অশ্লীল ভিডিও তুলে ব্ল্যাকমেইল : সবুজবাগে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রীর আত্মহত্যা

আগের সংবাদ

কারিগরি কারণে পদ্মা সেতুর রেললাইন প্রকল্পে ধীরগতি

পরের সংবাদ

‘দয়াল চালাচ্ছেন, সেভাবেই চলছি!’ : করোনাকালে দুর্দিনে বাউল শিল্পীরা

প্রকাশিত: জুলাই ৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুলাই ৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

আবহমান বাংলার মন উদাস করা বাউল গানের শিল্পীদের এখন দুর্দিন চলছে। অথচ একদা তারাই গান গেয়ে আসর মাতাতেন। করোনার তাণ্ডবে আজ বাউলদের কোনো উৎসব নেই। ডাকও পাচ্ছেন না। বিপন্ন দিনে মুখচেনা জনপ্রিয় বাউলরা কিছুটা সরকারি সহায়তা পেলেও বাউল শিল্পীকুলের বেশির ভাগের দিন কাটছে অর্ধহারে, অনাহারে।
১৯৩৬ সাল থেকে গান গাইছেন প্রবীণ বাউল আকবর আলী সাঁই। আজ অনাহারে অর্ধাহারে অসুস্থ হয়ে বিছানায় পড়ে আছেন। তিনি বললেন, খেয়ে না খেয়ে যেভাবে দয়াল চালাচ্ছেন সেভাবেই চলছি। দেখার কেউ নেই। আমাদের দিকে সরকারেরও চোখ পড়ে না! দিন গুনছি কখন করোনাকাল শেষ হবে। কবে গলা ছেড়ে গাইব। ইয়ার বাউলও প্রহর গুনছেন কবে করোনাকাল শেষ হবে, কবে আবার আসরে গান গাইতে পারবেন। বললেন, এক বেলা খেয়ে, এক বেলা না খেয়ে দিন যাচ্ছে। দুঃখের কথা কাকে বলব? অর্থকষ্টে থাকলেও কারো কাছে হাত পাততে পারছি না। হাত পাতা বাউলদের মানায় না। গান না গেয়ে জীবনে অন্য কোনো চাকরির পেছনে ছুটলাম না কেন এজন্য আক্ষেপ করে সাগর বাউল বললেন, বেঁচে আছি এখনো। মরে যাইনি। কারো কাছে হাতও পাততে পারছি না। কারো কাছে ফোন করলে ফোনও ধরছে না ধার চাইব বলে। এখন আমাদের আশা আর ভরসার জায়গা হচ্ছে সরকার। কিন্তু সরকার চোখের সামনে যাদের দেখছে তাদেরই সহায়তা করছে। মনোবল ভেঙে যাচ্ছে।  
কুষ্টিয়ার আলী বাউল বলেন, গানবাজনা করে দুটো ডাল ভাত খেতাম, এই লকডাউনের কারণে তাও জুটছে না। গত বছর সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় থেকে পাঁচ হাজার টাকা দিয়েছিল। এবারও দেয়ার কথা ছিল। শুনেছি চেক এসেছে এক মাসেরও বেশি হয়ে গেছে। এখনো দিচ্ছে না। ডিসি সাহেব নাকি বলেছেন, লকডাউনের জন্য দিতে পারছেন না। করোনা সারুক তারপর দেয়া হবে। বাউল গান ভালোবেসে আজ পথে বসার উপক্রম। দুই কেজি চাল, দুই কেজি আলু কেনারও টাকা নেই, করোনা সারা পর্যন্ত অতদিন কি বাঁচব? একমাত্র সাঁই আর আল্লাই জানে কি রকমভাবে বেঁচে আছি। 
তবে কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম জানালেন করোনার কারণে অনুদানের চেক বিতরণে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে। তিনি ভোরের কাগজকে বলেন, যেহেতু লকডাউন চলছে, তারপরও আমরা অফিস খোলা রেখেছি। যে শিল্পী যখন আসবে তাকে চেক দেয়া হবে। এক্ষেত্রে কোনো শিল্পী যদি এখানে আসতে না-ও পারেন, তাহলে বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাদের চেক পৌঁছে দিয়ে আসা হবে। 
কুষ্টিয়ার লালন একাডেমির সভাপতি সেলিম হক ভোরের কাগজকে বলেন, বাউল গান আমাদের সংস্কৃতির শ্রেষ্ঠ সম্পদ। গত দেড় বছর ধরে তাদের আয়ের উৎসই বন্ধ। দুঃসময়ে তাদের পাশে সবার দাঁড়ানো উচিত।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়