মির্জা ফখরুল : করোনা নিয়ন্ত্রণে কারফিউ কোনো সমাধান নয়

আগের সংবাদ

করোনার দাপটে ডেঙ্গুর হানা : রাজধানীর হাসপাতালে দিন দিন বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা

পরের সংবাদ

মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে ঘরমুখো মানুষ!

প্রকাশিত: জুলাই ১৩, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুলাই ১৩, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

ঈদকে সামনে রেখে ঘরমুখো মানুষের যে ঢল নেমেছে তাতে শঙ্কা বেড়ে যায়। গত ঈদে নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে হাজার হাজার মানুষ বাড়ি ফিরেছিলেন। এবারো তার ব্যতিক্রম হবে বলে মনে হয় না। ঈদের প্রায় আরো ১০ দিন বাকি থাকতে মানুষ দলে দলে ঢাকা ছাড়তে শুরু করেছে। গতকাল মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ জানিয়েছে, ১৫ জুলাই বৃহস্পতিবার থেকে ২৩ জুলাই শুক্রবার পর্যন্ত চলমান কঠোর লকডাউন শিথিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। কুরবানির ঈদে মানুষের চলাচল ও পশুর হাটে বেচাকেনার বিষয় বিবেচনায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবে সব ধরনের গণপরিবহন। সরকারের এমন ঘোষণার পর ঘরমুখো মানুষের ঢল নামবে এটাই স্বাভাবিক। চিকিৎসা বিশ্লেষকরা বলছেন, সামনে করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ বিপর্যয় নামতে পারে। পোশাক কারখানা আগে থেকে খোলা রয়েছে। এখন যদি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও দোকানপাট, শপিংমল চালু হয় সড়কে মানুষের চলাচল বেড়ে যাবে। আমরা বুঝতে পারছি, করোনা ভাইরাস সংক্রমণের মধ্যেও পোশাক কারখানা, দোকানপাট খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত অর্থনীতির ক্ষতি এড়ানোর উদ্দেশ্যে। কিন্তু এটা কতটা যুক্তিযুক্ত সেটা ভাবার বিষয়। ইতোমধ্যে বাংলাদেশে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের ভারতীয় ধরন শনাক্ত হয়েছে। বাংলাদেশেও ভারতীয় এ ধরন ব্যাপক সংক্রমণ ও প্রাণঘাতী রূপ নিলে দেশের সামাজিক বাস্তবতা ও অর্থনৈতিক ভবিষ্যৎ কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে তা ভেবে আতঙ্কিত হতে হয়। আমরা বলব, নিজে সতর্ক না হলে, সচেতন না হলে ভারতীয় এ ধরন দ্রুত ছড়িয়ে পড়বে। ভারতের মৃত্যুর মিছিল দেখে তো আমরা শিক্ষা নিতে পারি? বিজ্ঞান অসহায়ের মতো লক্ষ করছে হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু। এ মৃত্যুর মিছিল কোথায় গিয়ে শেষ হবে, তা আমরা এ মুহূর্তে বলতে পারব না। আমাদের উদাসীনতার কারণে সংক্রমণ ও মৃত্যু দিন দিন বাড়ছে। সমাজের শ্রমজীবী মানুষ সামাজিক দূরত্ব মানছে না বা না মানতে বাধ্য হচ্ছে। মোটা দাগে পেটের দায়ে, জীবিকার চরিত্রগত কারণে এবং অন্নসংস্থানের বাসনায় কিন্তু সমাজের মধ্যবিত্ত, নিম্নমধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্তের কিছু মানুষ সামাজিক দূরত্ব কেন মানছে না, সেটাও বিবেচনায় নেয়া জরুরি। আমাদের সামাজিক দূরত্ব মেনে না চলার অন্যতম কারণ আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল না থাকা। অর্থনৈতিক সমস্যার চেয়েও বড় সমস্যা অসচেতনতা। নিজেরা যেমন সচেতন না তেমনিভাবে আরেকজনকে বিপদে ফেলছি। বারবার সরকার বলছে, করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে হলে সবাইকে ঘরে অবস্থান করতে হবে। ঘরে থাকুন, নিজে সুস্থ থাকুন এবং দেশের মানুষকে সুস্থ রাখুন- করোনা প্রাদুর্ভাব ঠেকানোর এটাই হলো মূলমন্ত্র। জনগণকে বুঝানো হয়েছে। এখন আর বুঝানোর সময় নেই। সবাইকে ঘরে রাখতে প্রয়োজনে এখন কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। আমার, আপনার, সবার একটুখানি সচেতনতাই পারে এ ভাইরাসের কবল থেকে মুক্ত করতে। আসুন, আমরা সবাই মিলে সচেতন হই, অন্যদেরও সচেতন করে গড়ে তুলি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়