গলায় খাবার আটকে মৃত্যু প্রতিবন্ধীর

আগের সংবাদ

নতুন সিনেমায় অপি করিম

পরের সংবাদ

শ্রীপুরে কঠোর অবস্থানে পুলিশ : গণপরিবহন না থাকায় অফিসগামীদের ভোগান্তি

প্রকাশিত: জুন ২৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

নাসির উদ্দিন জর্জ, শ্রীপুর (গাজীপুর) থেকে : করোনা সংক্রমণ রোধে তিন দিন লকডাউনের গতকাল ছিল প্রথম দিন। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী গতকাল সোমবার সকাল থেকে সব ধরনের গণপরিবহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। আর এতে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরিজীবীরা। স্থানে স্থানে অফিসগামী যাত্রীরা ভিড় করেছেন। কিন্তু কোথাও বাস নেই এবং মিনিবাস নেই। অটোরিকশাও কম। যে রিকশাগুলো চলছে সেগুলোর ভাড়াও বেশি। বাস চলতে পারে বলে অপেক্ষা করছেন অনেকে, কিন্তু বাসের দেখা নেই। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় এভাবেই অফিসগামী যাত্রীদের দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে।
গাজীপুরের বিভিন্ন মহাসড়কে ১২টি পয়েন্টে পুলিশ চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। প্রতিটি চেকপোস্টে বিধিনিষেধের আওতাভুক্ত পরিবহন ছাড়া অন্য কোনো পরিবহনকে যেতে দেয়া হচ্ছে না। ফলে শিল্প প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মচারীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন।
সকাল থেকে গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা, টঙ্গী, বোর্ডবাজার, চেরাগ আলী, সালনা, রাজেন্দ্রপুর, ভবানীপুর, মাস্টারবাড়ী, মাওনা চৌরাস্তা, নয়নপুর এবং জৈনা বাজারসহ ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকটি বাস স্টপেজ ঘুরে অফিসগামীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গণপরিবহন না চলায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে তাদের। মাঝে মাঝে ছোট ছোট যানবাহন, সিএনজি, অটোরিকশা দেখা গেলেও প্রয়োজনের তুলনায় তা খুবই কম। গণপরিবহনন চলাচল বন্ধ থাকলেও খোলা রয়েছে সরকারি-বেসরকারি অফিস। অফিসগুলোকে তাদের কর্মী আনা-নেয়ার ব্যবস্থা করতে বলা হলেও বহু প্রতিষ্ঠানই তা করেনি। ফলে অফিসগামীদের মাঝে ভোগান্তির সেই পুরনো চিত্রই দেখা যাচ্ছে।
টঙ্গী চেরাগ আলী বাস স্টপেজে সকাল সাড়ে ৭টায় কথা হয় এস কিউ গ্রুপের কোয়ালিটি বিভাগের আব্দুর রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, আমার অফিস শ্রীপুরের মাওনায়। সকাল সোয়া ৬টায় গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছি। অন?্যান?্য দিন ১ ঘণ্টা আগে বাসা থেকে বের হই। আজ আগেই বাসা থেকে বের হয়েছি। কিন্তু সড়কে কোনো যানবাহন নেই। কীভাবে অফিসে যাব বুঝতে পারছি না।
চান্দনা চৌরাস্তায় ওরিয়েন্ট গ্রুপের সহকারী ব্যবস্থাপক হুমায়ুন কবির বলেন, আমি কোনাবাড়ী কলেজ গেট এলাকায় যাব বলে আধা ঘণ্টা ধরে দাঁড়িয়ে আছি। কিন্তু কোনো গাড়ির দেখা নেই। একটি সিএনজিচালককে রাজি করাতে পারলেও আমার অফিস কোনাবাড়ী পর্যন্ত দ্বিগুণ ভাড়া চাচ্ছেন। এত টাকা ভাড়া দিয়ে অফিসে যাওয়ার সামর্থ্য আমার নেই।
জেলা শহর গাজীপুর যাওয়ার জন্য সকাল ৯টায় শ্রীপুর চৌরাস্তা অপেক্ষা করছিলেন রহম আলী। তিনি বলেন, মাওনা পর্যন্ত সিএনজি ২০ টাকার ভাড়া ৪০ টাকা চাচ্ছে। অটোরিকশাও ১০ টাকার ভাড়া ৩০ টাকা চাচ্ছে। তাই মাওনা পর্যন্ত হেঁটেই রওনা দিচ্ছি। গণপরিবহন চলাচল বন্ধ থাকার কারণে অনেকে পণ্যবাহী ট্রাক ও ভ্যানগাড়িতে চড়ে গন্তব্য যাচ্ছেন।
শ্রীপুরের মাওনা চৌরাস্তায় সকাল ৭টায় অপেক্ষা করছিলেন প্রায় ৩০ জন কারখানা শ্রমিক। তাদের মধ্যে থেকে একজন বলেন, আমরা কেউ মাস্টারবাড়ী, কেউ সালনা, কেউ বাঘের বাজার ও ভবানীপুর অফিসে যাব। সকাল থেকে এখানে অপেক্ষা করছি বাসের জন্য। কিন্তু কোনো বাস পাচ্ছি না। করোনা সংক্রমণের শুরু থেকেই প্রায় সময় দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে আমাদের মতো খেটে খাওয়া গার্মেন্টস শ্রমিকদের। কবে যে এই দুর্ভোগ কাটবে আল্লাহ জানেন।
নয়নপুর এলাকায় কথা হয় ফার্নিচার দোকান কর্মচারী আব্দুল জলিলের সঙ্গে। তিনি ভবানীপুর এলাকার একটি ফার্নিচারের দোকানে কাজ করেন। দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থেকেও তিনি অটোরিকশা পাননি। তাই তিনি হাঁটতে শুরু করেছেন। তিনি বলেন, আমরা গরিব মানুষ। অল্প টাকা আয় করি। অটোরিকশাতে করে কাজে যাওয়ার টাকা নেই। হেঁটে যাওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় দেখি না।
মাওনা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসেন বলেন, আমরা সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পুলিশ চেকপোস্টে আছে। বিধিনিষেধের আওতাভুক্ত গাড়ি ছাড়া অন্য কোনো গাড়ি আটকিয়ে দিচ্ছি।
সালনা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর গোলাম ফারুক বলেন, উত্তরবঙ্গে থেকে অনুমোদিত গাড়ি ছাড়া কোনো ধরনের গাড়ি ঢাকায় প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়