মগবাজারে বিস্ফোরণ আরো একজনের মৃত্যু

আগের সংবাদ

রবীন্দ্রনাথের ঋতুর গান ও অন্যান্য

পরের সংবাদ

সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের করোনা ইউনিট : সুরক্ষাসামগ্রী ছাড়া অবাধে বিচরণ

প্রকাশিত: জুলাই ৮, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুলাই ৮, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

সাইদুর রহমান আসাদ, সুনামগঞ্জ থেকে : সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের ১০০ শয্যার করোনা ইউনিট। এর সামনে রয়েছে পুরো হাসপাতালের ডিসপেনসারি, রোগীদের ব্যবস্থাপত্রের ও প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া ডাক্তারের কক্ষ। হাসপাতালের সবচেয়ে ব্যস্ততম জায়গা এটি। সাধারণ জ¦র, সর্দি বা করোনার উপসর্গ নিয়ে রোগীরা আগে এই জায়গায় ভিড় করেন।
সারাদেশের করোনা রোগীদের ডেডিকেটেড হাসপাতালগুলোর মধ্যে একটি সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের ১০০ শয্যা বিশিষ্ট করোনা ইউনিট। পুরাতন ২ তলা বিশিষ্ট ১০০ শয্যার হাসপাতালকে করোনা রোগীদের জন্য ২ ভাগে ভাগ করা হয়েছে। প্রথমদিকে করোনার উপসর্গ নিয়ে আসা রোগীদের রাখা হয় নিচতলায়। আর করোনায় শনাক্ত রোগীদের রাখা হয় দ্বিতীয় তলায়।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে করোনা ইউনিটে মোট ১২ জন রোগী ভর্তি রয়েছে। এর মধ্যে ৭ জন করোনায় শনাক্ত। এদের উপরের তলায় প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। বাকি ৫ জনের করোনা উপসর্গ থাকায় নিচের তলায় রেখে চিকিৎসাসেবা দেয়া হচ্ছে। এসব নরমাল রোগীদের সাপোর্ট দেয়ার ব্যবস্থা রয়েছে হাসপাতালে। রোগীর উচ্চমাত্রায় অক্সিজেন সরবরাহের প্রয়োজন হলে যেতে হবে ৬৫ কিলোমিটার দূরে সিলেট বিভাগীয় শহরে।
এদিকে করোনা ইউনিটে আইসোলেশন কক্ষের জন্য একটা ইউনিটের কাজ চলছে। এই ইউনিট নির্মাণের জন্য ৭-৮ জন শ্রমিক কাজ করছেন প্রতিদিন। করোনা ইউনিটের ভেতরে এসব শ্রমিক কাজ করলেও কারোর মধ্যে স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই। ব্যবহার করছেন না স্বাস্থ্য সুরক্ষাসামগ্রী। এছাড়াও নার্স ও পরিচ্ছন্ন কর্মীদের নিরাপত্তা সামগ্রী ছাড়াই ভেতরে দেখা গেছে। তারা অবাধে ভেতরে ও বাইরে চলাচল করছেন। এতে করে চিকিৎসাসেবা দেয়া এসব কর্মীর মাধ্যমে বাইরে করোনা ভাইরাস ছড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে বলে দাবি সুনামগঞ্জের সচেতন মহলের।
করোনা ইউনিটে কাজ করা কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাদের প্রয়োজনীয় সুরক্ষাসামগ্রী (পিপি) রয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে রোগীদের সেবা দিলেও সব সময় পিপি পরতে ভালো লাগে না তাদের। এজন্য অনেক সময় পিপি ছাড়াই করোনায় আক্রান্ত রোগীদের দেখভাল করেন তারা। হাসপাতালের সুপারভাইজার সিরাজুল ইসলাম। সকালে করোনা ইউনিটে প্রবেশ করেছেন দায়িত্বে থাকা স্টাফদের হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর নেবার জন্য।
সুরক্ষাসামগ্রী ছাড়া করোনা ইউনিটে প্রবেশ করছেন কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি ভেতরে যাইনি। করোনা রোগীদের ওয়ার্ডে যারা কাজ করছেন তাদের বলছি নিচে আসতে। এখান থেকেই স্বাক্ষর নিয়ে চলে যাব।
তার অভিযোগ, করোনা ইউনিটে আইসোলেশন কক্ষ নির্মাণের কাজ যারা করছেন তারা কোনো সুরক্ষাসামগ্রী ছাড়াই ওপর ও নিচতলায় চলাচল করছেন। যা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। করোনা ইউনিটে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে গেল ৩ মাস যাবৎ কাজ করছেন রিপন। তার মুখে মাস্ক থাকলেও সুরক্ষাসামগ্রী ছিল না। তিনি বলেন, আমার সুরক্ষাসামগ্রী উপরে রয়েছে। একটু আগে আসছি তাই এখনো পড়িনি। এখন গিয়ে পড়ব।
এ বিষয়ে সুনামগঞ্জ রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি বিন্দু তালুকদার বললেন, করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধি ও স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনো বালাই নেই সাধারণ মানুষদের মধ্যে। হাসপাতাল এলাকায় বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত রোগীরা মাস্ক ছাড়াই চলাচল করে। করোনা ইউনিটের মধ্যে বিভিন্ন শ্রমিক ও স্বাস্থ্যসেবা দেয়ার কর্মীরা কাজ করছেন। তাদেরও স্বাস্থ্য সুরক্ষাসামগ্রী (পিপি) নেই। আমি মনে করি এভাবে চলতে থাকলে করোনার প্রকোপ আরো বাড়বে। শ্রমিক ও স্বাস্থ্য কর্মীদের মাধ্যমে তাদের পরিবার ও অন্যান্য লোকজন আক্রান্ত হতে পারে।
২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক (উপপরিচালক) ডা. মো. আনিসুর রহমান বললেন, আমাদের হাসপাতালে ১০০ শয্যার করোনা ইউনিট রয়েছে। এখন পর্যন্ত ১২ জন ভর্তি রয়েছেন। এর মধ্যে ৭ জন পজিটিভ।
করোনা ইউনিটে স্বাস্থ্যকর্মী ও নির্মাণাধীন শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষাসামগ্রী নেই কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সবাইকে পিপি পরার জন্য বলা আছে। তবে আমাদের এখানে আইসোলেশনের জন্য একটা ইউনিট প্রস্তুত করা হচ্ছে। যারা এখানে কাজ করছেন তারাই পিপি ছাড়া অবাধে চলাচল করছেন। তবে কোভিডে যারা পজিটিভ তাদের একটা ওয়ার্ডে রাখা হয়েছে। ওয়ার্ডে প্রবেশের সময় পিপি পরে যেতে হয় সবার।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়