জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় : প্রক্টর ড. মোস্তফা কামালের মেয়াদ বাড়ল

আগের সংবাদ

গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ে প্রধানমন্ত্রী : কেউ গৃহহীন থাকবে না

পরের সংবাদ

ঢিলেঢালা লকডাউনে রাজধানীতে যানজট : গণপরিবহন না থাকায় অফিসগামীদের ভোগান্তি

প্রকাশিত: আগস্ট ৩, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ৩, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : বিধিনিষেধ শিথিলতার একদিন পর আবারো গণপরিবহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। গতকাল সোমবার রাজধানীতে মানুষ ও যানবাহনের চাপ ছিল গত এক মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। লাখ লাখ মানুষ ঢাকায় ফিরে আসায় রাজধানীর সব সড়কে অফিসগামী মানুষের চাপ ছিল। একই সঙ্গে যানবাহনের চাপের কারণে অনেক গুরুত্বপূর্ণ সড়কে যানজট সৃষ্টি হয়। দুপুর পর্যন্ত ঢাকা টাঙ্গাইল মহাসড়কসহ বিভিন্ন মহাসড়কে দীর্ঘ যানজট ছিল। তবে দেশের প্রধান দুই ফেরিঘাট শিমুলিয়া এবং পাটুরিয়া এলাকায় মানুষ ও যানবাহনের ভিড় না থাকায় স্বস্তি দেখা যায়।
গত রবিবার ১৬ ঘণ্টার জন্য গণপরিবহন চলাচলের অনুমতি দেয়া হলেও গতকাল দুপুর পর্যন্ত ঢাকায় এবং বিভিন্ন জেলার মহাসড়কে যাত্রী নিয়ে গণপরিবহন চলাচল করে। লাখ লাখ মানুষ ঢাকায় ফিরে আসায় রাজধানীর সব সড়কে গতকাল সকাল থেকে অফিসগামী মানুষের চাপ দেখা যায়। গণপরিবহন না থাকায় অফিসে যেতে লোকজনকে চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হয়। কর্মস্থলের পাশাপাশি হাসপাতালে যাওয়া, টিকা দিতে যাওয়া এবং জরুরি কাজে যাওয়ার পথে মানুষ চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়ে। যানবাহনের জন্য রীতিমতো যুদ্ধ করতে হয়। বাস বন্ধ রেখে অফিস খুলে দেয়ার কারণে এই দুর্ভোগ বেড়েছে।
গতকাল সকাল সাড়ে ৯টার দিকে রামপুরাসহ বিভিন্ন এলাকায় মিনি ট্রাক ও পিকআপের যাত্রী হয়ে লোকজনকে অফিসে যেতে দেখা গেছে। ছোট একটি পিকআপ পেলেও লোকজনকে হুমড়ি খেয়ে পড়তে দেখা যায়। মতিঝিল থেকে যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত রাতের বেলা অনেক পিকআপ, রিকশা-ভ্যান

গণপরিবহন হিসেবে কাজ করে।
যাত্রাবাড়ী এলাকায় লোকজনকে রিকশা-ভ্যানে পাঁচ টাকার ভাড়া ৫০ টাকা দিয়ে যেতে হয়। রিকশায় ২০ টাকার ভাড়া নিয়েছে ৮০ টাকা। তারপরও সবাই যেতে পারেনি। হাজার হাজার মানুষ পায়ে হেঁটেই কর্মস্থলের রওনা হয়। ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলের ভাড়া ছিল আকাশচুম্বী। জনপ্রতি ১০০ টাকা ভাড়ায় রায়েরবাগ-শনির আখড়া যাত্রী পরিবহন করছে রিকশা-ভ্যানগুলো। এই দূরত্বে বাস ভাড়া ১৫ টাকা।
গণপরিবহন না থাকলেও রিকশা, ভ্যান, প্রাইভেট কার, পিকআপের চাপে রাজধানীর অনেক গুরুত্বপূর্ণ সড়কে যানজট সৃষ্টি হয়। কোনো কোনো সড়কে যানবাহন চলাচলে ছিল ধীরগতি। বিমানবন্দর সড়ক, ফার্মগেট, এলিফেন্ড রোড, কারওয়ান বাজার, পুরানা পল্টনসহ বিভিন্ন সড়কে ছিল যানজট। মিরপুর রোডসহ বেশকিছু সড়কে যানবাহন ধীরে চলে।
এদিকে রবিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত গণপরিবহন চলাচলের অনুমতি থাকলেও গতকাল দুপুরের দিকেও রাজধানীর গাবতলী-গুলিস্তান, মোহাম্মদপুর-সাইনবোর্ড, মিরপুর-গুলিস্তানসহ সব রুটের বেশকিছু গণপরিবহন চলাচল করে। সিএনজি অটোরিকশা চলেছে। রিকশা ও ব্যক্তিগত গাড়ির চাপ ছিল নগরীর সব সড়কে।
গতকাল রাজধানীর সড়কগুলোতে পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা ছিল নজরে পড়ার মতো। অন্যান্য দিন নগরীর যেসব জায়গায় পুলিশের চেকপোস্ট ছিল গতকাল সেখানে কোনো চেকপোস্ট এবং পুলিশের উপস্থিতি ছিল না। মূলত গত শনিবার রাত থেকেই চেকপোস্ট থেকে সরে যায় পুলিশ।
নৌপথে গতকাল সকাল পর্যন্ত দূরপাল্লার লঞ্চ চলাচল করে। সকাল ৯টার মধ্যে লঞ্চগুলো সদরঘাট টার্মিনালে এসে পৌঁছে। যাত্রী নেমে যাওয়ার পর টার্মিনাল পুরো ফাঁকা হয়ে যায়। সকাল ১০টার পর টার্মিনাল থেকে সব লঞ্চ সরিয়ে নিতে নির্দেশ দেয়া হয়। শিমুলিয়া ও দৌলতদিয়া ফেরিঘাট এলাকায় স্বস্তি ফিরেছে। কোনো ভোগান্তি নেই, যাত্রী এবং যানবাহনের চাপও নেই। ৬টি করে ফেরি সোমবার সকাল থেকে চলাচল করে। উভয় ঘাটে কোনো ভিড় দেখা যায়নি। তবে গণপরিবহন চলাচল না করায় ঢাকা-বরিশাল এবং ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে থ্রি-হুইলার, ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক, রিকশা ও ভ্যান, মাহেন্দ্র, নছিমন-করিমনে কিছু লোকজন ঢাকায় রওনা হয়।
ভিন্ন অবস্থা ছিল ঢাকা-টাঙ্গাইল এবং ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কে। এই উভয় মহাসড়কে যানবাহনের ব্যাপক চাপ ছিল। সকালের দিকে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে ২০ কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়। এ সময় যাত্রীদের চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়