অশ্লীল ভিডিও তুলে ব্ল্যাকমেইল : সবুজবাগে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রীর আত্মহত্যা

আগের সংবাদ

কারিগরি কারণে পদ্মা সেতুর রেললাইন প্রকল্পে ধীরগতি

পরের সংবাদ

মো. পারভেজ মিয়া মেয়র, কিশোরগঞ্জ পৌরসভা : আধুনিক পৌরসভা গড়তে চাই

প্রকাশিত: জুলাই ৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুলাই ৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

আবু তাহের, কিশোরগঞ্জ থেকে : কিশোরগঞ্জ ১৮৬৯ সালে প্রতিষ্ঠিত একটি প্রথম শ্রেণির পৌরসভা। এ পৌরসভার মেয়র হিসেবে দ্বিতীয়বারের মতো দায়িত্ব পালন করছেন জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব মো. পারভেজ মিয়া। পৌরসভার নাগরিক উন্নয়নে বিরামহীমভাবে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর থেকে সাধারণ জনগণকে সঙ্গে নিয়ে পৌরসভার উন্নয়নে নিজেকে নিয়েজিত রেখেছেন। শহরের রাস্তাঘাট নির্মাণ, যানজট নিরসন, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা ও জলাবদ্ধতা নিরসনে ড্রেন নির্মাণ, স্বাস্থ্য সুবিধার জন্য নগর স্বাস্থ্যসেবা চালুসহ নাগরিকসেবা বৃদ্ধিতে নানামুখী পদক্ষেপ নিয়েছেন তিনি। কিশোরগঞ্জ পৌরসভাকে একটি আধুনিক ও মডেল পৌরসভা হিসেবে গড়ে তুলতে চান তিনি।
২০১৫ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীক নিয়ে বিপুল ভোটের ব্যবধানে প্রথমবারের মতো মো. পারভেজ মিয়া কিশোরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হন। এ পর্যন্ত ১৫০ কোটি টাকার উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন। কিশোরগঞ্জের কৃতী সন্তান রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, সাবেক জনপ্রশাসনমন্ত্রী ও কিশোরগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য প্রয়াত জননেতা সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের আস্থাভাজন থাকায় তিনি এত উন্নয়ন করতে পেরেছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
২০২১ সালে মো. পারভেজ মিয়া আবারো আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়ে দ্বিতীয়বারের মতো মেয়র নির্বাচিত হন। পৌরসভার সার্বিক বিষয়ে ভোরের কাগজের মুখোমুখি হন তিনি। জানালেন সমস্যা ও সম্ভাবনার কথা।
মেয়র পারভেজ মিয়া জানান, ২০১৫ সালে প্রথমবারের মতো মেয়র নির্বাচিত হওয়ার সময় কিশোরগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী ছিলেন সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। তার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় তিনি রাস্তাঘাট, ড্রেন নির্মাণসহ পৌরসভার ব্যাপক উন্নয়ন করতে পেরেছিলেন। নির্বাচিত হওয়ার আগে পৌরসভার স্টেশন রোডসহ শহরের প্রায় সবকটি সড়কের বেহাল অবস্থা বিরাজমান ছিল। নির্বাচিত হওয়ার পর তৎকালীন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী ও

কিশোরগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের নির্দেশে শহরের উন্নয়নে মাস্টার প্ল্যান তৈরি করে শহর উন্নয়নের পরিকল্পনা নেয়া হয়। সে পরিকল্পনা মোতাবেক কাজ চলছে বলে তিনি জানান। গত টার্মে তিনি প্রায় দেড়শ কোটি টাকার উন্নয়ন করতে পেরেছেন। এর মধ্যে জলাবদ্ধতা নিরসনে ৪৪.১৪ কিলোমিটার ড্রেন নির্মাণ করেছেন। পৌর শহরে ২৬.১১ কিলোমিটার পাকা সড়ক নির্মাণ করেছেন। এতে নাগরিকদের চলাচলে সুবিধা হয়েছে। এছাড়া বেশ কিছু সড়কের নির্মাণকাজের টেন্ডার হয়েছে। মহামারি করোনার কারণে কিছু কাজে দেরি হচ্ছে বলে তিনি জানান।
তিনি বলেন, শহরের সড়কগুলো সরু থাকায় যানজট সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করেছে। তাই সড়কগুলো প্রশস্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে। শহরের প্রধান সড়ক স্টেশন রোডের দুই পাশে আরো তিন ফুট করে প্রশস্ত করার জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পরিকল্পনা জমা দেয়া হয়েছে। ভূমি অধিগ্রহণের মাধ্যমে এসব সড়ক প্রশস্ত করা হলে শহরের যানজট অনেকটাই কমে আসবে।
মেয়র জানান, নিরাপদ শহর হিসেবে গড়ে তুলতে পুরো কিশোরগঞ্জ শহরকে সিসি টিভির আওতায় আনার পরিকল্পনা রয়েছে। জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের সহায়তায় এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে বলে তিনি জানান। এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে শহরে আইনশৃঙ্খলার উন্নতি হবে। শিশুদের বিনোদনের জন্যে পৌর ভবনের পাশ ঘেঁষে নরসুন্দা নদীর তীরে এবং গৌরাঙ্গবাজার ব্রিজের পাশে দুটি শিশুপার্ক নির্মাণ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
তিনি আরো জানান, শহরের পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় ইতোমধ্যে নতুন জেলখানা মোড় এলাকায় ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৫ একর জমি ক্রয় করা হয়েছে। সেখানে আরো ১২ কোটি টাকা ব্যয়ে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রকল্প নির্মাণ করা হবে। এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে শহরে বর্জ্য থাকবে না। পাশাপাশি জীববৈচিত্র্য রক্ষা পাবে। পৌরসভার উন্নয়ন খাতের জন্যে ১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম পৌর পৌর মার্কেট নির্মাণকাজ চলছে। আগামী অর্থবছরের মধ্যেই প্রকল্পটির কাজ শেষ হবে বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, পৌরবাসীর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে তিনটি নগর স্বাস্থ্যকেন্দ্র চালু করা হয়েছে। সেখানে নামমাত্র মূল্যে চিকিৎসাসেবা দেয়া হচ্ছে। আর দুস্থ ও দরিদ্র এক হাজার লাল কার্ডধারীকে বিনামূল্যে সারা বছর চিকিৎসাসেবা দেয়া হচ্ছে।
পৌর মেয়র জানান, পৌরসভায় ৭৯ হাজার ভোটার রয়েছেন। তবে পৌর শহরে প্রায় আড়াই লাখ মানুষ বসবাস করে বলে তিনি জানান। দুস্থ ও অসহায়দের ব্যাপারে পৌরসভার কোনো আলাদা প্রকল্প নেই। তবে থোক বরাদ্দ থেকে প্রতি বছর দুস্থ ও অসহায়দের আর্থিক সহায়তা দেয়া হয়।
তিনি বলেন, এবারো রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও কিশোরগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য ডা. সৈয়দা জাকিয়া নূর লিপির সহযোগিতা পেয়ে আসছেন। এ সহযোগিতার ধারা অব্যাহত থাকলে কিশোরগঞ্জ পৌরসভাকে যানজট, জলাবদ্ধ, মাদক ও সন্ত্রাসমুক্ত একটি মডেল পৌরসভা হিসেবে গড়ে তুলতে সক্ষম হবেন বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। সে লক্ষ্যকে সামনে রেখে তিনি নাগরিকদের সঙ্গে নিয়ে পৌরসভার উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়