জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় : প্রক্টর ড. মোস্তফা কামালের মেয়াদ বাড়ল

আগের সংবাদ

গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ে প্রধানমন্ত্রী : কেউ গৃহহীন থাকবে না

পরের সংবাদ

বঙ্গবন্ধুকে ভুট্টোর পত্র

প্রকাশিত: আগস্ট ৩, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ৩, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

১১ মার্চ এক টেলিগ্রামে ভুট্টো বার্তা পাঠান। তিনি বিরাজমান সংকট নিরসনে ঢাকা আসতে চাচ্ছেন। তিনি এমন একটি নয়া ব্যবস্থা প্রস্তাব দেবেন যাতে দুটি প্রদেশ ও নাগরিকদের মধ্যে বৈষম্য না থাকে। রাজনীতিবিদগণ সংকটে ঐক্যবদ্ধ অনৈক্য থাকে, ইতিহাসে যেন তা লেখা না থাকে।
ভুট্টো সংখ্যাগরিষ্ঠতা মানেন না : এক ইউনিট বিলুপ্তি হওয়ার পর ভুট্টোর আশা করা উচিত ছিল না যে, তিনি উত্তর পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ এবং বালুচিস্তানের প্রাদেশিক পরিষদে তার পিপিপি সরকার গঠন করতে পারবে। কেন্দ্র ও প্রদেশ সম্পর্ক সম্পর্কে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি। তার কথা ছিল যে, ভৌগোলিক দূরত্বের কারণে সংখ্যাগরিষ্ঠতার নিয়ম এখানে প্রযোজ্য নয়। তাই কেন্দ্রে কোয়ালিশনের প্রয়োজন। পশ্চিম পাকিস্তানের অনেক দল তার এ বক্তব্যকে সমালোচনা করে। জেনারেল শের আলী বলেন, ‘আমি আশা করি, তিনি বাস্তবে এ কথাগুলো ‘মিন করেন নাই।’ এয়ার ভাইস মার্শাল আসগর বলেন, ‘দুঃখজনক’। নসরুল্লাহ বলেন, ‘এটা গণতান্ত্রিক নিয়মের বাইরে।’ খান আব্দুল ওয়ালি খান বলেন, ‘তিনি এনডব্লিউএফপির হয়ে কথা বলতে পারেন না।’
১৪ মার্চ ভুট্টো বলেন যে, দুই প্রধান দলের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। পাকিস্তানের দুই অঞ্চলকে আলাদা করার ব্যাপারে এটাকে সম্মত স্বরূপ দেখা যেতে পারে। কোয়ালিশন সরকার করতে হবে। বললেন, ‘হাম এধার, তোম ওধার’। তাজউদ্দিন তীব্র ভাষায় প্রতিবাদ করে বলেন, ‘গণতন্ত্রে সংখ্যাগরিষ্ঠ দল এককভাবে সরকার গঠন করবে।
প্রেসিডেস্ট ইয়াহিয়া খানের প্রয়োজন ছিল মুজিবের সাথে বৈঠকে বসা। সেজন্য তিনি ঢাকায় একটি সামরিক টিম পাঠান। তারা তাজউদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

প্রস্তাব করেন, প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান ঢাকায় শেখ মুজিবের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চাচ্ছেন। বসার স্থান হতে পারে প্রেসিডেন্ট হাউজ, বঙ্গভবন অথবা বঙ্গবন্ধুর বাসভবন। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আলোচনা করে তাজউদ্দিন বলেন পাঠান, প্রেসিডেন্ট হাউজে আলোচনা বৈঠক হতে পারে। বলা বাহুল্য, এর পূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর ও পূর্বাঞ্চলের সামরিকপ্রধান জেনারেল টিক্কা খান বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আলোচনার জন্য বসতে চেয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু তা প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। এ কথা বিবেচনা করেই ইয়াহিয়া খান তার আগমনের পূর্বে এডভান্স টিম পাঠিয়েছিলেন। জেনারেল টিক্কাকে খবর পাঠানো হলে আওয়ামী লীগ প্রধানকে জানানোর জন্য এ প্রস্তাবিত বৈঠক সম্পর্কে। টিক্কার উত্তর ছিল, মুজিব রাষ্ট্রপতির সাথে ঢাকায় বৈঠকে বসতে রাজি।’ সামরিক শাসককে শেখ মুজিব তার অনুরোধ উড়িয়ে দিয়ে বুঝাতে চাইলেন, দেশের প্রধান শক্তি তিনি।
১৫ মার্চ দুপুরে যখন পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতি তেজগাঁও বিমানবন্দরে নামেন, সেখানে কোনো বাঙালি আমলা বা রাজনীতিক ছিলেন না তাকে রিসিভ করার জন্য। নিরাপত্তা জিপ, মোটরসাইকেলের সারি, বিভিন্ন গাড়ি ইত্যাদি সবই ছিল, ছিল না কোনো অভ্যর্থনা জানানোর লাইন। ছিল না হাততালি, রাস্তায় বা ফুলের পাপড়ি। শুধু ছিল নিস্তব্ধতা।

আগামীকাল প্রকাশিত হবে ‘মুজিব টেকস ওভার’
‘যেভাবে স্বাধীনতা পেলাম’- বইটি পাওয়া যাচ্ছে ভোরের কাগজ প্রকাশনে (ভোরের কাগজ কার্যালয়, ৭০ শহীদ সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা)। এছাড়া সংগ্রহ করা যাবে bhorerkagojprokashan.com থেকেও।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়