শিরীন আখতার কর্মহীন মানুষের খাদ্যের দায়িত্ব সরকারের

আগের সংবাদ

ফ্রান্সের নারী নির্মাতার হাতেই এবার ‘স্বর্ণপাম’

পরের সংবাদ

ডিআরআরএ আয়োজিত ওয়েবিনার : প্রতিবন্ধী ভাতাসহ অন্যান্য সুবিধা বাড়ানোর দাবি

প্রকাশিত: জুলাই ১৮, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুলাই ১৮, ২০২১ , ১:৫৮ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : বেসরকারি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিষয়ে পড়াশোনা করছেন আসিফা আক্তার আনিলা। সম্প্রতি জাতীয় পরিচয়পত্র নিতে যান তিনি। সুবর্ণ নাগরিক বা ডিফারেন্টলি এবল হওয়ায় লিখতে সমস্যা রয়েছে তার। এমন বাস্তবতায় তার পরিচয়পত্রে নিরক্ষর বা স্বাক্ষরহীন লেখা হবে জেনে খুবই অমর্যাদাকর মনে হয় আনিলার।
শুধু এ বিষয়ই নয়, অতিমারির এ সময়ে করোনা টিকা, ভোটার আইডি কার্ড, ভাতা বৃদ্ধি, সুরক্ষা উপকরণ-ওষুধ সহজলভ্য ও কর মওকুফ, ফিজিও থেরাপিস্টদের জরুরি সেবার আওতায় আনাসহ নানা সমস্যা ও দাবির কথা উঠে আসে এক অনলাইন ওয়েবিনারে। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় জুম প্ল্যাটফর্মে ডিজএবলড রিহ্যাবিলিটেশন এন্ড রিসার্চ এসোসিয়েশন (ডিআরআরএ) আয়োজিত ‘কোভিডকালীন পরিস্থিতিতে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অবস্থা ও প্রত্যাশা’ শীর্ষক এই ওয়েবিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খসরু, বিশেষ অতিথি ছিলেন সাংসদ ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আরমা দত্ত, বদরুদ্দোজা মো. ফরহাদ হোসেন, শবনম জাহান ও কাজী কানিজ সুলতানা। সঞ্চালনা করেন ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্ত।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই ডিআরআরএ’র নির্বাহী পরিচালক ফরিদা ইয়াসমিন দেশের ১৮-২২ লাখ প্রতিবন্ধী ও তাদের নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন সংগঠনের কার্যক্রম তুলে ধরেন। পরে আনিলা, সালমা মাহবুব, আশরাফুন্নাহার মিষ্টি ও উজ্জ¦ল হোসেনসহ ডিজএবেল পিপলস অর্গানাইজেশনের প্রতিনিধিরা তুলে ধরেন তাদের বিভিন্ন অসুবিধার কথা। তারা জানান, করোনাকালীন দূর্যোগ তাদেরকেও রেহাই দেয়নি। তবে ডিজএবল হওয়ার পরেও অন্যান্য অনেকের মতো সুরক্ষা অ্যাপে কোনো শ্রেণিতেই টিকার জন্য রাখা হয়নি তাদের। অনেককেই থেরাপিস্টের কাছে যেতে হয়। লকডাউনে যা বন্ধ থাকে। এ বিষয়টিও জরুরি সেবার আওতায় আনা হয়নি। দীর্ঘ করোনাকালীন সময় সুরক্ষা উপকরণ ও ওষুধেরও দাম বেড়েছে কয়েক গুণ।
এছাড়াও আলোচনায় প্রতিদিন ২৫ টাকা করে মাসে ৭৫০ টাকা সুরক্ষা ভাতার বিষয়ে চরম হতাশা ব্যক্ত করেন সুবর্ণ নাগরিকরা। এত অপ্রতুল ভাতায় এই সময়ে একজন প্রতিবন্ধীর আসলে কী হয়Ñ এমন প্রশ্নও তোলেন তারা। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আরমা দত্ত, বদরুদ্দোজা মো. ফরহাদ হোসেন, শবনম জাহান ও

কাজী কানিজ সুলতানা তাদের আশ^স্ত করে বলেন, এ বিষয়টি নিয়ে কাজ চলছে এবং ধীরে ধীরে সব ঠিক হয়ে আসবে।
এ সময় সুবর্ণ নাগরিক বা প্রতিবন্ধীদের উন্নয়নে বর্তমান সরকারপ্রধান শেখ হাসিনাই প্রথম উদ্যোগ নেন। স্মরণ করিয়ে দিয়ে সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খসরু বলেন, আমরা কাজ করছি। সব সমস্যা খুব দ্রæত সমাধান করা সম্ভব নয়। তবে ধীরে ধীরে সব ঠিক হয়ে আসবে। সব স্তরের ১ কোটি ৮ লাখ মানুষকে সরকার ভাতা দিচ্ছে। সবচেয়ে বেশি ভাতা পান মুক্তিযোদ্ধারা। প্রতিবন্ধীদেরও ভাতা বাড়ানোসহ উন্নয়নে উদ্যোগ নেয়া হবে। আর দেশের ১৮-২২ লাখ লোক প্রতিবন্ধীÑ এমন একটি তথ্যভাÐার রয়েছে। তবে সঠিক হিসাবটি নতুন আদম শুমারিতে উঠে আসবে। তিনি আরো বলেন, সাক্ষরতা-নিরক্ষরতা কখনো হাতের লেখার ওপর নির্ভর করে না। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ও প্রধানমন্ত্রীর সোনার বাংলাদেশ গড়তে হলে সবাইকে নিয়েই এগিয়ে যেতে হবে। আর করোনাকালীন এ মুহূর্তে প্রতিবন্ধীদের সমস্যার বিষয়গুলো গুরুত্বের সঙ্গে দেখার বিকল্প নেই।
ওয়েবিনারে উপস্থিত মন্ত্রী ও সাংসদরা এ বিষয়গুলো প্রধানমন্ত্রীর কাছে উপস্থাপন করলে অবশ্যই উনি সঠিক ব্যবস্থা নেবেন উল্লেখ করে আলোচনার সমাপ্তি টানেন ওয়েবিনারের সঞ্চালক শ্যামল দত্ত।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়