবই খারাপ অবস্থা বিরাজ করছে দেশে। সাধারণ মানুষের ভোগান্তির কোনো শেষ নেই। আবার ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত রোগীকে সময়মতো চিকিৎসা প্রদান না করলে মৃত্যু হতে পারে। তাই ডেঙ্গুজ্বর থেকে বাঁচতে সচেতনতা জরুরি। ডেঙ্গুজ্বর হলো একটি ভাইরাসজনিত রোগ। এডিস নামে এক ধরনের মশার কামড়ের দ্বারা এ রোগ হয়। এই মশাগুলো দিনের বেলা কামড়ায়। যাতে মানবদেহে মশার শুলের সাহায্যে অতিদ্রুত এ রোগ ছড়িয়ে পড়ে। ডেঙ্গু রোগের নির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসা নেই, তবে ডাক্তারের নির্দেশনা মেনে সহজেই এ রোগ থেকে আরোগ্য লাভ করা যায়। ১৭৮০ সালে যুক্তরাষ্ট্রে এ রোগ প্রথম শনাক্ত হয়। বিশ শতকে এসে এ রোগ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে। বিগত কয়েক বছর থেকে বাংলাদেশে ডেঙ্গুজ্বর আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি ও উল্লেখযোগ্য হারে মানুষ মৃত্যুবরণ করেছেন।
ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত ব্যক্তির ভয়ের কিছু নেই। আক্রান্ত ব্যক্তির মনে রাখতে হবে যে, এ রোগের জন্য অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ সহায়ক নয়। ডাক্তারের পরামর্শক্রমে জ্বর কমানোর জন্য প্যারাসিটামল খাওয়া যেতে পারে। এছাড়াও রোগীকে খাবার হিসেবে বেশি বেশি তরল খাবার খেতে হবে। যেমন- পানি, স্যালাইন, সুপ, দুধ, তাজা ফলের রস ও শিশুদের জন্য মায়ের দুধ রোগীদের জন্য পথ্য হতে পারে। পাশাপাশি চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে সচেতন জীবনযাপন করলে এ রোগ থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায়। ডেঙ্গুজ¦র কোনো ভয়াবহ আতঙ্কজনক রোগ নয়, তবে অসচেতনার কোনো উপায় নেই। যেহেতু এটা ভাইরাসজনিত রোগ তাই সচেতন না হলে তা মহামারি আকার ধারণ করতে পারে। ডেঙ্গুজ্বর ও এডিস মশা প্রতিরোধে করণীয় : ডেঙ্গুজ্বরের বাহক হলো এডিস মশা। তাই এডিস মশা প্রতিরোধ করতে পারলেই এই রোগে আক্রান্ত হওয়া থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। গ্রাম কিংবা শহর যেখানে যে পরিবেশ হোক না কেন বাড়ির আশপাশে ঝোপঝাড় অবশ্যই পরিষ্কার রাখতে হবে। বিশেষ করে শহরাঞ্চলে যেহেতু এই রোগের প্রবণতা উল্লেখযোগ্যহারে বৃদ্ধি পাচ্ছে তাই শহরের প্রতিটি নর্দমা, ড্রেন পরিষ্কার রাখার ব্যবস্থা করতে হবে, যাতে মশা বাচ্চা ফুটিয়ে বংশবিস্তার না করতে পারে। নর্দমা ও ড্রেনগুলোতে পানির নিষ্কাশন ব্যবস্থা করতে হবে কোনোভাবেই যাতে পানি জমতে না পারে। গ্রামে বাড়ির আশপাশে পানি জমতে দেয়া যাবে না, ছোট পুকুর, নালারপাড়গুলো যথাসম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। বাসাবাড়ি কিংবা রাস্তাঘাট কোনো স্থানে ফলের বাকল, বোতল, অব্যবহৃত জিনিসপত্র ফেলে রাখা যাবে না। বাড়িতে ফুলের টব, ফুলদানি, হাঁড়ি-পাতিল, সরঞ্জামে যথাসময়ে পরিষ্কার রাখতে হবে, পানি জমতে দেয়া যাবে না। কারণ এডিস মশা এগুলোতে লুকিয়ে থাকে এবং বংশবিস্তার করে। মশা নিধনের জন্য মাঝেমাঝে বিষক্রিয়া স্প্রে করতে হবে। এতে লুকিয়ে থাকা মশাগুলো সহজেই বেরিয়ে আসবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় দিন বা রাতে ঘুমানোর পূর্বে অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমাতে হবে। সাধ্যমতো এডিস মশা ধ্বংসের প্রতিষেধক ব্যবহার করা। পরিশেষে বলতে হয়, ডেঙ্গুজ্বর যেহেতু একটি ভাইরাসজনিত রোগ, আর এর বাহক এডিস মশা। মশা ক্ষুদ্র হলেও মানবজীবনের জন্য হুমকিস্বরূপ। সর্বোপরি জনসচেতনতা সৃষ্টি ও পরামর্শ দিয়ে গ্রাম কিংবা শহরের সাধারণ মানুষকে এই রোগ সম্পর্কে সচেতন করে তুলতে হবে। যতটা সম্ভব মশা নিধনসহ সচেতন ও আশপাশের পরিবেশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। আক্রান্ত ব্যক্তিদের যথাযথভাবে চিকিৎসা পরামর্শ নিলে সহজে ডেঙ্গুজ্বর ও এডিস মশা প্রতিরোধ করে সুস্থ, সুন্দর ও রোগমুক্ত জীবনযাপন করা সম্ভব। তাই আতঙ্ক নয় বরং সচেতনতায় পারে ডেঙ্গু রোগ থেকে বাঁচাতে।
লুৎফর রহমান লাভলু
শিক্ষার্থী, ঢাকা কলেজ।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়