৯৯৯-এ কলে ৮ কেজি গাঁজা উদ্ধার

আগের সংবাদ

রবীন্দ্রনাথ ও বাঁশির চিত্রকল্প

পরের সংবাদ

অর্ধশতাধিক মডেলকে অনৈতিক কাজে ব্যবহার করত মিশু

প্রকাশিত: আগস্ট ৫, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ৫, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : অনৈতিক কাজে কথিত মডেল পিয়াসা ও মৌ ছাড়াও দেশি-বিদেশি ৫০ জন নারীকে ব্যবহার করা হতো। যাদের নাম-পরিচয় এরই মধ্যে আমাদের হাতে এসেছে। এসব কথিত মডেল ও টিভিকর্মীকে টাকার বিনিময়ে ব্যবহার করত শরফুল হাসান ওরফে মিশু হাসান। এদের দিয়েই রাজধানীর গুলশান, বারিধারা, বনানীসহ বিভিন্ন অভিজাত এলাকায় পার্টি বা ডিজে পার্টির আয়োজন করা হতো। আর এসব পার্টিতেই মাদক সেবনসহ নানাবিধ অনৈতিক কর্মকাণ্ডের ব্যবস্থা থাকত। এজন্য অংশগ্রহণকারীদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ নিত তারা। বিদেশেও পার্টির ব্যবস্থা করত তারা।
অস্ত্র ও মাদকসহ শরফুল হাসান ওরফে মিশু হাসান (৩১) ও তার এক সহযোগী মাসুদুল ইসলাম ওরফে জিসানকে (৩৯) গ্রেপ্তারের বিষয়ে গতকাল বুধবার এসব কথা বলেন র‌্যাব লিগ্যাল এন্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। রাজধানীর বসুন্ধরা এলাকা থেকে গত মঙ্গলবার রাতে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ১টি আগ্নেয়াস্ত্র, ৬ রাউন্ড গোলাবারুদ, ১৩ হাজার ৩০০ পিস ইয়াবা, একটি বিলাসবহুল ফেরারি মডেলের গাড়ি, সিসার সরঞ্জামাদি, ২টি ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন, বিভিন্ন ব্যাংকের চেক ও এটিএম কার্ড, পাসপোর্ট এবং ভারতীয় জাল মুদ্রা ৪৯ হাজার ৫০০ রুপি উদ্ধার করা হয়। কুর্মিটোলা সদর দপ্তরে দুজনকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের এ মুখপাত্র বলেন, সম্প্রতি রাজধানী ঢাকার গুলশান, বারিধারা, বনানীসহ বিভিন্ন অঞ্চলে পার্টির নামে মাদক সেবনসহ নানাবিধ অনৈতিক কর্মকাণ্ড সম্পর্কে জানা যায়। র‌্যাব এ বিষয়ে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। এরই ধারাবাহিকতায় র‌্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র‌্যাব-১ এর অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে। তিনি আরো বলেন, অভিযুক্তরা একটি সংঘবদ্ধ চক্রের সদস্য। এ চক্রের সদস্য প্রায় ১০-১২ জন। তারা গুলশান, বারিধারা, বনানীসহ বিভিন্ন অভিজাত এলাকায় পার্টি বা ডিজে পার্টির নামে মাদক সেবনসহ নানাবিধ অনৈতিক কর্মকাণ্ডের ব্যবস্থা করে। এজন্য তারা অংশগ্রহণকারীদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ পায়। অংশগ্রহণকারীরা সাধারণত উচ্চবিত্ত পরিবারের সদস্য। প্রতিটি পার্টিতে ১৫-২০ জন অংশগ্রহণ করত। এছাড়া বিদেশেও প্রমোদ ভ্রমণের আয়োজন করা হতো। একইভাবে উচ্চবিত্তের প্রবাসীদের জন্যেও দুবাই, ইউরোপ ও আমেরিকায় এ ধরনের পার্টি আয়োজন করা হতো। তারা ক্লায়েন্টদের গোপন ছবি ধারণ করে অপব্যবহার করত বলে জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে। র‌্যাবের মুখপাত্র বলেন, পার্টি আয়োজনের ক্ষেত্রে ক্লায়েন্টের চাহিদা বা পছন্দের গুরুত্ব দেয়া হতো। এই অবৈধ আয় থেকে উপার্জন করা অর্থ নামে-বেনামে বিভিন্ন ব্যবসায় (গাড়ির ব্যবসা, গাড়ি আমদানি ও গরুর ফার্ম) বিনিয়োগ করেছে মিশু হাসান ও জিসান। এই ব্যবসায় তাদের গ্রুপের সদস্যদের অবৈধ আয়েরও বিনিয়োগ রয়েছে। কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, আটক শরফুল হাসান ওরফে মিশু হাসান দেশে নামিদামি ব্র্যান্ডের বিলাসবহুল গাড়ির ব্যবসা করে। সে বিলাসবহুল গাড়ি আমদানির ক্ষেত্রে অনিয়মের আশ্রয় নিত বলে জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে। তার ব্যক্তিগত ২টি রেঞ্জ রোভার, অ্যাকুয়া, ভক্স ওয়াগন ও ফেরারিসহ ৫টি গাড়ি রয়েছে। সে অত্যন্ত সুকৌশলে গাড়ির ট্যাক্স জালিয়াতি করেছে বলে প্রমাণ মিলেছে। এছাড়া আটক জিসানের একটি গরুর ফার্ম রয়েছে। যেখানে সে অননুমোদিত ব্রাহমা জাতের গরু লালন-পালন করে। র‌্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, উচ্চবিত্ত শ্রেণির লোকদের টার্গেট করে আসর বসানো হতো। এই চক্রের ক্লায়েন্টের তালিকায় পিয়াসা-মৌসহ দেশি-বিদেশি ৫০ জনের নাম পাওয়া গেছে। যাদের বিদেশেও প্রমোদ ভ্রমণের আয়োজন করে পাঠানো হতো। একইভাবে উচ্চবিত্তের প্রবাসীদের জন্যেও দুবাই, ইউরোপ ও আমেরিকায় এ ধরনের পার্টি আয়োজন করে পিয়াসা-মৌয়ের মতো কথিত মডেলদের পাঠানো হতো। আটকদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও মাদক আইনে, ভারতীয় জাল মুদ্রা রাখা ও অননুমোদিত গাড়ি আমদানি ও ব্যবহারের অভিযোগে বিশেষ ক্ষমতা আইনে পৃথক মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়